সদ্য ঘোষিত অর্ন্তবর্তীকালীন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠনে বৈষম্য সৃষ্টির প্রতিবাদে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারক লিপি পেশ করেছে কাউখালী উপজেলা বিএনপি। রবিবার(১০ নভেম্বর) দুপুরে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে এ স্মারক লিপি দেয়া হয়। কাউখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল মোতালেব স্বাক্ষরিত এ স্মারক লিপি প্রদান করা হয়। কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আতিকুর রহমান প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে দেয়া কাউখালী উপজেলা বিএনপির স্মারক লিপির সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তা পাঠিয়ে দেয়া হবে।
স্মারক লিপিতে উল্লেখ করা হয় গত ০৭ নভেম্বর ২০২৪ খ্রিষ্ট্রাব্দ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জনাব তাছলিমা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে (নং ২৯.০০.০০০০.০০০.২১৪.১৮.০০২২.২৪.-১১৯) অর্ন্তরবর্তীকালীন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পূর্নগঠন করা হয়। রাঙ্গামাটি জেলার প্রবেশদার হিসেবে খ্যাত কাউখালী উপজেলা। অতীতে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা হিসেবে কাউখালী উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারনের গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখার পর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের অতীতের ইতিহাসে রেকর্ড ভঙ্গ করে কাউখালী উপজেলা থেকে কোন প্রতিনিধি রাখা হয়নি। অবিলম্বে ঘোষিত প্রজ্ঞাপন বাতিল করে কাউখালী থেকে প্রতিনিধি দিয়ে নতুনভাবে প্রজ্ঞাপন দেয়ার দাবী জানান অন্যথায় আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন।
অতীতে দেখা যায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে যতবারই গঠন করা হয়েছে বিভিন সম্প্রদায়ের সমন্বয়ে (রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের আইন অনুযায়ী) জেলার প্রত্যেকটি উপজেলা থেকে প্রতিনিধি নিয়ে গঠন করা হয়েছিল। কিন্ত এই প্রথম বার কাউখালী উপজেলার প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি করে স্বৈরাচারী হাসিনার দোসরদের গোপন আতাতের মাধ্যমে কিছু আওয়ামী সরকারের নেতাকর্মীদেরকে দিয়ে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পূর্ণগঠন করা হয়। যাহা রাঙ্গামাটি জেলা ব্যাপী জনগণের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্মারক লিপিতে উল্লেখ করা হয় বিগত বছর গুলোতে স্বৈরচারী হাসিনা সরকারের আমলে যেমনি বঞ্চিত ছিলাম এখনো একই ভাবে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা মনে করেছিলাম গত ৫ আগষ্ট ২০২৪ খ্রিষ্ট্রাব্দ ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর নতুন বাংলাদেশ পাবো। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সেই ফ্যাসিস সরকারের লোকজনই এখনো সর্বত্র বিদ্যমান আছে।
স্মারক লিপিতে উল্লেখ করা হয় পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নাম ঘোষনার প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর থেকে বিএনপি, জামাতের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে খুশি হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে এক প্রকার উৎসবের বন্যা বইছে। কাউখালী উপজেলা থেকে কোন প্রতিনিধি না থাকায় চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। বিএনপি নের্তৃবৃন্দ বিগত ফ্যাসিস সরকারের দলীয় যাদেরকে নিয়োগ করা হয়েছে তাদেরকে বাদ দিয়ে প্রয়োজনে নিরপেক্ষ প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে নতুন ভাবে প্রজ্ঞাপন দেয়ার দাবী জানান। যাতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের শুনাম বৃদ্ধি পায় এবং বৈষম্যহীন সুন্দর একটি বাংলাদেশ বিনির্মানে ছাত্র জনতার রক্ত বৃথা না যায়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে যাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বেশিরভাগ সদস্য জনগণের অপরিচিত এবং ফ্যাসিস সরকারের দলীয় । এমনও আছে একই পরিবারের একাধিক সদস্য (ভাবী ও দেবর) রয়েছে। । যাহা বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের সুনাম দারুন ভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। বিগত তিন মাসে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের ব্যাপক সাফল্য থাকলেও ফ্যাসিস সরকারের লোকদেরকে নিয়োগ দেয়ার ফলে তা ধুলোয় মিশে যাচ্ছে।
স্মারক লিপিতে উল্লেখ করা হয় অবিলম্বে এসব আওয়ামীলীগের দোসরদের বাদ দিয়ে নতুনভাবে সদস্য নিয়োগ করার দাবী জানিয়েছেন অন্যথায় আন্দোলনের হুশিয়ারী দিয়েছেন।