রাঙামাটির লংগদু উপজেলা ১নং আটারকছড়া ইউনিয়নের ডানের আটারকছড়া নামক এলাকায় ঈদের দাওয়াত খেয়ে বাড়ী ফেয়ার সময় এক পাহাড়ী নারী গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার(২৯ জুন) বিকালে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে লংগদু থানায় নারী ও শিশু দমন আইনের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
লংগদু থানা ও আটারকছড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কোরবানীর ঈদের দিন বৃহস্পতিবার বিকেলের ওই গৃহবধূটি তার দাদা-নানীসহ গ্রামের পার্শ্ববর্তী আটরকছড়ার বাঙালী পাড়ার মোঃ সিদ্দিক নামে এক ব্যক্তির বাড়ীতে দাওয়াত খেতে যায়।
এ সময় মোঃ আনোয়ার হোসেন মঞ্জু(২৫) ও মোঃ রুবেল (২৩) ওই বাড়ীতে উপস্থিত হয়। খাওয়া-দাওয়া শেষে ওই গৃহবধু তার দাদা-নানীসহ পায়ে হেঁটে সীমান্তবর্তী জেলা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার হেংরাহেয়ে গ্রামের উদ্দেশ্য রওনা দেয়।
এসময় মোঃ আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও মোঃ রুবেল তাদের পেছনে পেছনে অনুসরণ করতে থাকে।
এক পর্যায়ে তারা ওই গৃহবধুর দাদা-নানীকে পথ গতিরোধ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে সেখান থেকে তাদের তাড়িয়ে দেয়। পরে গৃহবধুকে জোরপূর্বক পাশের জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর তারা গৃহবধূকে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। পরে গৃহবধুর দাদা-নানীরা গ্রামে পৌছানোর পর তাদের স্বজন ও গ্রামবাসীদের ঘটনাটি খুলে বললে গৃহবধুর খোঁজে বের হয় গ্রামবাসীরা। এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে যায় এবং ইউপি চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশকে খবর দেয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার(৩০ জুন) সকালের দিকে ঘটার শিকার স্বামী বাদী হয়ে লংগদু থানায় আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও মোঃ রুবেলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু দমন আইনের মামলা দায়ের করো হয়েছে। অভিযুক্ত দুই জনের মধ্যে মোঃ আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আটারকছড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মোঃ কামাল উদ্দিনের ছেলে ও মোঃ রুবেল একই ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের মোঃ আব্বাস মোল্লার ছেলে।
আটারকছড়া ইউপি চেয়ারম্যান অজয় মিত্র চাকমা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, পাশ্ববর্তী উপজেলা দীঘিনালার হেংরাহেয়ে গ্রাম থেকে লংগদু আটারকছড়া ইউপির এক বাঙালী বাড়ীতে ঘটনার শিকার ওই গৃহবূধসহ তার স্বজনদের নিয়ে ঈদের দাওয়াত খেতে যায়। বাড়ীর ফেয়ার পথে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
লংগদু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল উদ্দীন বলেন, এ ঘটনায় শুক্রবার সকালের দিকে ভূক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে মোঃ আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও মোঃ রুবেল এর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনার বিষয়ে তদন্ত ও আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। গৃহবধুকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিপন ত্রিপুরা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির
সাধারণ সম্পাদক শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যার যথা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদসহ চিহ্নিতকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টামূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি বিবৃতিতে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা রোধ ও জুম্ম নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথ বাস্তবায়নসহ অবিলম্ব চিহ্নিত ধর্ষক মঞ্জু ও রুবলসহ বিগত ঘটনাগুলোর প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচার এবং দৃষ্টান্তর মূলক শাস্তি প্রদানেরও জোর দাবি জানানা হয়েছে।