রাঙামাটি লংগদুতে নিজ স্কুল ছাত্রীর ধর্ষক আব্দুর রহিমের হাইকোর্টের জামিন বাতিল করে তাকে পূনরায় গ্রেফতারপূর্বক যাবজ্জীবন সাজা বহালের দাবিতে হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের ডাকে বুধবার (৩০ আগস্ট ২০২৩) রাঙামাটি জেলায় সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘন্টার সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। জেলায় কোথাও কোন অপ্রীতিকর খবর পাওয়া যায়নি।
অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে সকাল ৬টা থেকে জেলার কাউখালী সদর, ঘাগড়া, বেতবুনিয়া, বাঘাইছড়ির সাজেক, বাঘাইহাট, মাচালং উজোবাজার, নানিয়ারচর উপজেলা সদর,বেতছড়ি, ঘিলাছড়ি, ১৮ মাইল, রাঙামাটি সদরের কুতুকছড়ি, সাপছড়ি সহ বিভিন্ন স্থানে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করে হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য নারী সংঘের নেতা-কর্মী, সমর্থকরা।
পরে অবরোধ কর্মসূচি শেষে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা সভাপতি রিমি চাকমা বলেন, সড়ক ও নৌপথ অবরোধের মাধ্যমে আমরা সরকার ও প্রশাসনকে এই বার্তা দিতে চাই যে, যদি অবিলম্বে আব্দুর রহিমের জামিন বাতিল ও যাবজ্জীবন সাজা বহালসহ বিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিস্কার করা না হয় তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা আরো বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। একজন ধর্ষকের বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার কোন নৈতিক অধিকার নেই।
রিমি চাকমা আরো বলেন, ধর্ষণ একটি মানববতা বিরোধী অপরাধ। তাই ধর্ষণ ও ধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। ধর্ষকরা যাতে রেহাই না পায় সেজন্য তিনি প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে আরো কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি অবরোধ কর্মসূচি সফলভাবে পালনে সহযোগিতা করার জন্য জেলার বাস, ট্রাক, লঞ্চ, বোট, সিএনজি মালিক-চালক সমিতিসহ প্রশাসন ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান।
অবরোধের সময় রাঙামাটি সদর থেকে কোন দূরপাল্লার যানবাহন চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি বলে জানা গেছে।
ধর্ষক আব্দুর রহিমকে তার পদ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বুধবার (৩০ আগস্ট) সকাল ৬ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত কার্যকর করা হলেও পরে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আধাবেলার অবরোধ শিথিল করে ৬ টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত তিন ঘন্টা করা হয়।
উল্লেখ, মোঃ আব্দুর রহিম রাঙামাটির লংগদু উপজেলার করল্যাছড়ি আর. এস উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক। সে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে তার নিজ স্কুলের এ ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় রাঙামাটি আদালত ২৯ নভেম্বর ২০২২ সালে আব্দুর রহিমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। পরে আব্দুর রহিম ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে বিবাহ করা এবং এক একর জমি লিখে দেওয়ার অঙ্গীকার করে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেয়।জামিন পাওয়ার পর পরই আব্দুর রহিম স্কুলে যোগদান করলে ক্ষুব্ধ হন স্থানীয় অভিভাবক, সচেতন জনগণ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।