রাঙামাটিতে থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আকাশ রয়েছে মেঘাচ্ছন্ন। বৃষ্টির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে প্রশাসন।যে কোনো সময় ভারি বৃষ্টিপাত হলে পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে। তাই ঝুঁকিতে বসবাস করা লোকজনকে মাইকিং করে নিরাপদ স্থানে বা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দেশের আকাশে প্রবেশ করছে বৃষ্টি বলয় রিমঝিম। যার প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে। বৃষ্টি বলয়টি বাংলাদেশে থাকবে ২৯ জুন থেকে ৭জুলাই পর্যন্ত। এই সময় চট্টগ্রামসহ দেশের বেশকিছু বিভাগে সর্বাধিক বৃষ্টি হতে পারে। যার কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় ধসের সর্তকতা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার সকাল থেকে রাঙামাটিতে থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যহত রয়েছে। রাঙামাটি আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ঘন্টায় ১৮দশমিক ৬মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
রাঙামাটিতে পাহাড়ের পাদদেশে কি পরিমাণ মানুষ ঝুঁকিতে বসবাস করছে তার সঠিক তথ্য না থাকলেও অতীতের জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুসারে জেলায় পাঁচ হাজার পরিবারের ২০ হাজার মানুষ ঝুঁকিতে বসবাস করছে। জেলা শহরে পাহাড় ধসের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে ৩১টি পয়েন্ট। যার মধ্যে শিমুলতলী, রূপনগর, যুব উন্নয়ন এলাকা অন্যতম। এইসব এলাকায় জনবসতি কমার পরিবর্তে প্রতিবছর নতুন নতুন জনবসতি সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ছে সরকারি নানা সুযোগ সুবিধা।
বৃষ্টি বলয় রিমঝিমের কারণে পাহাড় ধসের সতর্কতা বিষয়ে এইসব এলাকার লোকজনের সাথে কথা বললে তারা জানান, এমন বৃষ্টি প্রতিবছরই হয়। বৃষ্টি বেশি হলে আশ্রয়কেন্দ্রে যাবেন তারা। শিমুলতলীর বাসিন্দা মো. কবির হোসেন জানান, আমি বৃষ্টিবলয় রিমঝিমের কারণে পাহাড় ধসের সর্তকতার বিষয়ে জানি না। তবে এমন বৃষ্টি প্রতিবছরই হয়। বৃষ্টি বেশি হলে আমরা আশ্রয় কেন্দ্রে যাব। ঝুকিপূর্ণ এলাকার রূপনগরের বাসিন্দা রাকিব হাসান, হাসিনা বেগম ও মো. মুছা জানান, আমাদের আর জায়গা নেই। তাই এখানে বসবাস করছি ঝুঁকি জেনেও। বৃষ্টি বেশি হলে, পাহাড়ধসের আগে আমরা বুঝবো। তখন আশ্রয়কেন্দ্রে যাবো।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, বৃষ্টিবলয় রিমঝিমের প্রভাব আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। বৃষ্টি বেশি হলে আমরা মাইকিং করবো এবং ঝুঁকিতে বসবাস করা লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার চেষ্টা করবো। এছাড়াও কি পরিমাণ মানুষ পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে তার তালিকা তৈরির জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, রাঙামাটিতে ২০১৭ সালের ১৩জুন পাহাড় ধসে ৫জন সেনা সদস্যসহ ১২০জন এবং ২০১৮সালে ১১জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্তকতা অনুযায়ী এখানে পাহাড় ধস সর্ম্পকিত সচেতনতা বৃদ্ধি ও পাহাড় ধস হতে রেহায় পেতে করণীয় সম্পর্কে প্রস্তুতির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত, প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিটি গঠন ও পাহাড় ধসের আশংকা দেখা দেওয়ার সাথে সাথে লোকজনদের নিরাপদে আশ্রয় গ্রহনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।