খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় বিজিডি চাল নিতে এসে অসুস্থ হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার ১নং মেরুং ইউনিয়ন পরিষদে আজ বিকাল সাড়ে ৩ ঘটিকার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিনা চাকমা‘র বিরুদ্ধে। পরিষদে চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসে ক্ষমতার দাপট দেখান চেয়ারম্যানের ছেলে এলটু চাকমা এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ইউপি সদস্যরা।
আজ বৃহঃস্পতিবার সকাল ৯ টা থেকে ৪৪০ জন বিজিডি কার্ডধারী চাল নিতে এসেছে ১ নং মেরুং ইউনিয়ন পরিষদে। সকাল থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও চাল পায়নি এ সকল কার্ডধারী ব্যক্তিরা।
এদিকে বিকেলের দিকে এক নারী অসুস্থ হয়ে পড়লে দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেকে নিয়ে আসা হয় অসুস্থ নারীকে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কত্যবরত চিকিৎসক জানিয়েছে হাসপাতালে আনার আগে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহত নারী উপজেলার মধ্য বোয়ালখালী গ্রামের বাসিন্দ ও প্রবাসী রুহুল আমিন এর স্ত্রী আকলিমা বেগম(২৫)।
অন্যদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে মেরুং ইউনিয় পরিষদের কর্মচারীদের চাল বিতরন করতে দেখা যায়। ক্ষোভ প্রকাশ করে ঝুমনা আক্তার নামে নারী জানান, সকাল ৯ টা হতে পরিষদের মাঠে বসে আছি অথচ চাল বিতরন শুরু করে সন্ধ্যার পরে। সুফিয়া বেগম নামে আরো এক নারী জানান, চাল বিতরন না করলে আমাদের বলেত পারতো তবে সারাদিন বসিয়ে রাখা হয়েছ।
মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সমিরন চাকমা জানান, চেয়ারম্যান তার ইচ্ছে মতো পরিষদের কাযর্যক্রম চালাচ্ছে। কোন ধরনের সমন্বয় করে না আমাদের সাথে। আজ চাল বিতরণের বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। তিনি আরো অভিযোগ করেন। মিনা চেয়ারম্যানের ছেলে এলটু চাকমা এখন মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা প্রয়োগ করে চেয়ারে বসে থাকে এবং আমরা যারা জনপ্রতিনিধি আছি তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন আঙ্গুল তুলে কথা বলতেও দ্বিধাবোধ করে না।
এসময় মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য জমিলা হোসাইন লাইলী জানান, যেহুতু আজ ইউনিয়ন পরিষদে একজন নারী অসুস্থ হয়ে মারা গেছনে। আগে আমরা সেই বিষয়টি নিয়ে কাজ করি। তার ছেলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে সেসব নিয়ে পরে কথা হবে। সেগুলো নিয়ে আমরা পরে বসবো এবং সমাধান করবো।
এদিকে মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিনার সাথে কথা বলতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোন করলেও মুঠোফোন সে রিসিভ করেনি। মেসেজ পাঠিয়েও রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কর্মকর্তা ডা. তনয় তালুকদার জানান, একজন অসুস্থ নারীকে হাসপাতেল আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে । প্রথমিকভাবে ধারনা করা হয়েছে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট তার মৃত্যু হয়েছে।
দীঘিনালা উপজেলা প্রশাসনের নিবার্হী কর্মকর্তা অমিত কুমার সাহা জানান, একজন নারী অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হওয়ার খবর পেয়েছি। ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে।
দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জাকারিয়া জানান, ভিজিডি চাল আনতে গিয়ে একজন নারীর মৃত্যু হয়েছে। কোন অভিযোগ না থাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে কোন হস্তক্ষেপ করা হয়নি।