পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক ধারাগুলো সংশোধন করে চুক্তির পূনমূল্যায়ন করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা পরিষদ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের পূর্বেই বলা হয়েছে, শান্তিচুক্তি হচ্ছে পাহাড়ে শান্তি স্থাপনের একটি আকাংখা। কিন্তু সেই চুক্তিতেই এমন কিছু ধারা সংযোজিত হয়েছে যা বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধান ও প্রচলিত বহু আইনের সাথে সাংঘর্ষিক। একই সাথে তা বৈষম্যমূলক ও সাম্প্রদায়িক। ইতোমধ্যে শান্তি চুক্তির বিভিন্ন ধারা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছে। এই রিটের রায়ে উচ্চ আদালত শান্তিচুক্তির অনেকগুলো ধারা অসাংবিধানিক বলে বাতিল করে দিয়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতি পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে পার্বত্যবাসীর সাথে আলোচনা করার দাবি জানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ ও মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ বলেন, চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য ২৬টি জাতীয় আইন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট ১২টি আইনসহ মোট ৩৮টি আইন সংশোধন করা প্রয়োজন।
সরকার চাইলে আমরা পার্বত্য এলাকায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সকল সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট্য প্রস্তাবনা সরকারকে দিতে প্রস্তুত রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ ও মহিলা পরিষদ।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা সভাপতি মোঃ হাবীব আজম। এসময় বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের রাঙামাটি জেলা সহ-সভাপতি কাজী মোঃ জালোয়া, যুগ্ন সম্পাদক আমীর মোঃ সাবের, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকী, প্রচার সম্পাদক কবির আহম্মেদ, মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোরশেদা বেগম, ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন, ছাত্রনেতা মোঃ মঈনুদ্দীন।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার অন্যতম নেতা মোঃ শহীদুল, মোঃ সজীব ফিরোজ, আব্দুর রাজ্জাক, মোঃ পারভেজ।
বক্তারা আরো বলেন, চুক্তির পর পার্বত্য অঞ্চলে একে একে কয়েকটি সশস্ত্র সংগঠন জেএসএস (সন্তু), জেএসএস (এমএন লারমা), ইউপিডিএফ (প্রসিত), ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট পার্বত্য অঞ্চলে চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। তাদের কাছে পাহাড়ী বাঙালীরা জিম্মি। পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টির মূলে রয়েছে পাঁচটি সশস্ত্র গ্রুপ। এ পাঁচটি গ্রুপের মধ্যে যতদিন সশস্ত্র সংঘর্ষের অবসান না হবে ততদিন পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসবে না। তাই তাদের নির্মূল করা জরুরী বলেও মানববন্ধনে দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কাছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক ধারাগুলো সংশোধন করে চুক্তির পুর্ণঃ মূল্যায়ন করার দাবীসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি স্থাপনে ব্যর্থ আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার অপসারণ, পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও স্থানীয় শান্তি প্রতিষ্ঠায় জন্য প্রত্যাহারকৃত নিরাপত্তাবাহিনীর ক্যাম্প পূণঃস্থাপনের জোর দাবী জানান।