শুক্রবার , ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

জুরাছড়ির কথা ভুলেন নি মাহফুজ; দেশসেরা মেয়েদের পাঠালেন উপহার

প্রতিবেদক
সুমন্ত চাকমা, জুরাছড়ি, রাঙামাটি
ডিসেম্বর ১৬, ২০২২ ১১:০৬ অপরাহ্ণ

জুরাছড়ির কথা ভুলতে পারেন নি উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান। জুরাছড়ির যেকোন সাফল্যেতে যেমন উৎফুল্ল হন মাহফুজ তেমনি সামর্থ্য অনুযায়ী বাড়ান সহযোগিতার হাত।

সম্প্রতি  জাতীয় স্কুল মাদ্রাসা প্রতিযোগিতায় জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয় জুরাছড়ি ভুবনজয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মেয়েরা।

এ বিজয়ে মাহফুজ শুধু খুশি হননি। মেয়েদের জন্য উপহার হিসেবে পাঠালেন জার্সি ও প্রত্যেক খেলোয়াড়দের জন্য নগদ অর্থ।

সাবেক ইউএনওর এ উপহার পেয়ে খুশি মেয়েরা।

দলের ক্যাপ্টেন প্রবি চাকমা বলেন, মাহফুজ স্যার যখন জুরাছড়িতে ছিলেন তিনি আমাদের সব সময় খোঁজ খবর নিতেন। জার্সিসহ খেলার সরঞ্জাম কিনে দেন। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি নিজে খেলার মাঠে উপস্থিত থাকতেন। আমরা এখন তাঁর শূণ্যতা অনুভব করি।

সুখী চাকমা বলেন, স্যারের মত সরকারি কর্মকর্তা পাহাড়ে থাকলে খেলাধুলায় আমরা আরো এগিয়ে যাব।

তিনি থাকাকালীন আমাদের পড়াশুনা আর খেলাধূলা ছাড়া কোনকিছু চিন্তা করতে হত না। তিনি পড়াশোনায় জোর দেওয়ার পাশাপাশি খেলাধুলা চালিয়ে নিতে সবসময় সহযোগিতার হাত বাড়াতেন।

কোচ তনয় চাকমা বলেন, দেশ সেরা মেয়েদের জন্য স্যার  তাঁর বেতনের টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি মেয়েদের জন্য জার্সির সেট পাঠিয়েছেন।

রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলায় যোগাযোগের একমাত্র ভরসা নৌ পথে। দুর্গমতার কারণে অনেক কর্মকর্তা উপজেলায় দায়িত্ব দেওয়া হলেও উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে তদবির করে ২-৩ মাসের মধ্যেই বদলী হয়ে চলে যান। অনেকে দায়িত্ব নেওয়ার আগে পোস্টিং আদেশ বাতিল করেন।

যুগ যুগ ধরে এভাবে চলে আসছিল জুরাছড়ি উপজেলা প্রশাসন।

২০১৮ সালে অক্টোবর শেষ সপ্তাহে মো. মাহফুজুর রহমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর উপজেলাকে নিজের ঘর মনে করে অবস্থান করেন উপজেলায়।  সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া উপজেলার বাইরে যেতেন না মাহফুজ।

তাঁর আমলে উপজেলার দৃশ্য আমুল পরিবর্তন  হয়।

উপজেলা সদরে যেখানে সন্ধ্যা নামলেই চার দিকে অন্ধকার হয়ে পড়ত, সেখানে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সৌর লাইট স্থাপন করে আলোকিত করেন উপজেলার সড়ক। সে সুফল বর্তমানে ভোগ করছে উপজেলা শহরের মানুষ।

বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ধরে রাখতে উপজেলা পরিষদের ফটকে স্থাপন করেন বঙ্গবন্ধুর মুরাল।

করোনা কালীন সময়ে করোনায় আক্রান্তদের পাশে ছিলেন সব সময়।

সে সময়ে দুমদুম্যার মিজুরাম সীমান্ত এলাকায় খাদ্য সংকট মোকাবেলায় বগাখালী, করইদিয়, আদিয়াবছড়া তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পৌছানো হয় খাদ্য শষ্য।
উপজেলায় খেলাধুলা নিয়ে ছিল অধিক আগ্রহ। সেই আগ্রহকে পূঁজি করে তার সার্বক্ষণিক সহযোগিতায় জুরাছড়ি মেয়েরা ২০১৯ সালে স্কুল ও মাদ্রাসা প্রতিযোগিতায়  প্রথম কাবাডিতে দেশ সেরা হয়।

তার ধারা বাহিকতায় ২০২২ সালেও কাবাডিতে দেশ সেরা জুরাছড়ি মেয়েরা।

শুধুই কাবাডি নয়, জুরাছড়ি মেয়েরা ক্রিকেটে বেশ সাফল্য লাভ করে। তাঁর আমলে গঠন হয় ক্রিকেট টিম। এ টিম থেকে বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) তে ৬ জন খেলছে।

বনযোগীছড়া ইউপি চেয়ারম্যান সন্তোষ বিকাশ চাকমা বলেন পাহাড়ে উন্নয়নের জন্য মাহফুজুর রহমানের মত দেশ প্রেমিক মানুষ দরকার। তিনি জুরাছড়িকে কখনো পর ভাবেন নি। যতদিন ছিলেন নিজের এলাকা হিসেবে দেখে গেছেন। এ এলাকার মানুষের জন্য যা যা করার দরকার তা করে গেছেন।

দুমদুম্যা চেয়ারম্যান সাধন কুমার চাকমা বলেন,  মাহফুজুর রহমানের মত কর্মকর্তা অতীতে পায়নি জুরাছড়ির মানুষ। তিনি উপজেলায় যেসব কাজ করে গেছেন তারজন্য উপজেলার মানুষ এখনো তাঁকে ভুলতে পারেননি।

ভুবন জয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক শান্তি ময় চাকমা বলেন,  মোঃ মাহফুজ রহমানের প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তার কারণে জুরাছড়ির মেয়েরা ক্রীড়ায় এগিয়ে যাচ্ছে। তাঁর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

মাহফুজুর রহমান বর্তমানে বাহরানে বাংলাদেশ দুতাবাসে কর্মরত আছেন। তার আগে তিনি কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। এর আগে জুরাছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন।

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

%d bloggers like this: