বুধবার , ৬ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে রাজস্ব বেড়েছে ৮.৯৭ শতাংশ

প্রতিবেদক
এম.কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি
নভেম্বর ৬, ২০২৪ ৮:১৫ অপরাহ্ণ

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাস, অর্থাৎ সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে গত বছরের তুলনায় এবছর রাজস্ব বেড়েছে ৮.৯৭শতাংশ।

দীর্ঘ চার মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাস, অর্থাৎ সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে মৎস্য উন্নয়ন কেন্দ্রের আওতাধীন বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ৪১১৫ মেট্রিক টন মাছ আহরণ করা হয়েছে, যা থেকে সরকার প্রায় ৮কোটি ৫০ লক্ষ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদে জেলেদের জালে বেশি ধরা পড়ছে কাচকি, চাপিলা ও আইর মাছ। বেশি রাজস্ব ও আসছে এসব মাছ থেকে। হ্রদটি যদি খনন করা হয় তাহলে আগামীতে কার্পজাতীয় মাছ বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারনা।

কাপ্তাই মৎস্য উন্নয়ন উপকেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তার তথ্যমতে, এ বছর কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮,০০০ মেট্রিক টন এবং রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ১৬কোটি ৫০লক্ষ টাকা। এখন পর্যন্ত গত দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেক মৎস্য আহরণ এবং রাজস্ব আদায় হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। গত বছরের এই সময়ে ল্যান্ডিং ঘটে মাছের অবতরণ হয়েছিল ৩হাজার ৯০০শ মেট্রিক টন এবং রাজস্ব আয় হয়েছিল ৭কোটি ৮০ লক্ষ টাকা, যা তুলনামূলকভাবে এই বছরের চেয়ে কম।

কাপ্তাই হ্রদ বৃহত্তর মৎস্য ব্যবসায়ি সাধারণ সম্পাদক মোঃ শুক্কুর বলেন, এবছর পানি বেশি হওয়াতে হ্রদে মাছও ভাল হবে। এক সময় নদী গভীর ছিল বর্তমানে নদীর গভীরতা কমে গেছে তাই কার্পজাতীয় মাছ বড় হতে পারছে না। নদী খনন করা এখন সময়ের দাবী। নদী গভীরতা হলে কার্পজাতীয় মাছ বৃদ্ধি পাবে। হ্রদ দূষণ এর কারণ হচ্ছে পর্যটক ও নৌ যানগুলো সব ধরনের ময়না আবর্জনা হ্রদে ফেলে তাই হ্রদের পানি দিন দিন দূর্ষিত হচ্ছে।  নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে সকল ময়লা গিয়ে নদীতে গিয়ে পড়ে। রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের মাছ দেশ পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে রপ্তানি হয়। তাই এই হ্রদকে বাঁচানোর দায়িত্ব সবার।

বৃহত্তর মৎস্য ব্যবসায়ি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক বলেন, কাপ্তাই হ্রদের কার্পজাতীয় মাছ লোকেল ভাবে বিক্রি হয়। ঢাকা শহরে কার্পজাতীয় মাছ এখান থেকেও সস্তা তাই কার্পজাতীয় মাছ ঢাকা খাবে না। ঢাকায় ছোট মাছে চাহিদা বেশি। আমরা এখান থেকে চাপিলা, কাজুলি, বাচা, কাচকি, বাইং, টেংরা ও আইর মাছ ঢাকার যাত্রাবাড়ি, ঢাকার নিউ মার্কেট, কাওরান বাজার, সাভারসহ দেশের বাহিরে যায় রাঙামাটির ছোট মাছ। তবে বর্তমানে ব্যবসা একটু খারাপ। হয়তো বা কয়েক দিন পরে আবার ব্যবসা হবে। কিছু মাছ বেড়ে গেছে আবার কিছু মাছ কমে গেছে। পাইশা মাছ, বাটা মাছ, কালি ঘইন্যা,বাউস ও সাদা ঘইন্যা কমে গেছে। বেড়ে গেছে, কাচকি, কাজুলি, চাপিলা, বাইলা ও আইর মাছ। আমাদের ব্যবসা অনেকটা ভাল। তবে কাপ্তাই হ্রদ নিয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন।

মৎস্য ব্যবসায়ি বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, কাপ্তাই হ্রদের মাছ দেশের প্রতিটি জেলায় চাহিদা রয়েছে। দেশ পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের মাছ রপ্তানি করা হয়। এখানে সব চেয়ে চাপিলা ও কাচকি মাছ বেশি পাওয়া যায়। রাঙামাটির মিঠা পানির মাছ তাই এই মাছের চাহিদা অনেক বেশি।

বিএফডিসি’র ব্যবস্থাপক কমান্ডার মোঃ আশরাফুল আলম ভুঁইয়া(এনডি) বলেন- বিভিন্ন উপকেন্দ্রসমূহে ২০২৩-২৪ অবতরণ মৌসুমে অবতরণকৃত মাছের প্রজাতিভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে যে, কাপ্তাই হ্রদে চাপিলা, কাচঁকি, কাজুলি, মইল্যা, বাতাসি, শোল, কইবোয়াল মাছ সমূহের অবতরণ উল্লেখযোগ্য পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও চিতল, তেলাপিয়া, কালো টেংরা, গুলশা, বড় আইড়, গজার, ছোট আইড় এর অবতরণ পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি রুই, কাতলা, মৃগেল, বাটা, কালিবাউস, পাবদা, বাইম মাছের উৎপাদন কিছুটা কমেছে। এ সকল মাছ কমে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে এবং অনুসন্ধানের ফলাফল অনুযায়ী এদের উৎপাদন বৃদ্ধির যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, গত বছরের চেয়ে এবছর হ্রদে মাছে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে সাথে বাড়ছে রাজস্ব আয়। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে আগামীতে হ্রদে মাছের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে।

কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে হ্যাচারি ও নার্সারি সম্প্রসারণ, অভয়াশ্রমের সংখ্যা বৃদ্ধিকরণসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য সম্পদের সুরক্ষা ও ডিমওয়ালা ও মা মাছের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে গুইট্টা নিধনরোধে ও জাঁকজাল নির্মূলে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন এবং বিএফডিসি, রাঙামাটির যৌথ প্রচেষ্টায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ অভিযানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। জাঁকজাল স্থাপনে মদদদাতা-সহায়তাকারী অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করার কার্যক্রম শেষে তাদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। কাপ্তাই লেকের নাব্যতা ও জলায়তন যথাযথভাবে রক্ষার্থে লেকের সীমানায় প্রতিবন্ধকতা ও বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদের মৌলিকত্ব রক্ষায় বিভিন্ন ক্রীক-অংশে অবৈধভাবে বাধঁ নির্মাণ ও জালঘেরার মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি জাঁকজালের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে লিফলেট বিতরণ, বাজারে মাইকিং এর মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে উব্ধুদ্ধ করা হয়েছে।

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

%d bloggers like this: