রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বরকলে জনস্বার্থে ব্রিজ রক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের হস্থক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয়রা। বরকল উপজেলা সদর বাজারের পার্শ্ববর্তী হাসপাতাল সংলগ্ন সেতুটি বহু বছরের পুরাতন সেতু দিয়ে জরাজীর্ণ অবস্থায় কোন মতে স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রী, জনসাধারণ এবং জরুরী রোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণির লোকজন চলাচল করে আসছে। এই সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২হাজার থেকে আড়াই হাজার লোক চলাচল করে। দীর্ঘ দিন ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, একটি ভারী ট্রাক্টর সেতুটির উপর দিয়ে ইট, বালি, কংক্রীট, সিমেন্টসহ বিভিন্ন ভারী সামগ্রী পরিবহন করার সেতুটির গার্ডার পিলার ও রেলিং মারাত্মক, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যে কোন সময়ে সেতুটি ধসে গিয়ে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে।
সেতুটির ক্ষতিগ্রস্থ অংশটি সামাল দিতে সেতুর পূর্ব পাশে ফাটলের উপর কিছু ঢালাই দিয়ে লোকচক্ষুর আড়াল করার চেষ্টা করা হয়। এলাকাবাসী তাদের ভবিষ্যতে দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ট্রাক্টরটি সেতুর উপর দিয়ে ভারী মালামাল পরিবহন না করার জন্য ট্রাক্টর মালিককে বার বার নিষেধ করা হলেও এলাকাবাসীর নিষেধ অমান্য করে সেতুর উপর দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারী মালামাল পরিবহন করছে ট্রাক্টর মালিক। যার ফলে সেতুটি যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়ার আশংকা রয়েছে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানাগেছে, রাঙামাটির বরকল উপজেলা সদরের হাসপাতাল সংলগ্ন চাইল্যাতুলি ছড়ার উপর সেতুটি নির্মাণ করা হয় নব্বই দশকের সময়। মূলতঃ পায়ে হেঁটে চলাচলের জন্য নির্মান করা হয়েছিল এ সেতুটি। নির্মাণের দীর্ঘ সময় হলেও সংস্কার কিংবা পূনঃ নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। ফলে নড়েবড়ে করে কোন মতে টিকে আছে সেতুটি। প্রতিদিন এ সেতু দিয়ে স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, হাসপাতালের বিভিন্ন রোগিসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জনসাধারণ চলাচল কওে এই সেতুটি দিয়ে।
স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি লংগদু উপজেলার বাসিন্দা মোঃ আখতার নামে এক ব্যবসায়ি ভারীযান ট্রাক্টর ও ট্রাক্টরের সাথে ট্রলি সংযুক্ত করে ইট, বালি, রড সিমেন্ট ও কংক্রীত পরিবহন করছে সেই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির উপর দিয়ে। সেতুর উপর দিয়ে ভারী মালামাল পরিবহন করায় ট্রাক্টরের আঘাতে সেতুর পিলার ভেঁঙ্গে গিয়েছে। সেতুর মাঝখানে ও চার পাশে ফাটল দেখা দিয়েছে। এভাবে প্রতিদিন ভারীযানবাহন দিয়ে মালামাল পরিবহন করায় যে কোন মুহুর্তে ব্রীজটি ভেঙ্গে যাবে বলে আশংকা করছে এলাকার মানুষ। ব্রীজটি ভেঁঙ্গে গেলে চরম দুর্ভোগের শিকার হবে উপজেলাবাসী।
বরকল উপজেলাবাসীর সম্পদ এ ব্রীজটি রক্ষার জন্য ভারীযান দিয়ে মালামাল পরিবহন না করার জন্য ১জানুয়ারী-২০২৫ বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে এলাকাবাসীর পক্ষে ৭০জন স্বাক্ষরিত একখানা লিখিত আবেদন দিয়েছেন চাইল্যা তুলি গ্রামের গ্রাম প্রধান মালাছিং মারমা। এছাড়াও ৩নং আইমাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার শুভমালা চাকমা ও বরকল মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাত বিন্দু চাকমা এলাকাবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে সেতুটি নিরাপদ রাখার জন্য জনস্বার্থে ট্রাক্টরটি চলাচলের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।