বান্দরবানে পৌর এলাকা সঙ্গবদ্ধ ভাবে ঘরে ঢুকে এক নরীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনে অভিযুক্ত ৪ আসামিকে আটক করেছে বান্দরবান থানা পুলিশ।
আটক চারজনকে শনিবার (০৪ নভেম্বর) দুপুরে বান্দরবান জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- একই পরিবারের মৃত মোহন দাশের ছেলে অজিত দাশ (৬০), অজিত দাশের স্ত্রী রিতা দাশ (৫৫), অজিত দাশের ছেলে অভি (২২) দাশ, কাজল দাশের মেয়ে রিনা দাশ (৫৬)। তারা পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ড বনরুপা এলাকার বাসিন্দা।
থানার অভিযুক্ত এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী শিমু দাশের পৌরসভার ০৬নং ওয়ার্ডের বনরূপা পাড়া এলাকাস্থ ৩১৩নং বান্দরবান মৌজার হোল্ডিং নং-৮৮, খতিয়ান নং-১৪৪, দাগ নং-২৭২২ এর আন্দরে ০৬ শতক জায়গা আছে। উক্ত জায়গা নিয়ে বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী (শিমুদাশ) পরিবারের লোকজনের সাথে অজিত দাশ (অভিযোগকারী) মধ্যে জায়গা দখল নিয়ে সমস্যা চলছিল।
পরবর্তীতে গতকাল শুক্রবার সাড়ে ৩ টায় বান্দরবান পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ড সুদীপ দাশের স্ত্রী ভুক্তভোগী শিমু দাশের ঘরে তার মেয়েকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বের হতে বলে। আসামীরা ঘরে থাকা ছেলে ও মেয়েকে কিল, ঘুষি, লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। এক পর্যায়ে রশি ও গামছা দিয়ে শিমুকে হাত-পা বেঁধে ফেলে। অভিযোগকারী অজিত দাশ, অজিত দাশের ছেলে অভি দাশ, রিনা দাশ, রিতা দাশসহ মুখোশ পরা ১০-১২ জন লোক শিমা দাশের বাড়ি থেকে শিমা দাশকে চুলের মুঠি ধরে টেনে বাড়ির উঠোনে এনে রশি দিয়ে হাত বেঁধে বটি দিয়ে মাথার চুল কেটে দেয় এবং বিবস্ত্র করে মারধর করেন। এছড়া মূখোশ পরা কয়েক জন বাসা থেকে ঘরের আসবাবপত্র ভাঙ্গচুর ও চুরি করে। এতে প্রায় ঘরে আসবাপত্র আনুমানিক পঞ্চাশহাজার (৫০০০০) টাকার ক্ষয়-ক্ষতির এবং এক লক্ষ (১,০০,০০০) টাকা মূল্যের বিভিন্ন মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী শিমা দাশ জানান, প্রতিদিনের ন্যায় ভাত খেতে বসেছিলেন তিনি। এসময় অভিযোগকারীরাসহ কয়েকজন যুবক এসে তাকে টেনে হিচড়ে বাইরে টেনে নিয়ে আসেন। পরে তাকে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দা বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালায়। এই নিয়ে তারা শান্ত হয়নি। এক পর্যায়ে তার চুলও নাকি কেটে দিয়েছেন। তিনি অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
তিনি বর্তমানে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
বান্দরবান সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) আবদুল জলিল জানান, খবর পেয়ে অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছি। বেআইনী জনতাবদ্ধে গৃহে ও খোলা স্থানে অনাধিকার প্রবেশ করিয়া হত্যার উদ্ধেশ্যে সাধারণ ও গুরুত্বর জখম, স্লীলতাহানী, চুরি, ক্ষতি সাধন এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অপরাধে পেনাল কোড ১৮৬০ ধারা মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামিদেরকে আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং বাকী আসামীদের গ্রেফতার চলছে।