রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার উপজেলা সদর বরইছড়িতে ভয়াবহ আগুনে ৮টি দোকান সম্পূর্ণরুপে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেই সাথে আগুনে পুড়ে দোকানের সামনে থাকা একটি সিএনজি চালিত অটো রিকশা ভস্মীভূত হয়। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ লাখ টাকা বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদাররা।
এসময় আগুনে পুড়ে মো: তাহেদুল ইসলামের শরীফ ফার্মেসী, সুলতান মাহমুদের গাড়ির ওয়ার্কশপ ও চাকার দোকান, আব্দুর রহিমের চা দোকান, মোস্তাফিজুর রহমান মুন্নার এম কে কে এন্টারপ্রাইজ(কম্পিউটার দোকান), মো: ইব্রাহিম এর উর্মী টেইলার্স, আব্দুর রহমান এর রহমান কম্পিউটার, সাদ্দাম হোসেন এর সাদ্দাম স্টোর(মুদি দোকান) এবং মো: রানার, রানা ফার্নিচার এর দোকান সম্পূর্ণরুপে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এছাড়া দোকানের সামনে পার্কিংরত অবস্থায় থাকায় রাইখালী নিবাসী অনুতোষ দে, এর একটা সিএনজি পুড়ে ভস্মীভূত হয়।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ভোর ৩ টা ২০ এর দিকে আগুন লাগে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী উপজেলা সদরে অবস্থিত খাবারের দোকান লুমিনাস জোনের কারিগর রুহুল আমিন। তিনি বলেন, আমি রাতে দোকানে ছিলাম। হঠাৎ কিছু শব্দ শুনতে পাই, দোকান খুলে দেখি আমাদের খাবারের দোকানের বিপরীতে দোকানে আগুন লেগেছে। এসময় কেউ ছিল না, আমি দোকান হতে বালতি নিয়ে পানি ছিটাই। সাথে সাথে থানার ওসি স্যারের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্য ও ইউএনও স্যার ঘটনাস্থলে আসেন।
এদিকে আগুন লাগার সংবাদ পাওয়ার পর পরই রাত সাড়ে ৩ টার দিকে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিউদ্দিন এবং কাপ্তাই থানার ওসি মোঃ মাসুদ এর নেতৃত্বে থানায় অবস্থানরত সকল অফিসার এবং পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং কাপ্তাই ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। এরপরই ভোর সাড়ে ৪ টায় কাপ্তাই ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো শাহাদাত হোসেন এর নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিসের ১টা ইউনিট ২টি গাড়ি এবং ১৫ জন সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ও এলাকাবাসীর সহায়তায় প্রায় ভোর ৬ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনলেও ৮ টি দোকানে থাকা সব মালামাল আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং একটি দোকানের সামনে থাকা সিএনজি চালিত অটো রিকশা ভস্মীভূত হয়।
কাপ্তাই ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা ভোর ৪ টা ১০ এর দিকে আগুন লাগার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে ভোর সাড়ে ৪ টায় ১ টি ইউনিট এর ২ টি গাড়ী সহ ১৫ জন সদস্য গিয়ে প্রায় ৬ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রাথমিক ভাবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হতে আগুন লাগতে পারে বলে আমাদের ধারণা।
এদিকে বৃহস্পতিবার(১০ অক্টোবর) সকালে এই প্রতিবেদক ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের সাথে। এসময় রানা ফার্নিচারের মালিক মো: রানা বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে দোকানটি ঘুচালাম, আমার প্রায় ৮ লাখ টাকার ফার্নিচার এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা পুড়ে গেছে। আজকে( বৃহস্পতিবার) সাড়ে ৩ লাখ টাকার ফার্নিচার ডেলিভারি দেওয়ার কথা।
ব্যবসায়ী সুলতান মাহমুদ বলেন, আমার টায়ার, মুবিল এবং পার্টস এর দোকানে সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে আমার।
কম্পিউটার দোকান এম কে এন্টারপ্রাইজ এর মালিক মোস্তাফিজুর রহমান মুন্না বলেন, আমার নতুন ফটোকপি মেশিন, ২ টি কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মেশিনারি পার্টস সহ অনেক কিছু পুড়ে গেছে।
মুদির দোকান সাদ্দাম স্টোর এর মালিক মো: সাদ্দাম ও চায়ের দোকানের মালিক আব্দুর রহিম বলেন, রাত ৩ টার পরে আগুন লেগে এখানে ৮ টি দোকান এবং ১ টি সিএনজি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সব কিছু মিলে আমাদের প্রায় ৫০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।
সিএনজি চালক মামুন বলেন, আমার বাসার সামনে দোকানে সিএনজি গাড়িটি রাতে সবসময় রাখি। এটি পুড়ে আর কিছু রইল না।