রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের কেপিএম ব্রিকফিল্ড মাঠ। আলোর ঝলকানিতে বর্ণিল হয়ে ওঠেছে সমগ্র মাঠ প্রাঙ্গন, স্টলে চলছে বিকিকিনি, চলছে নবীন এবং প্রবীন সংগঠক ও সংস্কৃতি কর্মীদের প্রানবন্ত আড্ডা। অনেকে পুরানো স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে হারিয়ে গেছে ৮০ দশকে। কেউ এসেছেন রাজধানী ঢাকা হতে, কেউ এসেছেন নোয়াখালী, কুমিল্লা, খুলনা হতে। প্রিয় সংগঠনের তিন যুগপুর্তিতে অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে হাজির হয়েছেনে কেপিএম ব্রিকফিল্ড মাঠে।
জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন খেলাঘর আসর এর অন্যতম শাখা সংগঠন কাপ্তাই চন্দ্রঘোনা কেপিএম চম্পাকুঁড়ি খেলাঘর আসর এর তিন যুগপুর্তিতে সংগঠনটির উদ্যোগে শুক্রবার (২৭ জানুয়ারী) কেপিএম ব্রিকফিল্ড মাঠে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো মিলনমেলা উৎসব। এদিন সকাল ১০ টায় সম্মেলক কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত ও খেলাঘর আসর এর দলীয় গান পরিবেশন এর মাধ্যমে উদ্বোধন করা হলো দিনব্যাপী অনুষ্ঠান মালার।
চন্দ্রঘোনা কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী স্বপন কুমার সরকার ও চম্পাঁকুড়ি খেলাঘর আসর এর প্রতিষ্ঠাকালীন সহ সভাপতি আব্দুল মতিন জাতীয় ও খেলাঘর পতাকা উত্তোলন এর মাধ্যমে মিলন মেলার উদ্বোধন করেন। সংগঠন এর সভাপতি শফিকুল ইসলাম মিলন এর সভাপতিত্বে সাবেক সাধারণ সম্পাদক উৎপল ভট্টাচার্য এর সঞ্চালনায় এসময় খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা আক্তার, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক এরশাদ হোসেন, উত্তর জেলা খেলাঘর আসর এর সহ সভাপতি রওশন আরা চৌধুরী সহ কেপিএম লিমিটেডের বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ এবং চম্পাঁকুড়ি খেলাঘর আসর এর সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরপর অতিথিরা তিন যুগপুর্তি উৎসব এর কেক কাটেন।
পরে কেপিএম ব্রিকফিল্ড মাঠ হতে অনুষ্ঠিত হলো বর্ণাঢ়্য শোভাযাত্রা।
“আজকের শিশু, আগামী দিনের ভবিষ্যত”, শিশুদের কান্না, আর না আর না, ” পাড়ায় পাড়ায় খেলাঘর, গড়ে তোল, গড়ে তোল ” প্রভৃতি স্লোগানে বর্নিল সাজে সজ্জিত হয়ে বাদ্যের তালে তালে শিশু, কিশোর এবং খেলাঘর এর নবীন প্রবীন সংগঠকরা আনন্দ উচ্ছাসে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। কেপিএম ব্রিকফিল্ড মাঠ হতে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি কেপিএম এর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও অনুষ্ঠানস্থলে এসে শেষ হয়।
এদিন বিকেল ৩ টায় সাংস্কৃতিক মঞ্চে চম্পাঁকুড়ি খেলাঘর আসর এর উপদেষ্টা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ঝুলন দত্তের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে আসরের বন্ধুদের কন্ঠে মিলন মেলার থিম সং, একক গান, আবৃত্তি, নৃত্য পরিবেশন উপস্থিত হাজারোও দর্শক উপভোগ করেন তুমুল করতালিতে।
এরপর শুরু হয় স্মৃতি রোমন্থন পর্ব। এতে খেলাঘর আসর এর সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের জনপ্রিয় ব্যান্ডদল নাটাই এবং সবশেষে পাঞ্জাবিওয়ালা খ্যাত শিরিন জাওয়াদ এর প্রানবন্ত পরিবেশনায় মুগ্ধতার আবেশ ছড়িয়ে যায় মিলন মেলা প্রাঙ্গন।
চম্পাঁকুড়ি খেলাঘর আসর এর সভাপতি ও মিলন মেলা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম (মিলন) জানান, আজকে সবাই শেকড়ের টানে ফিরে এসেছেন মিলন মেলায়। অন্য রকম অনুভুতি কাজ করছে আজ আমার মধ্যে।
তিন যুগপুর্তি উৎসব এর সদস্য সচিব জালাল উদ্দীন সাগর জানান, আজকে আমাদের সংগঠনের তিন যুগপুর্তিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে যারা এসেছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
চম্পাঁকুড়ি খেলাঘর আসর এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ সানাউল্ল্যাহ পাটোয়ারী, মকবুল আহমেদ ও উৎপল ভট্টাচার্য জানান, জীবনের অর্ধেক বছর বয়সে এসে দেখি চম্পাঁকুড়ির বয়স ৩৬। ধারাবাহিক কর্মকান্ডে এসে দেখি নিজের জীবনটা গোধুলির নীল আবচায় পরিপূর্ণ। শেখরের টানে ফিরে ়আসবো এই চম্পাঁকুড়িতে।