রাঙামাটিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর শ্রমিক উইংয়ের কমিটি ঘোষণাকে ঘিরে সংবাদ সম্মেলন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে জেলা শহরের একটি রেস্তোরাঁয় আনুষ্ঠানিকভাবে ৪১ সদস্যবিশিষ্ট শ্রমিক উইংয়ের কমিটি প্রকাশ করা হয়। আলোচনা সভা থেকে চট্টগ্রামের পটিয়ায় এনসিপি নেতাকর্মীদের উপর পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাধ জানানো হয়। একসাথে এই সংবাদ সম্মেলনে বাঘাইছড়ি পৌর ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রনেতাকে হত্যা হুমকি প্রদর্শনেরও অভিযোগ উঠে।
রাঙামাটি জেলা শ্রমিক উইং এর ৪১ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারী হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন আবুল কাসেম। যুগ্ম সমন্বয়কারীর হিসাবে রয়েছেন উষামং মারমা, জ্যোতি চাকমা, লেলু চাকমা এবং মো. সৈকত। অনুষ্ঠানে এনসিপির কেন্দ্রীয় শ্রমিক উইংয়ের সংগঠক কলিন্স চাকমা, রাঙামাটি জেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী বিপিন জ্যোতি চাকমা, যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন চৌধুরী, সাইদুল ইসলাম সহ অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনলন চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সদস্য রবিউল হোসেন ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, আন্দোলন সংগ্রাম পরবর্তী সময় বাঘাইছড়ির পশ্চিম মুসলিম ব্লক এলাকার কিছু মানুষ তাদের এলাকার নানাবিধ সমস্যার কথা আমাকে বলে। তারা তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ, পানি ও উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস সংকটের কথা তুলে ধরেন আমার কাছে। তখন আমি সবাইকে একসাথে নিয়ে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি। কিন্তু এর পরবর্তী সময়ে বাঘাইছড়ি পৌর ছাত্রদলের ১১ নাম্বার যুগ্ম-আহবায়ক শাহাদাৎ মোল্লা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া শুরু করে। তখন আমি জানতে চাই আমাকে হুমকি দেওয়ার কারণ কি? আমি তো এইখানে কাজ করতে এসেছি অন্য কোন উদ্দেশ্যে আসি নাই। তখন তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে বলেন আপনি উন্নয়ন কাজ করেন কিংবা অন্যকিছু সব এলাকার বাহিরে করবেন। এলাকায় যদি করেন তাহলে আপনার সমস্যা হবে। আপনি এলাকায় আসলে আপনাকে মেরে পাহাড় থেকে ফেলে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগষ্টের পরে আমরা তো সবাই দল-মত নির্বিশেষে একসাথে জনগণের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ৫ আগষ্টের আগে আওয়ামী লীগ যে কাজগুলো করতো এখন কেনো তারা ওই কাজ আবার করতেছে। আমরা কারো শত্রু না আমরা সবাই একসাথে কাধে-কাধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই। একইসাথে যারা আমাকে হুমকি দিয়েছে তাদের বিচার প্রত্যাশা করি।
এসময় এনসিপির রাঙামাটি জেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী বিপিন জ্যোতি চাকমা বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে বিএনপির-জামাত সহ ছাত্র জনতা সবাই ছিলো। আমরা কাউকে শত্রু মনে করি না। আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখি। হুমকি-ধামকি প্রদানের দেশ তো আমরা চাইনি। এরকম প্রেক্ষাপট তো আমরা চাইনি। আমরা চেয়েছিলাম সবাই মিলে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে। সবাই মিলে সমাজ পরিবর্তন করতে।
এসময় তিনি আরও বলেন, বর্তমানে রাঙামাটিতে যুব উইং গঠনের কাজ চলছে। আপাতত এনসিপি ও শ্রমিক উইংয়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমরা এখন সাধারণ মানুষের কাজে যাচ্ছি। আগে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো আমাদের উদ্যেশ্য, তারপরই তো নির্বাচন।
আলোচনা সভায় অন্যান্যরা বলেন, পাহাড়ের ৯০ শতাংশ মানুষই শ্রমজীবী কেউ দিনমজুর, কেউ জেলে, সবাই খেটে খাওয়া মানুষ। শ্রমিকদের স্বার্থ ও ন্যায্য অধিকার রক্ষায় এনসিপির শ্রমিক উইং মাঠে থাকবে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সবসময় তাদের পাশে থাকবে এই সংগঠনটি।