ঘরে বসে এখন ভাতা পাচ্ছেন রাঙামাটির জুরাছড়ি দুর্গম এলাকায় বসবাস করা বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধীরা। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৩ হাজার ১শ ৫৫ জন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের ( বিকাশ) মাধ্যমে ভাতা পৌঁছে দিচ্ছে সরকার। আর এ ভাতা বিতরণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদফতর।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা বজলুল করিম বলেন, সমাজসেবা অধিদফতর সামাজিক নিরাপত্তার চারটি বৃহৎ কর্মসূচির আওতায় ৩ হাজার ১শ ৫৫ জন দরিদ্র মানুষ প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে ভাতা পাচ্ছে এবং তা এখন মোবাইলে বিতরণ করা হচ্ছে। যা আগে ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হত।
সুবিধাভোগীদের মধ্য ১৩৮৪ জন বয়স্ক, ১২১১ জন বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারী এবং ৫৩৭ জন প্রতিবন্ধী রয়েছে। এছাড়া ২৩ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। গত মাসে শেষ সপ্তাহে উপজেলার সুবিধাভোগী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে মোবাইলে ভাতা পৌঁছে দেওয়া হয়।
জুরাছড়ি ইউনিয়নের সালমা খাতুন (৬৯) বলেন, তার স্বামী ৭ বছর আগে মারা গেছে। ছেলে মেয়েরা যে যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত- তার খোঁজ খবর কেউ রাখেনা। মোবাইলে বিকাশে বিধবা ভাতা পায়ে আমার খুব ভাল লাগছে।
মো আল্টাব মিয়া (৭০), মোঃ মোজাহের (৭৫) বলেন, ব্যাংকে থেকে ভাতা উত্তোলনে বেশ বিরম্বনায় পড়তে হয়। কখনো র্দীঘ লাইনে দাড়িয়ে, আবার কখনো বা অপেক্ষার বিরম্বনা। গত মাসে মোবাইলে বিকাশে পেয়েছি- কোন বিরম্বনায় পোহাতে হয়নি।
জুরাছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিতেন্দ্র কুমার নাথ বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছরে বয়স্ক ভাতা ও ১৯৯৮-৯৯ অর্থ বছরে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা প্রদান কর্মসূচি চালু হয়। বর্তমানে শতভাগ প্রতিবন্ধীকে ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তির আওতায় আনা হয়েছে।
সরকার পর্যায়ক্রমে দেশের সকল বয়স্ক ব্যক্তি এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলাকে ভাতার আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে ২০২১-২২ অর্থবছরে আরও দেড় শতাধিক উপজেলাকে শতভাগ ভাতার আনার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অসহায় দরিদ্র মানুষকে মোবাইলের মাধ্যমে শতভাগ ভাতা দেওয়া সরকারের একটি বড় সাফল্য।