শনিবার , ১৭ জুন ২০২৩ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে বরকলে আরো ১১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রকল্প গ্রহণ; অনিয়মের অভিযোগ

প্রতিবেদক
হিমেল চাকমা, রাঙামাটি
জুন ১৭, ২০২৩ ২:১৩ অপরাহ্ণ

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দ্বিতীয় ধাপে রাঙামাটির বরকলে আরো ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ইমারজেন্সি তহবিল থেকে বিদ্যালয় প্রতি ২ লাখ টাকা করে ২২ লাখ টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

বরাদ্ধ পাওয়া বিদ্যালয়গুলো হল ঠেগা করল্যাছড়ি সপ্রাবি,  মধ্যম অজ্যাংছড়ি সপ্রাবি, ঠেগা আন্দার মানিক সপ্রাবি, তারেংঘাট সপ্রাবি, ঠেগামুখ সপ্রাবি, ভাই মিঠাই সপ্রাবি, মহালছড়ি সপ্রাবি, লাইজু গ্রাম সপ্রাবি, পেত্যাছড়ি সপ্রাবি, রহিম টিলা সপ্রাবি এবং খুব্বাং মুখ সপ্রাবি।

বিদ্যালয়গুলো উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী দুর্গম ভুষণছড়া ইউনিয়নে ৪টি, বড় হরিণা ইউনিয়নে ৩টি, আইমাছড়া ইউনিয়নে ২টি এবং বরকল সদর উপজেলার পাশে সুবলং ইউনিয়নে ২টি।

প্রথামিক শিক্ষা অফিসের সূত্র জানায়, কোন বিদ্যালয় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা সংস্কার ও মেরামত করা হয়। উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে সংস্কার খচর নির্ধারণ করে বিল ভাউচার উপজেলা হিসাব শাখায় জমা দিতে হয়। এরপর বারাদ্ধ দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

অভিযোগ আছে, এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। কোন কাজ না করে ভূয়া বিল ভাইচার তৈরি করে বরাদ্ধের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দুর্গম এলাকার স্কুলগুলো বেচে নেওয়া হয়েছে। যেন তদন্ত না হয়।

বরাদ্ধ পাওয়া এক প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমার বিদ্যালয়ে কোনবার পাহাড়ি ঢল হয়নি। হবেও না। তবে সংস্কারের প্রয়োজন ছিল। বিষয়টি শিক্ষা অফিসারকে জানানোর পর বিল ভাউচার বানিয়ে জমা দিতে বলা হয়। এগুলো জমা দেওয়ার সময় ২০ হাজার টাকা জমা দিতে হয়।

রহিম টিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার বিদ্যালয়টি পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তবে সংস্কারের প্রয়োজন। তবে এটা ঠিক গত বছর আমি কোন সংস্কার কাজ করিনি।  এসএমসি (স্কুল ম্যানেজিং কমিটি) মিলে আমি বিল বাউচার বানিয়ে শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছি। বাদ বাকীটা শিক্ষা অফিস করেছে। টাকা আসলে কাজ করব।

বরাদ্ধ পাওয়া মহালছড়ি সপ্রা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মায়াধন চাকমা বলেন, আমার স্কুলটি কোন কালে পাহাড়ি ঢল হয়নি। কোথাও আবেদন করিনি।

তারেংঘাট সপ্রা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রবীর চাকমা বলেন, আমার বিদ্যালয়টি সংস্কারের প্রয়োজন।বিগত বা এ বছর আমি কোন কাজ করতে পারিনি। টাকা পেলে কাজ করব।

খুব্বাং মুখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফুল মোহন চাকমা বলেন, আমার বিদ্যালয়টি পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তবে স্কুল সংস্কারের জন্য টাকা দরকার। কোন কাজ না করে বিল ভাউচার বানিয়ে শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছি। টাকা পেলে তারপর কাজ করব।

প্রকল্পের টাকাগুলো কিভাবে কি করব তা ঠিক করতে সদ্য বদলী বদলী হওয়া বরকল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম রাঙামাটি থেকে চলে যাওয়ার আগে আমাদের ডেকেছেন।

সেখানে তিনি বলেছেন এ প্রকল্পগুলোর বিষয়ে আমরা যেন সবাই এককথা বলতে বলি। আমরা ঠিক থাকলে সাংবাদিক কোন কিছু লিখতে পারবে না।

তিনি আমাদের নিষেধ করে বলেছেন, সাংবাদিক জিজ্ঞেস করলে সবাই বলবে কাউকে ঘুষ দিতে হয়নি। এখন বিষয়টি জানাজানি হলে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি (এসএমসি) টাকার হিসাব চাইবে। সেখানে হিসাব দিতে হবে। এখন ঘুষ দিতে হয়নি বললে এসএমসিকে নিজের পকেট থেকে নিয়ে সে টাকার হিসাব মিলাতে হবে। এখন এ টাকা গ্রহণ করব কিনা ভাবতেছি। খুব টেনশনে আছি।”

রাঙামাটি জেলায় কর্মরত একজন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, বরকল উপজেলায় এতগুলো বিদ্যালয় ইমার্জেন্সী তহবিল থেকে বরাদ্ধ পেল এটি ভাববার বিষয়। অথচ অনেক উপজেলায় একটিও বরাদ্ধ পায়নি। এটি একটি অস্বাভাবিক বিষয়।

বরকল উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হিতৈষী চাকমা বলেন, নতুন ১১ বিদ্যালয়ের নামে ইমার্জেন্সী তহবিল থেকে টাকা এসেছে। বরাদ্ধ আনার কাজটি আগের টিইও সালাম স্যারের আমলে হয়েছে। তাকে সম্প্রতি শাল্লায় বদলি করা হয়েছে। তার নানান কাজ নিয়ে আমি বেশ ঝামেলার মধ্যে আছি। এ বরাদ্ধের বিষয়টি কেরানীকে দেখতে বলেছি। আমি শুধু কাজ হয়েছে কিনা এটি দেখব।

বরকলে চলতি অর্থ বছরে প্রথম ধাপে ১৫টি ও দ্বিতীয় ধাপে ১১টি সহ মোট ২৬ বিদ্যালয় বরাদ্ধ পায়। প্রথম ধাপে ৩৫ লাখ টাকা পায় ১৫টি বিদ্যালয়।

বরকল উপজেলা চেয়ারম্যান বিধান চাকমা বলেন, যে স্কুলগুলো বরাদ্ধ পেয়েছে সেগুলোতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হবার কোন সম্ভাবনা নেই। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে সবার আগে আমি জানার কথা। কিন্তু কেউ তো জানাল না। এ যাবত কোন মিটিংয়ে এ বিষয়ে উত্থাপন হয়নি। ভুষণছড়া কল্যাবুন্যা সামান্য এলাকা ছাড়া বরকলের কোন স্কুল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হবার সুযোগ নেই। এখন বরাদ্দ এসেছে এ বিষয়টিও আমি জানি না। নিয়ম মতে তো ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করার কথা। কিন্তু সেটিও তো আমরা দেখিনি। তার মানে এখানে কি হচ্ছে তা দেখার বিষয়।

 

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

আপনার জন্য নির্বাচিত
%d bloggers like this: