রবিবার , ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

ঢাকায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশ

প্রতিবেদক
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩ ৪:৪৮ অপরাহ্ণ

মহান জাতীয় শিক্ষা দিবস ‘২৩ উপলক্ষে ঢাকায় ছাত্র সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)। আজ রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩) সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত ধর্ষণ, যৌণ নিপীড়ন এবং ধর্ষকদের রক্ষার করতে দালালদের দোরাত্ম্য শায়েস্তা করার প্রতীকি হিসেবে ধর্ষক ও দালালদের কুশপুত্তলিকা দাহক্রিয়া করা হয়। ছাত্র সমাবেশ থেকে বক্তারা পাহাড়ে সহপাঠী শিক্ষার্থী বোনদের সম্ভ্রম, নিরাপত্তা ও মান-সম্মত শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশের পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্যে রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতি চাকমা। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি জিকো ত্রিপুরা ও  বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সোহেল প্রমুখ।
সভাপতি অঙ্কন চাকমা বলেন, সারা দেশে ৪৫টির অধিক জাতিসত্তার বসবাস থাকলেও স্বাধীনতার ৫২বছরেও সরকার সকল জাতিসত্তার মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। বাঙালি ভিন্ন জনগোষ্ঠীর সাথে বর্ণবাদী আচরণ ও বৈষম্য করা হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং শহরে পাহড়ি শিক্ষার্থীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারি চাকুরিতে ন্যায্য কোটা ব্যবস্থা বাতিল করা  হয়েছে এবং মেডিকেলসহ দেশের বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রীতি মেনে পাহাড়ি শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে না। এভাবে বঞ্চিত রেখে অন্যান্য সমান রাষ্ট্রীয় সুযোগ না দিয়ে একটা দেশ এগিয়ে যেতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা ব্যবস্থায় আজ ভয়াবহ সংকট চলছে। প্রাথমিকে ও মাধ্যমিকে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের হার সমতলের চেয়ে অনেক বেশি। পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে ৫টি ভাষায় মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের সুযোগ প্রদান করা হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকের সংকট রয়েছে, দুর্গম এলাকা থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা নেই। একই সাথে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য ও যৌক্তিক আন্দোলন দমাতে পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেনা-গোয়েন্দা নজরদারি রাখা হয়েছে।
তিনি মান-সম্মত শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত, সহপাঠী ছাত্রী শিক্ষার্থীদের সম্ভ্রব রক্ষার্থে ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের আহ্বান জানান।
সমাবেশে নারী নেত্রী নীতি চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে আজ নারীদের কোথাও নিরাপত্তা নেই। রাঙামাটির লংগদুতে শিক্ষক আব্দুর রহিম নিজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন। কিন্তু চাতুর্য্যরে সাথে আইনের ফাঁকফোকরে হাইকোর্টে জামিন নিয়ে পুনরায় স্কুলে যোগদান করেছেন। গত ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ কাপ্তাইয়ে সেনা সদস্য কর্তৃক পাহাড়ি স্কুল ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা ধামাচাপা দিতে ধর্ষকরা স্থানীয় দালালদের সাথে যোগসাজশ করছে।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ষণের রিপোর্ট প্রদানের ওপর গোপন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১১ দফা নির্দেশনা জারি করে কার্যত পার্বত্য চট্টগ্রামকে অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বিচারহীনতা এবং একের পর এক ধর্ষণের ঘটনার ক্ষোভে ছাত্র সমাজ আজ ধর্ষক-দালালদের কুশপুত্তলিকা দাহ করছে।
সমাবেশে অমল ত্রিপুরা বলেন, পাহাড়ে নতুন করে একশ্রেণী লোক সাম্প্রদায়িক জিকির তোলে পাহাড়ে শান্তি-সম্প্রতির বিনষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সম্প্রতি রাঙামাটি-কাউখালী সীমান্ত এলাকায় রাউজানে হৃদয় নামে একজনকে অপহরণের পর হত্যার এক বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে পাহাড়ি বাঙালী দ্ব›দ্ব সংঘাত তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। কথিত হৃদয় হত্যাকারী সন্দেহে গ্রেফতারকৃত কয়েকজন মারমাকে পুলিশের হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনীতে হত্যা করা হয়েছে। এর পরের দিন পুলিশ-সেনাবাহিনী উপস্থিতিতে আরো দুই মারমা যুবককে গণপিটুনী দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কেবলমাত্র সন্দেহবশত বিচারবহির্ভূত এসব হত্যাকান্ড অনেক উদ্বেগের জন্ম দেয়।
তিনি রাউজানে ‘হৃদয় হত্যার’ ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তর মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি এবং গ্রেফতারকৃত ‘আসামী’ রক্ষায় ব্যর্থ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানান।
সমাবেশ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ধর্ষক ও দালালদের কুশপুত্তলিকার ওপর জুতা স্যান্ডেল দিয়ে লাঠিপেঠা করে ঘৃণা, ক্ষোভ প্রকাশ ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। সমাবেশের আগে এক মিছিল করা হয়। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনার, টিএসসি, ঢাবি গ্রন্থাগার, অপরাজেয় বাংলা, ডাকসু প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্য গিয়ে এক সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

%d bloggers like this: