খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে একজন ইউপিডিএফ সমর্থক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো একজন। নিহতের নাম উত্তম ত্রিপুরা (২৫)। আহত হয়েছে চিগন চিজি চাকমা (২৪) নামে আরেক ইউপিডিএফ কমী।
সোমবার ভোর ৫ টার দিকে মাটিরাঙা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের হেডম্যান পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত উত্তম ত্রিপুরা পার্শ্ববর্তী হেডম্যান পাড়ার সুনিল ত্রিপুরার ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার ভোর ৫ টার দিকে ৭/৮ জনের একটি স্বশস্ত্র দল হেডম্যান পাড়ায় সুনীল ত্রিপুরার বাড়িতে ঘেরাও করে বাড়িতে লক্ষ্য করে এলাপাথারি গুলি ছুড়ে। এতে গুলি বিদ্ধ হয়ে সুনীল ত্রিপুরার ছেলে উত্তম ত্রিপুরা ঘটনাস্থলে নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় চিগন চিজি চাকমা নামে এক ইউপিডিএফ সদস্য। আহত চিগন চিজি খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়নে ধুধুকছড়া গ্রামে তুঙ্যা চাকমার ছেলে। সাংগঠনিক কাজ করতে চিগন চিজিকে তাইন্দংয়ে পোস্টিং দেয় ইউপিডিএফ।
জামিনি পাড়ার বিজিবি জোন কমান্ডার এবিএম জাহিদুল করিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটি একে ২২ রাইফেল উদ্ধার করা হয়। লাশ ও উদ্ধারকৃত সরঞ্জাম পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনার জন্য ইউপিডিএফ মুল দল নতুন সৃষ্ট ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলকে দায়ী করেছে। নিরণ চাকমার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপিতে ইউপিডিএফ অভিযোগ করে সোমবার ভোর ৫টার দিকে দুর্জয় চাকমার নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের ৬ জনের একটি দল মাটিরাঙা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের ৫ নংওয়ার্ডের হেডম্যান পাড়ায় সুনীল ত্রিপুরার বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য সুকুমার ত্রিপুরা জানান, ভোর ৫টা থেকে ইউপিডিএফ (প্রসীত) ও ইউপিডিএফ (গনতান্ত্রিক) এর মধ্যে প্রায় আধা ঘন্টা গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এঘটনায় ইউপিডিএফ কর্মী উত্তম কুমার ত্রিপুরা ঘটনাস্থলে নিহত হয়।
মাটিরাঙার তবলছড়ি পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মো. মনির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে জানান, ঘটনা অবগত হয়ে দ্রুত সে স্থানে পুলিশ উপস্থিত হয়ে একটি লাশ উদ্ধার করে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।
বিবৃতিতে ইউপিডিএফ সংগঠক অংগ্য মারমা সরকার ও নিরাপত্তাবাহিনীর কড়া সমালোচনা করে বলেন, সরকারও নিরাপত্তাবাহিনী ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে আস্ফালন ও ‘অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের’ জন্য সেনা অভিযানের কথা বললেও বাস্তবে তারাই সন্ত্রাসীদের লালন পালন করছে এবং তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে পাহাড়ে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। অপরদিকে তারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সংগ্রামরত ইউপিডিএফের নেতাকর্মীদের উপর অবর্ণনীয় দমন পীড়ন অব্যাহত রেখেছে।