কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় বিরাজ করছে ছেলেধরা আতংক। চলতি সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নিখোঁজ রয়েছে ৪জন কিশোর। নিখোঁজরা হলেন, উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের টেকপাড়া এলাকার নুরুল আজিমের ছেলে সাঈদ বিন আজিম(১৪), একই ইউনিয়নের পাহাশিয়াখালী এলাকার আদনান জামিন সাবিত (১৩), ঈদগাঁও ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার নুরুল আলম হেলালীর ছেলে তাহসিন (১৪) ও জাগিরপাড়া এলাকার জাফর আলমের ছেলে ইশমাম।
তাদের মধ্যে ২জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ১ জনের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চাওয়া হচ্ছে ও অপরজনের কোনো হদিস নেই এখনো। অপহরণকারীদের কাছ থেকে ছাড়া পাওয়া জাগির পাড়ার জাফর আলমের ছেলে ইশমাম জানান, ১৫ জুন বেলা ১২ টার দিকে মাদ্রাসা থেকে ফেরার পথে কেউ একজন তার চোখ চেপে ধরে কালো রঙের টি-আর-এক্স গাড়িতে তুলে নেওয়া হয় তাকে। পরে সাদা রঙের কাপড় তার মুখে চেপে ধরলে মুহুর্তেই অজ্ঞান হয়ে যায় সে। পরে গাড়ি চলন্ত অবস্থায় তার হুশ ফিরলে ইশমামের কাছ থেকে তার পরিবারের তথ্য চান অপহরণকারীরা। তবে ইশমাম ধুর্ত ও চতুর হওয়ায় সে তার পরিবারের কোনো তথ্য দেয়নি এবং সে নিজেকে অপহরণকারীদের কাছে এতিম বলে দাবী করে।
পরে অপহরণকারীরা তাকে মারধর করলেও সে কোনো মুখ না খোলায় গাড়ি রানিং অবস্থায় ইশমামকে (চকরিয়া) এলাকায় ফেলে দিয়ে চলে যায় তারা। পরে সে বাজারে থাকা একজন ব্যাক্তির কাছ থেকে ফোন নিয়ে তার পিতা জাফর আলমকে কল দিলে জাফর তাকে চকরিয়া গিয়ে নিয়ে আসেন।
জাফর আলম জানান, মাদ্রাসা শেষে ছেলে বাসায় ফেরেনি ,তারা ভেবেছিলেন হয়তো খেলতে গেছে। কিন্তু সন্ধা পেরোলেও ছেলে বাড়ি না ফেরায় খোজাখুজি করছিলেন তারা। এবং মুহুর্তেই অপরিচিত নাম্বার থেকে ছেলের গলা শুনে চকরিয়া গিয়ে ছেলেকে নিয়ে আসেন তিনি। এরপর ঘটনার বিষয়বস্তু শুনতে পান ছেলে ইশমামের মুখে।
একইদিন থেকে ঈদগাঁও মাইজপাড়া থেকে নিখোঁজ ছিলো তাহসিন নামে আরও একজন কিশোর। তার পরিবারের লোকজন দুই দিন ধরে তার খোঁজ করেও কোনো প্রকার সন্ধান পাননি। তবে তৃতীয়দিনের মাথায় তাহসিনের পরিবারের কাছে কল আসে মুক্তিপন দাবি নিয়ে।
তাহসিনের চাচা রিফাত জানান, দুইদিন ধরে নিখোঁজ ভাতিজাকে খুজছিলেন তারা। তবে কোনো ধরনের খোঁজ পাননি পরে বুধবার বিকেলে কল আসে তাহসিনের বিষয়ে। কলের ওপার থেকে একজন বলেন ছেলেকে জীবিত পেতে চাইলে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে এবং তারা বর্তমানে তাহসিনকে চট্রগ্রামে রেখেছেন বলেও দাবি করেন।
এ বিষয়ে ঈদগাঁও থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আছাদুর রহমান জানান, এ ধরনের কোনো অভিযোগ বা জিডি থানায় হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।