রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে পাহাড়িদের বর্ষবিদায় ও নতুন বর্ষবরণের উৎসব চলছে। ফুল বিঝু উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালী ও ফুল ভাসানো উৎসবে বাঘাইছড়ির কাচালং নদীর তীরে ভিড় জমেছে চাকমাদের।
আজ শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোর থেকে বাঘাইছড়ি এলাকার কাচালং নদীতে ফুল দেওয়ার শেষে প্রার্থনা করে চাকমারা ফুল বিজু উৎসবের সূচনা করেন। অন্ধকার কেটে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নারীরা ঐতিহ্যবাহী পিনোন-হাদি ও পুরুষেরা ধুতি পরে কাচালং নদীর তীরে হাজির হন। বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করে সেই ফুলকে তিন ভাগে বিভক্ত করে, এক ভাগ গঙ্গাদাবির আরাধনায় নিয়ে আসেন।
উক্ত ফুল বিঝু উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালী ও ফুল ভাসানো উৎসবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার, বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির, সাবেক পৌর কাউন্সিল রুবেল চাকমা সহ বাঘাইছড়ির বিভিন্ন ক্লাব ও এলাকা থেকে আগত মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
এসময় সাবেক পৌর কাউন্সিল রুবেল চাকমা বলেন, ফুল বিজু এখন একটা মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। ছোট-বড় সবাই মিলে ফুল বিজুর দিনে খুব ভোরে পাড়া বা নিজের বাড়ি থেকে ফুল সংগ্রহ করি। এরপর কাচালং নদীর পাড়ে একটি বেদি তৈরি করে কলাপাতার ওপর ফুল সাজিয়ে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশে ফুল দিয়ে থাকি। আমরা মা গঙ্গার কাছে প্রার্থনা করি পুরোনো বছরের দুঃখ-কষ্ট দূর করার জন্য। যত রোগব্যাধি আছে, পুরোনো বছরের সঙ্গে সঙ্গে এগুলো যেন নির্মূল হয়ে যায়। আর নতুন বছর সবার জীবনে যেন সুখ-শান্তি ও মঙ্গল বয়ে আনে।
স্হানীয় এক লোক বলেন, ‘মানুষ যেন ভালোটা মনে রাখে এবং খারাপটা মনে না রাখে, সেই উদ্দেশ্যে নদীতে ফুল দিয়ে এই উৎসব পালন করি আমরা। ফুল বিজুর দিন যেমন নদীতে ফুল দেয়, তেমনি ফুলে ফুলে সাজানো হয় ঘর। ওই দিন সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বালন করা হয়।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার ফুল বিঝু উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালী ও ফুল ভাসানো উৎসবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলেন, পাহাড়ি সম্প্রাদয়ের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান চৈত্র সংক্রান্তি এবং বর্ষবরণ বিজু উৎসব।
এ বিজু উৎসবে সকল পাহাড়ি সম্প্রাদয় সহ বাঘাইছড়ি বাসীকে জানাই শুভেচ্ছা। সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধ জীবনের প্রত্যাশায় আসন্ন নববর্ষকে স্বাগত জানাচ্ছি।