খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন ও জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে দক্ষিণ এশিয়া নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ (সাফ) জয়ী খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার চার বীর কন্যাদের সাথে স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের মিট দ্যা প্রাইড অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১৭অক্টোবর) সন্ধ্যায় শিশু একাডেমি’র আলো-অন্ধকারের মিলায়তনে এ মিট দ্যা প্রাইড অনুষ্ঠানে জেলা ক্রীড়া মহিলা সংস্থা’র সভাপতি দীপান্বিতা বিশ্বাস’র সভাপতিত্ব করেন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ডেভেলপমেন্ট কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।
এদিন বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের সহকারী কোচ তৃষ্ণা চাকমা, বাংলাদেশ ফুটবল দলের সদস্য মনিকা চাকমা, সদস্য আনাই মগিনী, সদস্য আনুচিং মগিনী সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তাদের জীবনের গল্প সম্পর্কে উপস্থিত বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শেয়ার করেন। এই সফলতার পেছনে তাদের শত বাধা বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা সহ নানান বিষয়ে হল ভর্তি শিক্ষার্থীদের মাঝে শেয়ার করেন তারা।
তারা ২‘শ ৫০জন ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতিতে বলেন, আমাদের সমাজে এবং মৌলবাদী সমাজে মেয়ে -শিশু-কিশোরীদের ফুটবল খেলায় নানান ঝামেলা পাকায়। তারা প্রশ্ন ছুঁড়েন.. মেয়েরা কেন শর্টস পরবে? কেন বাড়ির বাইরে যেয়ে ফুটবল নিয়ে দৌঁড়াবে ? আরও নানান ধরনের বাধা! তারপরেও আমরা থেমে যায়নি। আমরা লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি,কারও বাজে কথায় কান না দিয়ে নিজেদের লক্ষ্য পূরণ ও বাংলাদেশের পতাকাকে সারা বিশ্বে পরিচিত করার জন্য লড়েই যাচ্ছি। আমরা সাফল্য পেয়েছি,ভবিষ্যতে আরও বড় বড় রেজাল্ট যেন নিয়ে আসতে পারি,তারা সে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এছাড়াও চার বীর কন্যারা তারা এই “Meet the Pride” শিরোনামের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে পরের প্রজন্মের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সহায়তা করেন তারা।এর উদ্দ্যেশ্যই ছিল নতুন প্রজন্ম বা ছোটদের সামনে নারীর আপন ভাগ্য জয় করবার ইতিহাস তুলে ধরার প্রচেষ্টা। ভবিষ্যতে যারা আনাই-আনুচিং ও মনিকাদের জায়গা নেবে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করা।
এ মিট দ্যা প্রাইড(Meet the Pride) শিরোনাম অনুষ্ঠানের পরপরেই স্কুলের ছেলে- মেয়েরা সাফ জয়ী নারী ফুটবলারদের অটোগ্রাফ নেয়ার জন্য ভিড় জমান ও হুমড়ি খেয়ে পরেন। কার আগে কে অটোগ্রাফ নিতে পারেন,যেন এই প্রতিযোগিতায় চলছিল।কেউ কেউ ফুটবলারদের কাছে প্রশ্ন করছে, সাফল্যের রহস্য, ফুটবলারদের শুরুর দিকের সামাজিক চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা জয়ের ইতিহাস জানতে চাওয়া। ছোট ছোট বাচ্চাদের ঠেলাঠেলি করে সেলফি তোলার হিড়িক-যেন উপস্থিত অতিথিদের মাঝে বাড়তি আনন্দ দিয়েছে।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা পুলিশ সুপার মোঃ নাইমুল হক পিপিএম প্রমুখ। এছাড়াও জেলাপ্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের
কর্মকর্তা,শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক,প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।