রাঙামাটির রাজবন বিহারে ৪৯ তম কঠিন চীবর দান শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বিকালে চড়কায় সুতা কেটে বেইন বুনন কাজের উদ্বোধন করেন চাকমা রাণী য়েন য়েন। এর আগে বেইন কর্মী ও পূণ্যার্থীরা পঞ্চশীল গ্রহণ ও সূত্র শ্রবন করেন। পূণ্যার্থীদের পক্ষে পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়। পঞ্চশীল প্রদান করেন রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাথের। এ সময় জৈষ্ঠ ভিক্ষু ইন্দ্রগুপ্ত মহাথেরসহ ভিক্ষু সংঘ উপস্থিত ছিলেন।
শীল গ্রহণ পর্ব শেষে চড়কায় সুতা কেটে ২৪ ঘন্টার বেইন বুনন কাজের উদ্বোধন করেন চাকমা রাণী য়েন য়েন। এ সময় হাজারো মানুষের সাধুবাদে মুখিরত হয় রাজবন বিহারের আশপাশ। এ সময় চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। কোমর তাতের মাধ্যমে তৈরি চীবর আজ শুক্রবার বিকালে রাজবন বিহারের ভিক্ষুদের উদ্দেশ্যে দান করা হবে। এদিকে এ ধর্মানুষ্ঠানকে ঘিরে অনুষ্ঠান দেখতে রাজবন বিহারে দেশ বিদেশের অনেক পূণ্যার্থীর আগমন ঘটেছে। এ বছর অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শান্তিপুর্ণভাবে এ ধর্ম অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে রাঙামাটি শহরে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদারের পদক্ষেপ নিয়েছে জেলা পুলিশ।
প্রসঙ্গত তথাগত গৌতম বুদ্ধের সময় ২৪ ঘন্টার তুলা থেকে সুতা তা থেকে কোমর তাদের মাধ্যমে চীবর তৈরি করে বুদ্ধ ও শিষ্য সংঘকে দান করেন বিশাখা নামে এক পূণ্যবতি।
১৯৭২ সালে রাঙামাটির লংগদুতে পরিনির্বাপিত বনভান্তে সর্বপ্রথম এ রীতিতে কঠিন চীবর দান প্রচলন করেন। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে এ রীতিতে চীবর দান করছেন পাহাড়ের বৌদ্ধধর্মালম্বীরা। বৌদ্ধদের বিশ্বাস কঠিন চীবর দানের কারণে সুখ শান্তি অর্জনের পাশপাশি পরবর্তী জন্মে সুখ লাভ করা যায়।
করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২ বছর এভাবে চীবর দান হয়নি পাহাড়ে। এ বছর এ রীতিতে বিশাখা নিয়মে চীবর দান উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় বন বিহার শাখা প্রধান রাজবন বিহার। এ বছর ৯৮টি বন বিহারে বিশাখা রীতিতে চীবর দান হচ্ছে। আগামী ৭ নভেম্বর মাসব্যাপী চলা কঠিন চীবর দান এ বছরের মত সমাপ্তি ঘটবে।