বিশ্বব্যাপী জ্বালানি চাহিদা দ্রুত বাড়তে থাকলেও, গ্যাসকে “পরিচ্ছন্ন” বিকল্প হিসেবে প্রচার করা গ্লোবাল সাউথের জন্য মারাত্মক হুমকি, এমন বিবেচনায় আজ ১৯ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে বিশ্বজুড়ে আয়োজিত ‘গ্যাস সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী কর্ম দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর আয়োজনে বাংলাদেশের ৯টি নদীতে নৌবহর অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশে, জাতীয় চাহিদা প্রায় ৪,০০০ mmcfd এবং সরবরাহ প্রায় ১,০০০ mmcfd। অতএব ঘাটতি রয়েছে। সরকার বলেছে, ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি নতুন কূপ খনন করা হবে, যার মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৬১৮ mmcfd গ্যাস যোগ করার পরিকল্পনা আছে। স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্রের মজুদ কমে যাওয়ার কারণে এলএনজি-আমদানিতে দক্ষতা বাড়ানো হচ্ছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১১৫টি এলএনজি কার্গো (LNG shipments) আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও এশিয়ায় বর্তমানে ৭৬৮টি নতুন গ্যাস প্ল্যান্ট, ১৫৩টি এলএনজি টার্মিনাল, ৩০০টি পাইপলাইন প্রকল্প এবং শত শত গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নাধীন, যা জলবায়ু সংকটকে আরও তীব্র করে তুলছে। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ৮৮ মিলিয়ন টনের বেশি এলএনজি রপ্তানি করেছে, যা বৈশ্বিক নির্ভরশীলতা আরও বাড়িয়ে তুলছে। এদিকে, পরিকল্পিত গ্যাস অবকাঠামো ইতিমধ্যেই ২০৪০ সাল পর্যন্ত প্রয়োজনীয়তার সীমা ছাড়িয়ে গেছে, যা প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যমাত্রাকে বিপর্যস্ত করার শঙ্কা তৈরি করেছে।

COP30 ও আসন্ন G20 শীর্ষ সম্মেলনের প্রেক্ষাপটে গ্লোবাল সাউথের মানুষ, সামাজিক সংগঠন ও জলবায়ু ন্যায়বিচার আন্দোলনকারীরা সরকারগুলোর ওপর চাপ বাড়াচ্ছে যেন জীবাশ্ম গ্যাস সম্প্রসারণ অবিলম্বে বন্ধ করা হয় এবং দ্রুত ও ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকাতে বুড়িগঙ্গা নদী, মংলাতে পশুর নদী, বরগুনাতে বুড়িশ্বর নদী, তালতলীতে পায়রা নদী, পাথরঘাটায় বিষখালী নদী, কলাপাড়ায় আন্দারমানিক নদী, কুতুবদিয়া সাগর চ্যানেল, পেকুয়ায় বঙ্গোপসাগরের মগনামা কুতুবদিয়া চ্যানেল ও হবিগঞ্জে খোয়াই নদীতে দেশের মোট ৯টি স্থানে নৌবহরের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও স্লোগানে ভরে ওঠা এসব নৌবহরে জলবায়ু ন্যায়বিচারের দাবি, জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতার বিরুদ্ধে অবস্থান এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির পক্ষে বার্তা তুলে ধরা হয়। গ্যাস সম্প্রসারণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে, প্যারিস চুক্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসার সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে, COP30 ও G20 ঘোষণায় ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের প্রতিশ্রুতি অঙ্গীভূত করতে হবেসহ নানা দাবি নিয়ে ‘দক্ষিণে গ্যাস দেবেন না’ বার্তা সম্বলিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনের মাধ্যমে কর্মসূচির দৃশ্যমানতা ও মূল বার্তা আরও জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়।


















