চাকমা রাজ কার্যালয়ে এক স্ত্রীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে বিবাদী (স্বামীকে) দোষী সাব্যস্ত করে ২৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ক্ষতিপুরণ প্রদানের আদেশ দিয়েছে রাজ কার্যালয়ের চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়।
বনরূপার ত্রিদিব নগর নিবাসী সোমেশ তালুকদারের পুত্র সুদীপ তালুকদার (জিতু) তার সাবেক স্ত্রী বিথী চাকমাকে এ ক্ষতিপুরণ প্রদান করতে হবে।
জিতুর সাবেক স্ত্রী রাজবাড়ির বাসিন্দা বিথী চাকমা ২০২২ সালের ১ জুন রাজ কার্যালয়ে এ অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের ভিত্তিতে তিনটি শুনানীর পর সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩) দুপুরে এ রায় দেন রাজা দেবাশীষ রায়। রাজার পক্ষ হয়ে রাজ দরবারে এ রায় পড়েন রাজ কার্যালয়ের সচিব সুব্রত চাকমা।
রায় ঘোষণার সময় দরবারে বাদী বিথী চাকমা ও তার স্বজন এবং বিবাদী (সুপ্রদীপ চাকমা (জিতু), তার মাতা নমিতা চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জিতু ও বিথীর ১৪ বছর প্রেম করে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু বিবাহের ২ মাস পর সম্পর্কের অবনতি হয়।
জিতু এক নারীর সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বিথীকে অপমান, অসন্মান, অবহেলা, মানসিক নির্যাতন করেন। পরে ঘরে একা ফেলে কক্সবাজারে টেকনাফে চলে যান। বিষয়টি জিতুর মা নমিতা জানার পরও ছেলের পক্ষে অবস্থান নেন। ফলে এদের দাম্পত্যের জোড়া লাগেনি। জিতু সম্পর্ক বন্ধনে রাজী না হওয়ায় বিথী ক্ষতিপুরণ ও বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়ে রাজার কাছে আবেদন করেন।
অভিযোগের সতত্য মিলায় রাজা জিতুকে সমাজ বিরোধী নিষ্ঠুর অমানবিক আচরণের জন্য ৫০ টাকা জরিমানা করেন।
এ ছাড়া লাজভার মনস্তাত্ত্বিক নির্যাতনের ও বাদীকে সামাজিক ও পারিবারিক মর্যাদা হানির অপরাধে ১৫ লাখ টাকা। বিবাহ আনুষ্ঠানিকতার খরচ ৫ লাখ টাকা। বাদীর গৃহত্যাগ হতে এ পর্যন্ত মাসিক ২০ হাজার করে মোট ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ক্ষতিপুরণ প্রদানের নির্দেশ দেন। এ টাকা আগামী ৬ মাসের মধ্যে এ ক্ষতিপুরণ প্রদান করতে হবে জিতুকে।
এছাড়া বিবাহ প্রদত্ত সকল সোনা গহনা প্রদান। বাদীর অন্যত্র বিবাহ বা আমৃত্যু পর্যন্ত মাসিক ২৫ হাজার টাকা স্বামীকে প্রদানের আদেশ দেন। এ টাকা ব্যাংক অথবা আদালতের মাধ্যমে জিতুকে প্রদান করতে হবে।
রায় শুনে বিবাদীর মা নমিতা চাকমা রায়ের অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বলেন, আমাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে।