রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে।
আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিশাল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় অস্থায়ী কার্যলয় চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়। উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব উজ্বল কান্তি তঞ্চঙ্গ্যার সঞ্চালনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল রাজস্থলী উপজেলা শাখার বিএনপির সভাপতি মাষ্টার খলিলুর রহমান শেখ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি দীপেন তালুকদার দীপু।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাকিল, যুগ্ন সম্পাদক জেলা বিএনপি দেবোজ্যােতি চাকমা, জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরনবী,জেলা কৃষকদলের সভাপতি আলোপ্রিয় বড়ুয়া,সহপ্রচার সম্পাদক শাহিন আলম, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞো মারমা, রাজস্থলী বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল হাসেম মেম্বার, সাংগঠনিক সম্পাদক বাবলু মিয়া, জেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক জাহেদুল আলম, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থোয়াইসুইখই মারমা, সহ সভাপতি ছগির আহম্মদ ,সহ সভাপতি মুইথুইঅং মারমা, সহ সভাপতি সিদ্দিক মোল্লা, সিনিয়র যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মিলন, রফিক আহম্মদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক চথোয়াপ্রু মারমা, জেলা বিএনপির সদস্য মিসাচিং মারমা, যুবদলের আহবায়ক শামীম আহম্মদ রুভেল, ছাত্রদলের আহবায়ক নাঈমুল ইসলাম রনি, সাধারণ সম্পাদক সাজন তঞ্চঙ্গ্যা, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আজিজুর রহমান রুবেল, গাইন্দ্যা বিএনপির সভাপতি নুরুল আলম,ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ভূবন মহন তঞ্চঙ্গ্যা, মহিলা দলের সভানেত্রী প্রেমা তালুকদার, শিল্পি তঞ্চঙ্গ্যা, আলপনা তঞ্চঙ্গ্যা, শিল্পি বেগম, কৃষক দলের আহবায়ক বিষু সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুমন খান, স্বেচ্ছা সেবক দলের আহবায়ক মিনহাজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিএনপি নেতৃবৃন্দরা বলেন, জাতীয়তাবাদী আদর্শের সাথে জনগণকে একত্রিত করার লক্ষ্যে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। আজকের দিনটি বাংলাদেশী মানুষদের জন্য আনন্দ, উদ্দীপনা ও প্রেরণার। দলটি বাংলাদেশী ভূখন্ডের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা এবং শক্তিশালী সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার নীতিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য একদলীয় বাকশালী ব্যবস্থা কায়েম করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতাত্তোর আওয়ামী দুঃশাসনে বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা ও রাজনৈতিক হত্যাকান্ড সাধারণ বিষয় হয়ে উঠে। যার অনিবার্য পরিণতি হয় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। আর এই দুর্ভিক্ষে ১০ লক্ষ মানুষ মারা যায়। তৎকালীন আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী বাকশাল কায়েম করে স্বৈরশাসনকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করে। শহীদ জিয়াউর রহমান ক্ষমতাসীন হয়ে পুনরায় বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করে জনগণের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। শহীদ জিয়ার সৃষ্টি বিএনপি বিগত ৪৭ বছরে কয়েকবার সুষ্ঠুু নির্বাচনে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়ে দেশ ও জনগণের সমৃদ্ধি ও কল্যাণে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে।
বিএনপি নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, নানামুখী সুদুরপ্রসারী চক্রান্তের মধ্যেও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় চিরউন্নতশির বিএনপি অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। নির্বাসিত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে নির্দ্বিধায় জীবন উৎসর্গ করেছে অসংখ্য নেতাকর্মী। ৮০’র দশকে ৯ বছরের সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির রাজপথে আপোষহীন ভূমিকা ইতিহাসের একটি উজ্জ্বল অধ্যায়। তাঁর সেই অগ্রণী ভূমিকার জন্য গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার লক্ষ্যে বিএনপি ১৯৯১ সালে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনকালে সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘ দেড় যুগ পর অনুকূল পরিবেশে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে বিএনপি। গত বছরের ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রাণ ফিরে পায় দলটি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপেন তালুকদার দীপু বলেন, সরকারের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই নির্বাচন যাতে কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ দিনে আমাদের শপথ নিতে হবে। দেশে আর কোনো অবস্থাতেই স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠিত হতে দেওয়া যাবে না। তিনি আরও বলেন, বিএনপি জয়ী হলে দেশে একটি জাতীয় সরকার গঠন করা হবে, যেখানে সব দলের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আগামী নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।