সোমবার , ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

বিলাইছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ 

প্রতিবেদক
সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, বিলাইছড়ি, রাঙামাটি
জানুয়ারি ২৯, ২০২৪ ৬:১৫ অপরাহ্ণ

 

বিলাইছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে এসেছে। এসএসসি ফরম ফিল-আপ, ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ভর্তিসহ অভিযোগ উঠেছে আর্থিক অনিয়মের বিষয়েও।

২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় এক বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য এক বিষয়ে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহন করি। এতে আমাদের অনেকের ফলাফল অকৃতকার্য আসে এবং অন্যদের মধ্যে সর্বমোট ছাত্র ৩জন এবং ছাত্রী ১৪জন এর কৃতকার্য তালিকা প্রকাশ করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানায়, যারা নির্বাচনী পরীক্ষায় পাস করতে পারেনি তাদের ফরম ফিল-আপ করতে দেওয়া হবে না।ফলে আমরা এক বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বাইরে অনুনয়-বিনয় না করে পুনঃভর্তির প্রস্তুতি গ্রহন করি। কিন্তু তখন জানতে পারি যে, আমাদের সাথে নির্বাচনী পরীক্ষায় এক বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থী (অনিয়মিত) দু’জন মংচিলা মার্মা ও মিতু আক্তার’কে ফরম ফিল-আপ এর সুযোগ দেওয়া হয়েছে এবং আমাদের বাকী শিক্ষার্থীদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে।কিন্তু কেন তিনি আমাদের সাথে এমন বৈষম্যমূলক আচরণ করলেন আমরা তার প্রতিবিধান চাই।তাই এ বিষয়ে ন্যায় বিচার প্রত্যায়শায় আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে একখানা অভিযোগপত্র দাখিল করেছি।

এখানে বিশেষ লক্ষণীয় যে, নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করা দু’জন শিক্ষার্থীকে ফরম ফিল-আপ এর সুযোগ দেওয়ার পর আমরা নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল সীট নোটিশ বোর্ডে দেখতে গিয়ে দেখি, সেই ফলাফল সীট সেখানে আর নেই! যেখানে ফলাফল সীট টাঙিয়ে দেওয়া হয়।এ কারণে আমরা মনে করছি যে, সে হয়তো তাদের দু’জনের নাম নতুন করে কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফলাফল তালিকায় যুক্তকরে তাদের পাস দেখিয়ে থাকবেন নিশ্চয়ই।তা না হলে এমন চরম বৈষম্যমূলক অপরাধ করে কেন তিনি পার পেতে সাহস রাখেন বলে মন্তব্য করেন তারা। এছাড়াও এসএসসি শিক্ষার্থীদের পুনঃভর্তিতে ১৩৫০ টাকা আদায় করেও মাত্র ৮৫০ টাকার রশিদ দিয়ে দুর্নীতির আশ্রয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও উঠেছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানায়, আমি এসএসসিতে এক বিষয়ে অকৃতকার্য একজন শিক্ষার্থী। আমি পুনঃভর্তি হতে গিয়ে আমার কাছ থেকে মোট ১৩৫০ নেয়া হয়েছে। কিন্তু আমাকে মাত্র ৮৫০ টাকার রশিদ দেয়া হয়েছে। এতে বিনা-রশিদে ৫০০ টাকা আমার কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। আরেক শিক্ষার্থী জানায় ওনার মত সেও এক বিষয়ে ফেল করছে কিন্তু আমার কাছ থেকে ১৬ ০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। আমার মত অন্য অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও নিশ্চয়ই একইভাবে টাকা নেয়া হয়েছে বলে আমার ধারণা!

ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক (জীব বিজ্ঞান) সুপ্রিয়া দে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপ-পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এর বরাবর একখানা অভিযোগপত্র প্রেরণ করেছেন। যা এ প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে। এতে প্রধান শিক্ষক বেশ কয়েক বছর যাবত হতে তাকে আর্থিক এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগসহ বিদ্যালয় ত্যাগের পরিস্থিতি সৃষ্টির কথাও তুলে ধরেন। অভিযোগে তিনি প্রাণ নাশের হুমকিসহ আরও লেখেন, ১৬নভেম্বর ২০২৩ তারিখ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে গেলে, আর স্বাক্ষর করতে হবে না বলে তার কাছ থেকে হাজিরা খাতা কেড়ে নেয়া হয়।এর পর হতে সে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে পারছেন না।এ ফাঁকে তাকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত দেখানো হচ্ছে ফলে তিনি সম্প্রতি বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকেও কাগজে-পত্রে অনুপস্থিত থাকছেন।এমনকি কয়েক মাস ধরে বেতনও বন্ধ রাখা হয়েছে তার।সাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষণ করে দুর্গাপূজার ভাতাও পূজা পরবর্তী প্রদান করা হয়েছে।সর্বোপরি তিনি লেখেন, পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য করবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়েছে তাকে।এ বিষয়ে তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপ-পরিচালকের কাছে সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এই শিক্ষিকা অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সুপ্রিয়া দের সঙ্গে কথা হলে এতে তিনি বিষয়টি সত্য বলে জানান। এদিকে ভর্তি কমিটিকে অবহিত না করে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগও উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

এইসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম -এর সাথে সাক্ষাত করলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, ফেল করা কোন শিক্ষার্থীকে এসএসসি পরীক্ষায় এলাউ করা হয়নি। হাজার মানিক উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হওয়ায় মিতু আক্তারকে এলাউ করা হয়েছে মাত্র। শিক্ষার্থী ভর্তি বিষয়ে বাস্তবতা বিবেচনায় ভর্তি কমিটির সুপারিশে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ২০জন শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ভর্তি করায় সর্বমোট ৭৫জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে আরও অনেকে ভর্তি আবেদন করেছেন বলেও তিনি জানান। অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় বিষয়ে কথা হলে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৮ ৫০ টাকা স্কুলের জন্য এবং ৫০০ টাকা অতিরিক্ত( অস্থায়ী) শিক্ষকরা তাদের জন্য নেয় বলে জানান। আর ৫০০ টাকা রশিদে না নিয়ে আসার কারণ, এ টাকা বেসরকারী কাজে ব্যবহার হয়, তাই আমরা রশিদে দেখাই না বলে জানান তিনি।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমির সুপারভাইজার বিভীষণ চাকমা গণমাধ্যমকে জানান, অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের ফরম ফিল-আপ এ অনিয়মের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন এবং সহকারি শিক্ষক সুপ্রিয়া দে, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বরাবর অভিযোগের একখানা অনুলিপি আমার কাছে প্রেরণ করেছেন এটা সত্য।শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সিফাত উদ্দিন জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে সরকার নির্ধারিত ৫৫জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে।কিন্তু ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির অনুমতি চেয়ে ব্যাপক আবেদনপত্র আসায় পিছিয়ে পড়া উপজেলা হিসেবে বিশেষ বিবেচনায় অতিরিক্ত ২০জন শিক্ষার্থীকে আমরা ভর্তি করিয়েছি।কিন্তু শুনেছি সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক কমিটিকে অবহিত না করে আরও অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়েছেন। এ বিষয়ে আমি তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশের ব্যবস্থা করছি।

অপরদিকে এসএসসি (অনিয়মিত) নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করা কেবল ২ জন শিক্ষার্থীকে ফরম ফিল-আপ এর সুযোগ দিয়ে অন্যদের বঞ্চিত করার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা আমার বরাবরে একখানা অভিযোগপত্র দিয়েছেন।যা আমি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি।যদি অনিয়মের সত্যতা পাওয়া যায়, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আরো উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা’জানান প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক অনিয়মের অভিযোগ আমার কাছে রয়েছক। ইতোমধ্যে সে ভর্তি কমিটিকে উপেক্ষা করে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়েছে।অথচ লটারিতে প্রথম অপেক্ষমান ২জন শিক্ষার্থীকে সে ভর্তি করেনি।এছাড়া ভর্তিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগও আছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করে যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।

এসএসসি (অনিয়মিত) শিক্ষার্থীরা নির্বাচনী পরীক্ষায় যারা এক বিষয়ে খারাপ করেছে তাদের ২জনকে ফরম ফিল-আপ এর সুযোগ দিয়েছে কিন্তু অন্যদের বঞ্চিত করার অভিযোগে ইউএনওর কাছে একখানা অভিযোগ দাখিল করেছে।এর এককপি অনুলিপি আমার কাছে প্রেরণ করেছে।শিক্ষকদের মাঝেও অনেক অন্তর্দ্বন্দ্ব, কোন্দল ইত্যাদির অভিযোগ আসে। এখানে অস্থায়ী শিক্ষকদের দিয়েও ক্লাস নেওয়া হয়। ক্লাস নিতে বঞ্চিত হচ্ছে সরকারি শিক্ষকরা। সরকারি স্কুল সরকারি শিক্ষক দ্বারা ক্লাস পরিচালিত হবে। কিন্তু এসব কেন হয়? এভাবে তো একটা স্কুল চলতে পারে না বলে, এসব বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে সুদৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

 

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

আপনার জন্য নির্বাচিত
error: Content is protected !!
%d bloggers like this: