৮০- ৯০ দশকে রাঙামাটিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী যে কয়েকজন আওয়ামীলীগের ব্যানার ধরে রাজপথে দাঁড়াতেন তাদের মধ্যে একজন ছিলেন অমর কুমার দে। দু:সময়ে দলের কান্ডারী এ অমর দ্বাদশ নির্বাচনে রাঙামাটির ২৯৯ নং আসনে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন গণমুক্তি জোটের প্রার্থী হয়ে।
রবিবার (৩ ডিসেম্বর) জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা অমর কুমার দের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন।
অমর কুমার দের দীর্ঘ কয়েক যুগের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক এ অমর রাঙামাটি পৌর আওয়ামীলীগের ১৯৯৫-২০০২ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। জেলা আওয়ামীলীগের উপ প্রচার সম্পাদক ছিলেন ২০১২-২০২২ সাল পর্যন্ত। পাশাপাশি এক দশকেরও বেশী সময় ধরে পালন করেছেন হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদ, রাঙামাটি পূজা উদযাপন পরিষদের দায়িত্ব। বাংলাদেশের হিন্দুদের প্রতিনিধি হয়ে ভারত সফর করেছিলেন অমর কুমার দে।
১৯৯৮ সালে যখন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন রাঙামাটি সফরে আসেন তখন প্রধানমন্ত্রীর পাশে বসেছিলেন অমর কুমার দে। অথচ সেটা এখন কল্পনা। শেখ হাসিনার পাশে তো দুরের কথা রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের কোন পদে নেই অমর কুমার দের।
এ অবস্থায় নৌকার মনোনয়ন চেয়েছেন অমর। দল তাঁকে মনোনয়ন দেয়নি। ফলে গণমুক্তি জোটের প্রার্থী হয়ে রাঙামাটি আসনে নির্বাচন করছেন অমর।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। তবে দুঃসময়ের নেতা হিসেবে এবার দল তাকে মূল্যায়ন করেনি।
অমর কুমার দে বলেন, দলের দুঃসময়ে ও বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছি বহুবার।
বিএনপি সরকারের আমলে আমার রিজার্ভ বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছয়-সাত বার হামলা-লুটপাট হয়েছে। আমি নিজেই হামলার শিকার হয়েছি। এখনকার সময়ে যারা নিজেদের বড় নেতা ভাবেন, তাদের কেউই তখন ছিলেন না।
অমর বলেন, দলের সুসময়ে দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে মূল্যায়নের বদলে বরং অবহেলার পাত্র হয়েছি। এখন আমাকে মূল্যায়ন করা হয় না দলে। সর্বশেষ জেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে আমাকে কোন স্থান দেয়া হয়নি।
অমর কুমার দে বলেন, আওয়ামীলীগে এখন হাউব্রীড নেতার ছড়াছড়ি। এদের ঠেলায় আমরা যারা ত্যাগী তাদের কারোর স্থান নেই।
নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে অমর কুমার দে বলেন, এ নির্বাচনে আমার প্রতিদ্বন্দী হবেন নৌকা প্রার্থী দীপংকর তালুকদার। বিগত নির্বাচনে দীপংকর তালুকদার পেশী শক্তি ব্যবহার করে আসনটি ছিনিয়ে নিয়েছে। প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকলে তা হত না। এবারও সেটা আশংকা করছি আমি। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমার জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। কারণ আমাকে ভোটাররা ভোট দেবেন বলে আমার আত্মবিশ্বাস আছে।