বন্ধ হয়ে গেছে রাঙামাটির একমাত্র সরকারী মিল কাউখালীর ঘাগড়ার টেক্সটাইল মিল।২০১৯ সালে করোনা ভাইরাস আসার সাথে সাথে মিলটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আর চালু হয়নি মিলটি। বর্তমানে মিলটির সব কার্যক্রম বন্ধ।
মিলটি দেখাশুনার জন্য আছেন মাত্র একজন সরকারী কর্মকর্তা। তিনি হলেন ব্যবস্থাপক অমর বিকাশ চাকমা।মিলটি দেখার জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে ৮ জন নিরাপত্তা প্রহরী রাখা হয়েছে মিলে।
মিলে সম্প্রতি গিয়ে দেখা যায়, মিলটি এক প্রকার পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। মিলের মেশিনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
এ মিলটি আর চালু হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন মিলটির বর্তমানে দায়িরত্ব ব্যবস্থাপক অমর বিকাশ চাকমা।
মিল কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায় ১৯৭৬-৭৭ অর্থ বছরে রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া এলাকায় ২৬ দশমিক ২৪ একর জমিতে নির্মাণের কাজ শুরু করা হয় রাঙামাটি টেক্সটাইল মিল। ১৯৮৩ সালে মিলটি উৎপাদনে যায়। এরপর ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ভালোই চলে মিলটি। সে সময় বেশ লাভজনক প্রতিষ্ঠানে ছিল মিলটি।
স্বয়ং সম্পূর্ণ মিলে রয়েছে মেডিকেল সেন্টার, অতিথি ভবন, কেন্টিন, শ্রমিক কোয়াটার, বিদ্যালয়, স্টাফ ভবন, ম্যানেজার বাংলো।
এ মিলটি নির্মাণের ফলে প্রায় ৭০০ জনের কর্মসংস্থান হয়। ১৯৯২ সালে থেকে ক্ষতির তালিকায় নাম লেখায় মিলটি। এ ক্ষতিতে চলে ২০০৭ সাল পর্যন্ত। এরপর এটি বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ থেকে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত। এরপর ১৮ অক্টোবর ২০১৭ সালে এটি বেসরকারী কোম্পানী চট্টগ্রামের মেসার্স রফিক এন্ড ব্রাদার্সের সাথে ৩ বছরের জন্য চুক্তি করে সরকার। মেসার্স রফিক এন্ড ব্রাদার্স নিজে উৎপাদনে না গিয়ে আমোক্তারনামার ভিত্তিতে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের মোহাম্মদ আব্দুল আজিজের মেসার্স আল আমীন এন্টারপ্রাইজ মিলের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে উৎপাদনে যায় মিলটি। এতে এলাকার চিত্র কিছুটা বদলাতে থাকে। কিন্তু করোনা আসার পর মিলের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল মেসার্স আল আমীন এন্টারপ্রাইজ মেয়াদ পুর্তির আগে মিলের দায়িত্ব সরকারের হাতে হস্তান্তর করে মিলটি বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে বন্ধ রয়েছে মিলটি।
মিলের শ্রমিক শান্তিময় চাকমা (৫০) বলেন, মিলটি বন্ধ হয়ে যওয়ায় আমরা ৪ শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়েছি। শ্রমিকরা সবাই মানবেতর জীবন যাপন করছে। মিলটি চালু করা হলে আমরা আমাদের কর্মসংস্থান ফিরে পাব।
মিলটির ব্যবস্থাপক অমর বিকাশ চাকমা বলেন, মিলটিতে যেসব যন্ত্রপাতি রয়েছে এগুলো পুরোনো মডেলের। বর্তমানে এর চেয়ে আরো আধুনিক মেশিন এসেছে। ফলে ঘাগড়া মিলের মেশিন দিয়ে উৎপাদনে গেলে লোকসানে পড়তে হয়। এজন্য বেসরকারী কোম্পানীগুলো এ মিল চালানোর আগ্রহ দেখায় দেখাচ্ছে না।মিলে অনেক সরকারী সম্পদ রয়েছে। এ সম্পদ রক্ষার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে।