রাঙামাটি জেলার কাউখালী সরকারি কলেজের প্রভাষক গফুরের বিরুংদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছে। খোজ খবর নিয়ে জানা যায়,গফুর আহমেদ বিগত ৬সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ সাল হতে ১এপ্রিল ২০০১ সাল পর্যন্ত দু’টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে এক সাথে চাকরি করেন। সরকারি বিধিমালা অমান্য করে প্রভাষক গফুর দু’টি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছিলেন। অর্থের লোভে তথ্য গোপন করে এসব অনিয়ম করেছেন গফুর। কলেজটি জাতীয়করণ করা হয় ৮আগষ্ট ২০১৮ সালে।
কাউখালী সরকারি কলেজের (সাবেক) অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ ইসহাক এর সাথে প্রভাষক গফুর আহমেদ এর সাথে দ্বন্দ্ব চরমে তা কারন হলো- প্রভাষক গফুর তথ্য গোপন করে একই সাথে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি,প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাক-কে হত্যার উদ্দেশ্যে পিতলের কলিং বেল দ্বারা মাথায় আঘাতের চেষ্টাসহ বিভিন্ন কারন।
রাঙামাটি জেলার কাউখালী সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রভাষক গফুর আহমদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে প্রাক্তন অধ্যক্ষ তার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
গফুরের বিরুদ্ধে একই অভিযোগের অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং রাঙামাটির জেলা প্রশাসক বরাবরেও প্রেরণ করেন সাবেক অধ্যক্ষ ইসহাক। অভিযোগে সাবেক অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) ইসহাক আরো বলেন, প্রভাষক গফুর ডিগ্রী পাবলিক পরীক্ষার ডিউটি বাদ দিয়ে অনুমতি ব্যতীত বাহিরে দীর্ঘ সময় অবস্থানের কারণ জানতে চাইলে তিনি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ,উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ও হুমকি-ধমকি প্রদান করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, গফুর আহমেদ কলেজে গ্রুপিং সৃষ্টির মাধ্যমে সর্বদা আতংক ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এসকল অভিযোগ তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসার, কাউখালীকে দায়িত্ব প্রদান করা হয় বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। অভিযোগ ও তদন্তের খবর জানা-জানি হলে অভিযুক্ত বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগকারীকে হুমকি-ধামকি ও হয়রানী করার চেষ্টা করছেন মর্মে মোহাম্মদ ইসহাক প্রতিনিধিকে জানান।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক(কলেজ-২) স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ থেকে জানা যায়, গফুর আহমেদ কর্তৃপক্ষের অগোচরে একই সাথে কাউখালী কলেজে ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে কর্মরত থেকে বেতন-ভাতা গ্রহণ করেছেন। যা চাকরি বিধি পরিপন্থী। এ কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কলেজ সরকারিকরণের পদ সৃজন প্রস্তাব থেকে তার নাম বাদ দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়,অভিযুক্ত গফুর আহমেদ নিজেই একই সাথে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার কথা স্বীকার করে গভর্ণিং বডির সভাপতি বরাবর মানবিক বিবেচনায় যোগদানের তারিখ পরিবর্তনের আবেদন করলে তৎকালীন পরিচালনা পরিষদ এ অনিয়মের শাস্তিস্বরূপ তার চাকরির মেয়াদ প্রায় ২ বছর কমিয়ে দেন। যা বিধিসম্মত না হওয়ায় যোগদান তারিখ ও একই সাথে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি সম্পর্কিত সমস্যা গুলো তদন্তাধীন।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা সাদিয়া নুরীয়া জানান,অভিযুক্তকারী এবং অভিযোগকারী দুজনই কাউখালী কলেজের শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। একজনের নাম প্রভাষক গফুর আহমেদ ও সাবেক অধ্যক্ষ ইসহাক। দুজনেই একে অপরের বিরুদ্ধ ছোট খাটো বিষয় নিয়ে প্রতিনিয়ত অভিযোগ করে থাকেন। তবে প্রভাষক গফুর আহমেদ তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিরসনে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের নিয়ে আলোচনা চলছে।
বর্তমান অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) এজাহার মিয়া জানান, সাবেক অধ্যক্ষ ইসহাক ও প্রভাষক দু’জনের মধ্যে ব্যক্তিগত সমস্যা। দুজনের মধ্যে কেউ কাউকে দেখতে পারে না। তবে ইসহাক সাহেব একটু ট্যারা টাইপের লোক সে কারও কথা শুনতে রাজি না। আর প্রভাষক গফুর এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে দুইটি প্রতিষ্ঠানে এক সাথে চাকরির বিষয়টি অনেক আগে মিমাংসা করা হয়েছে।
কাউখালী সরকারি কলেজের প্রভাষক গফুর আহমদে বলেন, কলেজটি যখন এমপিও ভুক্ত হয়নি তখন থেকে আমি শ্রম দিয়ে আসছি। কলেজটি যখন জাতীয়করণ করা হয়েছে তখন থেকে আমি আর স্কুলে চাকরি করিনি। আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও ভুয়া। আমি মনে করি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কলেজে প্রায় ২৮ জন শিক্ষক আছে এই ২৮জনের মধ্যে কারও সাথে সু-সম্পর্ক নাই সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইসহাক সাহেবের সাথে।