পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি উপজাতি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সশস্ত্র ক্যাডার কর্তৃক মব কিলিং বন্ধ ও পাহাড়ে চলমান সংঘাত এবং ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়ে অদ্য ৬ অক্টোবর রবিবার দুপুর একটায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয় পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি মো: শাহাদাৎ হোসেন কায়েশ ও সাধারণ সম্পাদক মো: হাবীব আজমের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের নিকট দেওয়া হয়।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন পিসিসিপি’র চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, বান্দরবান জেলা সাধারণ সম্পাদক হাবীব আল মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমন, দপ্তর সম্পাদক মিছবাহ, রাঙামাটি জেলা সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান, খাগড়াছড়ি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, বান্দরবান টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি মো: জানে আলম প্রমুখ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন ১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) শিক্ষক হত্যার ঘটনাটি অত্যান্ত সুপরিকল্পিত। চুরির অপবাদে খাগড়াছড়ি সদরের শালবাগানের বাসিন্দা ফার্নিচার ব্যবসায়ী মামুনকে হত্যা, এই হত্যাকান্ড নিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ পাহাড়ি উপজাতীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। ১ অক্টোবর মঙ্গলবার ছাত্রী ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগে শিক্ষক হত্যার মাধ্যমে উপজাতি ষড়যন্ত্রকারীরা অত্যান্ত সুপরিকল্পিতভাবে পাহাড়কে অশান্ত রাখতে চাইছে। নচেৎ, এভাবে বিভিন্ন অপবাদ এনে বাঙালি হত্যার কোন অর্থ নেই।
সারাদেশে মব কিলিং এ মারা যাওয়া কারোর অতীতে কতগুলা চুরি করলো সেটা উঠে আসে না, কতগুলা মামলা ছিলো সেটাও উঠে আসেনা। কিন্তু খাগড়াছড়িতে মব লিঞ্চিং এ মারা যাওয়া মামুনের অতীতের চুরির ঘটনা উঠে আসে, সোহেল রানার ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা উঠে আসে। সারাদেশে মব লিঞ্চিং থাকলেও, খাগড়াছড়িতে এসে অতীতের ঘটনা উঠিয়ে সেটা মৰ জাস্টিজই বানানো হচ্ছে কেন?
চোর, ধর্ষক, খুনি- অপরাধী যাই হোক প্রত্যেক অপরাধের বিচারের জন্য দেশের সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে এভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে উপজাতি একটি কুচক্রী মহল সূক্ষ্মভাবে ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রকে যদি রাষ্ট্র অবহেলা করে তবে সামনে পাহাড়ের সাধারণ মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাঙালিদের উপর একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ আর অপবাদের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড গুলো যার প্রমাণ বহন করে।
মূলত পাহাড়ে নিজেদের কায়েমি স্বার্থ হাসিল করতেই চলমান অস্থিরতা তৈরিতে মূল উস্কানি দাতা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে ভূমিকা রাখছেন চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায় ও তার ২য় স্ত্রী ইয়ান ইয়ান, গৌতম দেওয়ান, মাইকেল চাকমা, প্রসীত বিকাশ খীসা, প্রফেসর মংসানু চৌধুরী, নিরূপা দেওয়ান,বাঞ্ছিতা চাকমা, প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, জুয়ামলিয়ান আমলাই, এডভোকেট সুষ্মিতা চাকমা, শান্তি বিজয় চাকমা, এডভোকেট মাধবী মারমা, অশোক কুমার চাকমা, ইমতিয়াজ মাহমুদ, মেজবাহ কামাল সহ আরো অনেকেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্র ও সংঘাত বন্ধ করতে হলে রাষ্ট্রের উক্ত উস্কানিদাতাদের এখনি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি, তারা যদি ষড়যন্ত্র ও উস্কানি দেওয়া বন্ধ না করে তাহলে অবিলম্বে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টা তাদের রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য, সংবিধানের রক্ষন, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধান এবং সকলের প্রতি আইন অনুযায়ী বিহীত আচরণের শপথের ব্যত্যয় ঘটিয়ে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন দিয়ে পক্ষপাত মূলক আচরণ করছে। এছাড়াও কতিপয় সুশীলব্যক্তি, টকশোকারী, সরকারি আমলা, গণমাধ্যম, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও মানবাধিকারের নামধারী কর্মী, বাম দলগুলোর কিছু নেতা পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালিদের ও দেশের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত ভাবে উপস্থাপন করতে তৎপর রয়েছে এবং দেশের এক-দশমাংশ নিয়ে ষড়যন্ত্র ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষ অবলম্বন করে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে, যা জাতীয় নিরাপত্তা, ঐক্য ও সংহতির প্রতি গুরুতর হুমকি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ স্মারকলিপিতে ১২ দফা দাবি জানান।