পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যােগে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৫ আগষ্ট শুক্রবার বিকেল ৩.০০ টায় রাঙামাটি শহরের বনরূপায় ক্যাফে দাওয়াত রেষ্টুরেন্টে এ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত আলোচনা সভা পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি মোঃ হাবীব আজম এর সভাপতিত্বে ও পৌর কমিটির সভাপতি পারভেজ মোশারফ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি) রাঙামাটি জেলার সহ সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক হুমায়ুন কবির, পিসিসিপি রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখার আহ্বায়ক মোঃ শহিদুল ইসলাম, পৌর কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ রিয়াজ, পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম রনি, সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন,সবচেয়ে বৈষম্যমূলক চিত্র এটাই যে, একই পাহাড়ের দুর্গম ও বিরূপ পরিস্থিতিতে বসবাস করলেও পার্বত্য বাঙালি জনগোষ্ঠী কোটা সুবিধাবঞ্চিত হয়ে শিক্ষা, চাকরি, আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদায় চরমভাবে পিছিয়ে পড়ছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিপ্রেক্ষিতে জনসংখ্যার অর্ধেক হয়েও পরিসংখ্যানগত বাস্তবতায় বাঙালিরা অবহেলিত, প্রান্তিক ও দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হচ্ছে। চাকরিতে অবাঙালিদের জন্য শতকরা পাঁচ ভাগ কোটা সংরক্ষণের বিধান রাখা হয়।
এ ছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে উপজাতি কোটা রাখা হয়। বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের গড় শিক্ষার হার শতকরা ৭২.৯ ভাগ হলেও প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদে বঞ্চিত থাকার অভিযোগ উত্থাপনকারী চাকমাদের শিক্ষার হার শতকরা ৭৩ ভাগ। এই অগ্রগতি বঞ্চনা ও পশ্চাৎপদতার পরিচায়ক নয়।
শিক্ষার কারণে পেশা ও কর্মক্ষেত্রে একচ্ছত্রভাবে চাকমা নৃগোষ্ঠীর প্রাধান্য বিরাজমান। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্য নৃগোষ্ঠীগুলোর শিক্ষার হার মাত্র শতকরা ৪৫ ভাগ, যা গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সুযোগের তারতম্য, ভারসাম্যহীনতা ও অভ্যন্তরীণ বৈষম্যের প্রমাণবহ।
যার আরেকটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী পার্বত্য বাঙালি সম্প্রদায়। কোটা সুবিধা ও অন্যান্য সাংবিধানিক সম-অধিকার না পাওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের কিছু বেশি হওয়ার পরেও বাঙালিদের শিক্ষার হার মাত্র শতকরা ২৩ ভাগ। এতে শুধু সম্প্রদায় ও জাতিগত বৈষম্যই হচ্ছে না, দেশের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নাগরিককে যোগ্য মানবসম্পদে পরিণত করে দেশ ও জাতি গঠনের কাজে লাগানো যাচ্ছে না। ফলে জাতির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এ কারণে কোটাব্যবস্থার সামগ্রিক সুফল একতরফাভাবে নেতৃস্থানীয় গোষ্ঠীর কব্জা থেকে জনসংখ্যার অনুপাতে এবং সম্প্রদায়গত পশ্চাৎপদতার নিরিখে সুবিধাবঞ্চিত উপজাতি ও পার্বত্য বাঙালি সম্প্রদায়কে দেওয়ার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
আলোচনা সভা শেষে শতাধিক এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়।