খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে সহকারী প্রকৌশলীকে ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী করতে তোড়জোড় শুরু করেছে পার্বত্য জেলা পরিষদ।
সম্প্রতি খাগড়াছড়ির নির্বাহী প্রকৌশলী রেবেকা বেগমের বদলী জনিত কারণে শূণ্য দপ্তর প্রধানের গুরুত্বপূর্ণ পদটি।
গেল ৯ আগস্ট রেবেকা বেগমকে ছাড়পত্র প্রদান করে নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বভার মহালছড়ি উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী আয়ুব আলী আনছারীকে বুঝিয়ে দেয়ার চিঠি জারী করে পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা টিটন খীসা।
সংশ্লিষ্ট দফতরের সূত্র জানায়, সহকারী প্রকৌশলী আয়ুব আলী আনছারী দীর্ঘদিন যাবৎ খাগড়াছড়ি জেলায় কর্মরত। মানিকছড়ি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে কর্মরত থাকাকালীন তৎসময়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সোহরাব হোসেনের বাগান বাড়ি বনলতা এগ্রোতে নামে বেনামে ভুয়া প্রকল্প নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আয়ুব আলী আনছারী জেলার মহালছড়ি উপজেলার প্রকৌশলী হলেও তিনি অফিস করেন জেলা সদরে নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেন, প্রকৌশলী আয়ুব আলী আনছারী খাগড়াছড়িতে দীর্ঘদিন ধরে চাকরীর সুবাদে ঠিকাদারদের নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরী করেছেন।
এসব ঠিকাদারদের সাথে তিনি অংশীদারে ব্যবসা করছেন। প্রকল্পের ঠিকাদারী কাজ নিয়ন্ত্রণ করতে জেলা পরিষদ ও রাজনৈতিক নেতাদের হাত করে তিনি এখন ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী হতে চাচ্ছেন।
ব্যবসায়ী যদি নির্বাহী প্রকৌশলী হয় তাহলে খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হবে বলে আশঙ্কা করেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা টিটন খীসার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী রেবেকা বেগমের বদলীজনিত কারণে তাকে জেলা পরিষদ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
রুটিন দায়িত্ব পালনে সহকারী প্রকৌশলী আয়ুব আলী আনছারীকে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে। পদায়নকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী যদি আসেন তবে তিনি দায়িত্ব বুঝিয়ে দিবেন।
আর্থিক বিষয়ে তিনি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে টিটন খীসা বলেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর যদি আর্থিক ক্ষমতা দেয় সেটি তাদের বিষয়।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সরোয়ার হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খাগড়াছড়ির নির্বাহী প্রকৌশলী রেবেকা বেগমের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার কথা ছিল সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আলমগীর হোসেনের।
তবে তিনি যোগদান করেননি। ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী কাউকে করা হচ্ছে কিনা সেটি আমি জানি না।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রাক্কলনিক সোহরাব হোসেন ২০০৯ সালের ৮ নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে বসেন।
এক টানা দশ বছর খাগড়াছড়ি জেলায় দায়িত্ব পালনের সময় সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুদক ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একাধিকবার তদন্ত করে।