“বাস্তবায়ন করি অঙ্গীকার, জীববৈচিত্র্য হবে পুনরুদ্ধার” এ প্রতিপাদ্য নিয়ে রাঙামাটিতে আর্ন্তজাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস-২০২৩ উদ্যাপন উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আজ বিকালে বন বিভাগ রাঙামাটি অঞ্চল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙামাটি অঞ্চলের বন সংরক্ষক, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন জীববৈচিত্র্য বলতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিদ্যমান প্রাণির যে বৈচিত্র্যময় অবস্থান তাকে বুঝানো হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও জীববৈচিত্র্য বিবিধ কারণে মারাত্মক হুমকীর সম্মূখিন। তিনি জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারে বন বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অগ্রনী ভূমিকা পালনের জন্য অনুরোধ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে পৃথিবী হতে বর্তমানে বিলুপ্ত ও বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন উদ্ভিদের তথ্য তুলে ধরেন। এবং এগুলো সংরক্ষণ বা পুনরুদ্ধারে কি কি কার্যক্রম গ্রহন করা যায় তা উপস্থাপন করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজ, উপ-বন সংরক্ষক, রাঙামাটি অঞ্চল, রাঙামাটি বলেন বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও অন্যান্য কারণে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জীববৈচিত্র্য হুমকীর সম্মুখিন। জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের জন্য শুধু বন বিভাগ নয় অন্যান্য সকল শ্রেণি ও পেশার জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: রেজাউল করিম চৌধুরী পৃথিবীতে বিদ্যমান বিলুপ্ত প্রায়, সংকটাপন্ন ও মহাবিপন্ন বিভিন্ন প্রাণির বিস্তারিত তুলে ধরেণ। প্রতিটি প্রাণিই যে পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষায় অতীব প্রয়োজন তা বিস্তারিত আলোচনা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউ.এস.এফ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ. কে. এম রুহুল আমিন জানান যে, প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীতে কত সংখ্যক উদ্ভিদ ও প্রাণি বিদ্যমান তার প্রকৃত সংখ্যা নির্ণন করা অত্যন্ত জটিল। ক্ষুদ্র অণুজীব হতে বৃহদাকার হাতি পর্যন্ত প্রতিটি প্রাণিই পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষার বা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য অত্যাধিক প্রয়োজন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ছালেহ মো: শোয়াইব খাঁন, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ, রাঙামাটি জানান আদিকালে আমাদের গ্রামে বা জঙ্গলে বিভিন্ন আদি প্রজাতির গাছ-পালা ছিল। বর্তমানের শুধু সেগুন, আকাশমনি, ইউক্যালিপটাস ইত্যাদি প্রজাতির গাছ রোপণের ফলে আদি প্রজাতির গোদা, গুটগুটিয়া, সিভিট, বাশপাতা ইত্যাদি গাছগুলো হারিয়ে যাচ্ছে এবং পশু-পাখি তাদের আবাসস্থল হারাচ্ছে। বন বিভাগকে তা পুনুরুদ্ধারের জন্য তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য অনুরোধ জানান।
আলোচনা সভা শেষে বন সংরক্ষক অফিস ক্যাম্পাসে অতিথিবৃন্দ সুনালু, চাম্পাফুলসহ বিবিধ প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে বন বিভাগ, রাঙামাটি অঞ্চলের মাঠ পর্যায়ের রেঞ্জ কর্মকর্তা, ফরেস্টার, ফরেস্ট গার্ডসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।