নেত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ ও কেন্দ্রের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের অনুরোধে কাউন্সিলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন নিখিল কুমার চাকমা। পাহাড়ের খবরর কাছে এ কথা জানান তিনি।
নিখিল বলেন, গতকাল মঙ্গলবার (২৪ মে) কাউন্সিলের ১ম অধিবেশনের পর ২য় অধিবেশন শুরুর আগে সভাপতি ও সম্পাদক পদে প্রার্থীদর মধ্যে সমঝোতার জন্য রাঙামাটি সার্কিট হাউজে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এ সময় আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোশারফ হোসেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ন সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নিখিল বলেন, নেতৃবৃন্দের মধ্য মোশারফ ভাই আমাকে কাউন্সিলের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। এ সময় আমি তাকে বলি কাউন্সিলরদের সাথে কথা বলে বিষয়টি জানাব। এরপর মোশারফ ভাই সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও নেত্রীকে ফোন করেন।
তখন নেত্রী বলেন, নিখিলকে সরে দাঁড়াতে বলো, ওকে আমি দেখব। এরপর আমি নেত্রী ও দলের সিনিয়রদের অনুরোধে দাদাকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়াই। আমি নিজের ইচ্ছায় সরে দাঁড়াইনি। দলের বৃহত্তর ও ঐক্যের স্বার্থে আমি সরে দাঁড়িয়েছি। আমি সমর্থক ও কাউন্সিলার সাথে আলোচনা করার সুযোগ পাইনি। সে জন্য তাদের কাছে দু:খ প্রকাশ করছি।
নিখিল আরো বলেন, আমি নির্বাচনের জন্য সম্পুর্ণ প্রস্তুত ছিলাম। কেউ কেউ সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্য দিয়ে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। নিজেদের মধ্যে বিভাজন রেখা তৈরি করছে। যা কাম্য নয়। দলে প্রতিযোগিতা থাকবে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নেতৃত্ব উঠে আসবে। এখানে সমালোচনা করার কোন সুযোগ নেই। আশা করি বর্তমান নেতৃত্ব সবাইকে সাথে নিয়ে দলকে সুসংগঠিত করবে। দল আরো শক্তিশালী হবে। একই সাথে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
এদিকে নিখিল সেরে গিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সভাপতি হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে স্টাটাস দিয়েছেন দীপংকর তালুকদার। সেখানে তিনি লিখেন
আমাকে পুনরায় রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করায় অশেষ কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই প্রাণপ্রিয় নেত্রী, সমগ্র বাঙালি জাতির আশা–আকাঙ্ক্ষার শেষ ঠিকানা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী #শেখ_হাসিনা‘র প্রতি। আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব আমি আমার জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে পালন করে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাবো। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ–এর সকল নেতা–কর্মী সহ আমার সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে দোয়া চাই– আমি যেন সঠিকভাবে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয়তু শেখ হাসিনা।
গত ২৪ মে মঙ্গলবার ছিল রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল। কাউন্সিলে সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিলো সভাপতি পদটি। ১৯৯৬ সন থেকে টানা ২৬ বছর ধরে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন দীপংকর তালুকদার। এত বছরে নানা কারণে সভাপতি পদে কেউ প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেনি। কিন্তু এবারের কাউন্সিলে দীপংকর তালুকদারের বিপক্ষে প্রার্থী হয়েছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা। কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন উপজেলা সফর করেন এবং কাউন্সিলারদের সাথে মতবিনিময় করে কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতিও নেন। তখনও পর্যন্ত তাকে দলের সভাপতির পদ থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্য কেউ অনুরোধ করেনি।