প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা একমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রাম মানুষের দুঃখ কষ্ট বুঝেন। বুঝেন বলে তিনি পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এ চুক্তি জননেত্রী করেছে তিনিই বাস্তবায়ন করবেন। তিনি ছাড়া কেউ এ চুক্তি বাস্তবায়ন করবে না। কথাগুলো বলেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
বৃহস্পতিবার সকালে সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম হাজার হাজার মানুষ তাদের স্বজন হারিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও মা, বাবা, ভাই হারিয়েছেন। এ হারানোর উপলব্ধী থেকে তিনি পার্বত্য বাসীর দুঃখ বুঝেন প্রধানমন্ত্রী। এ উপলব্ধী থেকে তিনি পার্বত্য চুক্তি সম্পাদন করেছেন।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের হেডম্যান কার্বারীরা এ এলাকার প্রাণ। তাদের দেশের বর্তমান ও আধুনিক বিশ্বের খবরা খবর রাখতে হবে। তাকে বিভিন্ন জ্ঞান রাখতে হবে। কারণ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সে সনাতনী চিন্তা নিয়ে থাকলে হবে না। এখন মানুষ অনেক শিক্ষিত হচ্ছে। এদেরকে নেতৃত্ব দিতে হলে হেডম্যান কার্বারীদের আরো দক্ষ হতে হবে।
কিন্তু হেডম্যান কার্বারীরা সে বিবেচনায় তেমন দক্ষ নয়। তাদের মধ্যে একে অপরের সমন্বয় নেই। বেতন ভাতা বৃদ্ধির আশায় সরকারের উপর চেয়ে থাকলে হবে না। নিজের কাজ নিজেকে করতে হবে। নিজের এলাকা সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। নিজের এলাকার জনসংখ্যা কত, শিক্ষিত কতজন এসব বিস্তারিত তথ্য রাখতে হবে হেডম্যান কার্বারীদের।
বীর বাহাদুর আরো বলেন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন গুম করে কখনোই শান্তি ফিরে আসবে না। শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে আলোচনার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের শান্তি ফিরিয়ে আনতে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। এর পরও পার্বত্য অঞ্চলে সংঘাত, খুন, গুম, চাঁদাবাজি কখনোই মেনে নেয়া যায় না।
সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার রাজা দেবাশীষ রায়। উদ্বোধকে বক্তব্যে তিনি বলেন যুগ যুগ ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের হেডম্যান কার্বারীরা ভূমি ব্যবস্থাপনা, সমাজের বিচার আচারসহ রাষ্ট্রের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু তাদের মূল্যায়ন কম। তাদের দফতর চালানোর খরচ নেই। নিজের পকেটের টাকা খরচ করে হেডম্যান কার্বারীরা দফতর চালাচ্ছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের হেডম্যানরা ব্যাক্তি নয়। এরা এক এক জন একটি প্রতিষ্ঠান। যে প্রতিষ্ঠানগেুলো রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন।
সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সভাপতি কংজরী চৌধুরীর সভাপতিত্বে হেডম্যান সম্মেলনে বক্তব্য রাখেনর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, বান্দরবান জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিংইয়ং ম্রো, খাগড়াছড়ি মং সার্কেল চীফ সাচিং প্রু চৌধুরী, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, হেডম্যান চিংকিউ রোয়াজা, শান্তি বিজয় চাকমা, জয়া ত্রিপুরা, এএলআরডি উপ নির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি। সম্মেলনে তিন পার্বত্য জেলার ৩৫০ জন হেডম্যান কার্বারী অংশ গ্রহণ করেন।