মাটির কাপে ১০ টাকা হতে ১০০ টাকা দামের চা। বিভিন্ন দামের হরেক রকম পান এবং ঝাল মুড়ি খেতে প্রতিদিন উপচে পড়া ভীড় লেগে থাকে।
অথচ এটা কোন নামীদামি টাইলস মোজাইক করা কোন রেস্টুরেন্ট না, সামান্য বাঁশের বেড়া এবং উপরে টিন দিয়ে তৈরী ছোট্র পরিসরে গড়ে উঠা একটা সাধারণ রেস্টুরেন্ট।
যেটা ইতিমধ্যে অনেকের কাছে বেশ সুপরিচিত হয়ে উঠেছে। সেই রেস্টুরেন্টের নাম রাহাত স্টোর। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ৪ নম্বর কাপ্তাই ইউনিয়নের পূর্ব পাশে রাহাত স্টোরের এমন মাজাদার খাবারের সুনাম ছড়িয়েছে সব জায়গায়।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে এই প্রতিবেদক যান রাহাত স্টোরে। এ সময় কথা হয় দোকানের মালিক ৪ নং কাপ্তাই ইউনিয়ন এর বাসিন্দা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম হৃদয় এর সাথে।
তিনি বলেন, আমি কাপ্তাই সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (বিএসপিআই) থেকে কম্পিউটারে ডিপ্লোমা পাস করেও পৈতৃক পেশাকে শ্রদ্ধা করে এই ব্যবসা করে যাচ্ছি। প্রায় তিন যুগ ধরে পৈতৃকভাবে এই ব্যবসা করে আসছে আমার পরিবার। এখন আমি এই ব্যবসার হাল ধরেছি।
হৃদয় বলেন, তাঁর বাবা মো. জহিরুল ইসলাম ৩৩ বছর আগে এই ব্যবসা শুরু করেন। তাঁর দোকানে ১০ টাকা হতে ১০০ টাকার বিভিন্ন আইটেমের ৩৬ প্রকার চা পাওয়া যায়।
এছাড়া বিভিন্ন পদের বাহারি পান এবং ঝালমুড়ি খেতে প্রতিদিন শত শত খদ্দের ভীড় করে। প্রতিদিন গড়ে ২শ কাপ চা এবং ১০০ থেকে ১৫০ খিলি পান বিক্রি হয়। এ ছাড়া নানা প্রকার বিস্কুট, নাশতাসহ বিরিয়ানিও পাওয়া যায় এই দোকানে। মাসে খরচ বাবদ বাদ দিয়ে ৩০ হাজার টাকার ওপর লাভ হয় এই দোকান থেকে।
হৃদয় বলেন, তাঁর দোকানে ১০ টাকার দুধ চা, ও পাউডার চা, ২০ টাকা দামের দুধ চা মিক্সডমালটোবা, হরলিক্স , রং চা, মসলা চা, তেঁতুল বা টক, কালিজিরা ও ধনিয়া, কাঁচা মরিচ বা ঝাল, মালটা চা এবং টি ব্যাগ চা, ৩০ টাকা দামের মালাই চা ও ক্যালসিয়াম চা, ১০০ টাকা দামের ডাবল মালাই ক্যালসিয়াম চা সহ বিভিন্ন মসলার সংমিশ্রণে রং চা, পুদিনা, আমলকী ও সব মসলা মিশ্রিত রং চাও আমার দোকানে বিক্রি করি।
এছাড়া ৩০ টাকা দামের নরমাল মুড়ি মাখা, ৫৫ টাকা দামের ডিম মুড়ি মাখা, ৮০ টাকা দামের চিকেন মুড়ি মাখা এবং ১ শত টাকা দামে হৃদয় ভাইয়ের স্পেশাল মুড়ি মাখা পাওয়া যায়। এ ছাড়া তাঁর দোকানে রকমারি পান সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ পান ১০ টাকা, রঙ্গিলা/জেলিপান ৩০ টাকা, কাঁচাগোল্লা পান ৪০ টাকা, ফায়ার বোম্বে আগুন পান ৭০ টাকা, দিলখো পান ৮০ টাকা, মধু পান ৫০টাকা, বউ-বিয়ে পান ৬০ টাকা এবং সব পদের মসলা পান ১০০ টাকা করে বিক্রি করা হয়।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে রাহাত স্টোরে দেখা হয় চা খেতে আসা কাপ্তাই ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি এম নুর উদ্দিন সুমন এর সাথে। তিনি বলেন, রাহাত স্টোরে বিভিন্ন স্বাদের চা পাওয়া যায়। স্বাদে ও গুনগত মানে এইগুলো সেরা চা।
এসময় চা খেতে আসা চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালে পরিচালক ডা: প্রবীর খিয়াং বলেন, মাঝে মাঝে চায়ের ভিন্ন স্বাদ উপভোগ করতে আমি এই রাহাত স্টোরে আসি। সত্যি নানা স্বাদের চা পাওয়া যায়। কথা হয়, এই দোকানে আসা কাপ্তাই প্রজেক্ট এলাকার বাসিন্দা সঙ্গীত শিল্পী মো: রফিক এর সাথে। তিনি বলেন, কর্ম ব্যস্ততার ফাঁকে আমি প্রায়ই এসে রাহাত স্টোরের চা ও পান খেয়ে থাকি। সত্যি খুব ভালো লাগে।