বুধবার , ১৭ আগস্ট ২০২২ | ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চার মাস ধরে বিছানায় শুয়েই দিন কাটাচ্ছেন কোরবান আলী

প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি
আগস্ট ১৭, ২০২২ ৮:৫৭ অপরাহ্ণ

স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে চট্টগ্রামের ফয়েজলেক এলাকার লেক ভিউ গলিতেই ভাড়া বাসায় থাকতেন মো. কোরবান আলী (৩৫)।

চট্টগ্রামের মিরশরাই এলাকার জাহাজ কাটার ডিপুতে দৈনিক মজুরীতে কাজ করতেন। দিন মজুরির আয়েই স্ত্রী শারমিন আক্তার (৩০) ও তানজিলা আক্তার (৫) নামের এক কন্যা সন্তানকে নিয়ে বেশ ভালোই চলছিল তাদের সংসার।

হঠাৎ এক সড়ক দুর্ঘটনায় পরিবারে নেমে আসে দুর্দশা!  চলতি বছরের ১২ এপ্রিল ভোর ৬টার দিকে প্রতিদিনের ন্যায় কাজের উদ্যেশ্যে বের হয়ে কোম্পানীর গাড়িতেই মিরশরাই বিএসআরএম মিলে যাচ্ছিলেন তিনি।

এ সময় চালকের অসতর্কতার কারণে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চারজন আহত হন। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে সিতাকুন্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চার জনের মধ্যে তার (কোরবান) আশংকাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক!

এ ঘটনায় তার গলার শ্বাস নালি ও মেরুদন্ডের হাড় ব্লাক হয়ে যায়। পরে চমেকের সার্জারী বিভাগে ভর্তি হন তিনি। সেখানেই গত ২৫ এপ্রিল হাসপাতালের মেডিকেল টিম প্রায় পাঁচ ঘন্টা তার অপারেশন করেন এবং ১২দিন তাকে চমেক হাসপাতালেই অবজারভেশনে রাখেন।

পরে গত ৬ মে তাকে ছাড়পত্র দেন এবং বাড়িতেই চিকিৎসা নেয়ার পাশাপাশি নিয়মিত চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকদের চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।

বর্তমানে সে মানিকছড়ি উপজেলার ২নং বাটনাতলী ইউনিয়নের অন্তর্গত ঢাকাইয়া শিবির এলাকায় বোনজাইয়ের বাড়িতে বিছানায় শুয়েই গত চার মাস ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন! বোন জামাইয়ের পরিবারেও নেই কোনো বড় ধরণের আয়ের উৎস!

আয়ের উৎস বলতে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল ও বড় ছেলের অধিনে বাড়ির সামনের ছোট্ট একটি চায়ের দোকানই! যার আয় দিয়েই চলছে অসুস্থ্য শালক কোরবানের চিকিৎসা, ছোট ছেলের পড়াশুনার খরচ, স্ত্রীসহ ৯ জনের একটি সংসার! চমেক হাসপাতালেই তার (কোরবান) চিকিৎসাধীণ অবস্থায় অসহায় পরিবারটির প্রায় ৪ লাক্ষ টাকা খরচ হয়! আর পুরো টাকাই মানুষের দান অনুদান ও ধার কর্জ করে জোগাড় করতে হয়েছে পরিবারের দায়িত্বশীল বড়বোন ও বোনজাইমের! এছাড়াও বাড়িতে নিয়ে আসার পরও প্রায় ২ লাক্ষ টাকা ঔষধ ও নিয়মিত ড্রেসিং, থেরাপি বাবদ খরচ হয়! দুর্ঘটনার আঘাত ও দীর্ঘদিন শুয়ে থাকার কারণে তার কোমড়ে একটি ক্ষত দেখা দেয়। যার ফলে গত ৩১ জুলাই পুনরায় চমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সেটিরও অপারেশন করতে হয়েছে! ক্ষতস্থান অপারেশন শেষে গত ৩ আগস্ট তাকে ছাড়পত্র প্রদান করা হলে বর্তমানে তিনি আবারও মানিকছড়ি উপজেলাধীণ ঢাকাইয়া শিবির এলাকার তার বোনজাইয়ের বাড়িতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুয়েই অসুস্থতার প্রহর গুনছেন! কবে যে উঠে দাড়াতে পারবেন সেটিও অনিশ্চিত! স্ত্রী, কন্যা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও দুঃশ্চিন্তার মধ্যে আছেন! কবে নাগাদ উঠে দাড়াবেন কোরবান! এমতাবস্থায় নিজের ও বোন-বোনজাইয়ের সর্বস্ব হারিয়ে বর্তমানে প্রতিদিনের চিকিৎসা খরচ যোগাড় করাই মুশকীল হয়ে পড়েছে পরিবারের পক্ষে! নিরুপায় হয়ে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য মানবিক আবেদন জানিয়েনে পরিবারটি।

তার স্ত্রী শারমিন আক্তার জানান, চার মাসের অধিক সময় ধরে বিছানায় শুয়েই রাত-দিন কাটিয়ে দিচ্ছেন তিনি! কবে নাগাদ পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে উঠবেন তাও জানান নেই! যতদিন সুস্থ্য না হন ততদিন চিকিৎসা চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তার! এমতাবস্থায় কি করব ভেবে উপায় পাচ্ছি না। ইতোমধ্যে প্রায় সব মিলিয়ে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার মত খরচ হয়েছে! যার সবই ধার-দেনা করে সংগ্রহ করা! এখন চিকিৎসা খরচ যোগাড় করাই মুশকিল হয়ে পড়েছে!

বড়বোন জামাই মো. মনিরুল হোসেন জানান, তাদের পরিবারে দায়িত্বশীল কেউ না থাকায় তাদের ছোটবেলা থেকেই বড় বোনজামাই হিসেবে সকলের দেখাভাল করে আসছি। বিপদে-আপদে পাশে থেকেছি। কিন্তু এমন দুর্ঘটনায় সবাইকে অসহায় করে দিয়েছে! তাদের তেমন অর্থ-সম্পদ না থাকায় পুরো খরচ ধার দেনা করেই চালাতে হচ্ছে আমাকে! বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ২৫০-৩০০ টাকার ঔষধ বাবদ খরচ লাগছে! যা আমাদের পক্ষে বহণ করা মোটেই সম্ভব হচ্ছে না! নিরুপায় হয়ে সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহব্বান জানাচ্ছি অসহায় পরিবারটি পাশে দাড়ানোর!

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

আপনার জন্য নির্বাচিত
%d bloggers like this: