কার্যাদেশের ৩ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি প্রতিরক্ষা দেওয়াল। বর্ষার মধ্যেই খাড়া পাহাড়ের মাটি কেটে ব্যাজ ঢালাইয়ের নালা করলেও দেওয়ালটি নির্মাণ না করে কাজটি ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) রাঙামাটি সার ভবনসহ আশেপাশে লোকজন বর্তমানে মারাত্মক ঝুঁকিতে। যে কোনো মুহূর্তে পাহাড়টির মাটি ধ্বসে মারাত্মক দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। সরেজমিন গিয়ে এ তথ্যচিত্র জানা গেছে।
জানা যায়, গত প্রায় তিন বছর আগে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ভবনের পেছনে নীচের এলাকায় অবস্থিত বিএডিসির রাঙামাটি সার ভবন। ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের সময় ধ্বসে যাওয়ায় ভবনটিসহ আশেপাশে বসবাসকারী পরিবারগুলোর মধ্যে ঝুঁকি তৈরি হয়। ঝুঁকি এড়াতে সার ভবনটি রক্ষায় সেখানে একটি প্রতিরক্ষা দেওয়াল নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় বিএডিসি। তদবিরে কাজটি পেয়েছেন রাঙামাটির আরশাদুল হক, যিনি অধিক পরিচিত হক সাহেব নামে। কিন্তু সেই থেকে কাজটি না করে ফেলে রাখা হয়েছে। শুধু উপর থেকে নীচে পাহাড়টি কেটে নালঅর গর্ত করে রাখা হয়েছে। তাও করা হয়েছে এবারের সদ্য বর্ষার মধ্যে। এতে তৈরি হয় আরও মারাত্মক আকারের ঝুঁকি। পাহাড়টির মাটি ধ্বসে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কায় আশেপাশের মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. নিজাম বলেন, আমরা কাজটি দ্রুত করতে বলে আসছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার নানা গড়িমসি করছেন। জায়গার সীমানা নিয়ে আমাদের সঙ্গে যে জটিলতা ছিল তা নিরসনে প্রয়োজনে আমাদের থেকে জমি অধিগ্রহণেরও প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তাও অগ্রাহ্য করা হয়। শেষে তাদের (বিএডিসি রাঙামাটি সার ভবন কর্তৃপক্ষ) সীমানার খাড়া পাহাড় কেটে ফেলা হয়েছে। তাও আবার বর্ষার মধ্যেই। অথচ এটুকুর মধ্যে আবার কাজ ফেলে রাখা হয়েছে। এতে ঝুঁকি আরও মারাত্মক হয়ে উঠেছে। যে কোনো মুহূর্তে সার ভবনটি ধ্বসে আমাদের বাড়িঘরের উপর পড়তে পারে। ফলে আমরা প্রায় ৪০/৫০ পরিবার মানুষ মারাত্মক দুর্ঘটনার শঙ্কায় রয়েছি। পাহাড়ের মাটি কাটার কারণে যে কোনো মুহূর্তে ধ্বসে পড়তে পারে। এছাড়া কাজ নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগও উঠছে।
এ ব্যাপারে ফোনে যোগাযোগ করা হলে বিএডিসির রাঙামাটি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহেদ বলেন, কার্যাদেশ ঢাকা থেকে দেওয়া হয়েছে। এটির তত্ত্বাবধানের মূল দায়িত্ব সার গুদামসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ, পুনর্বাসন, নতুন গুদাম নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের। আমার কাজ হচ্ছে তদারকি। এলাকার লোকজনের সঙ্গে জায়গার সীমানা নিয়ে জটিলতা থাকায় কাজটি নির্দিষ্ট সময়ে করা যায়নি। দীর্ঘদিন পর জটিলতা নিরসন হয়ে গেলেও পরে বর্ষার মধ্যে কাজ বন্ধ রাখতে হয়। ফলে কাজের বিলম্ব ঘটছে। বর্তমানে কাজ শুরু করা হয়েছে। কাজের মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে, তাই দ্রুত কাজ শেষ করা হবে। এতে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই।
ঢাকায় ফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রকল্প পরিচালক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, এটি তার প্রকল্পে নয়।