বুধবার , ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

সাজেকের জুমভূমিতে ইঁদুরের উৎপাত: সময় থাকতে ব্যবস্থা নেয়া হোক

প্রতিবেদক
প্রদীপ চৌধুরী, পাহাড়ের সংবাদকর্মী
সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫ ৯:০৫ অপরাহ্ণ

জুমভূমি-জুমচাষ-জুমজীবন-জুমকৃষি নিয়ে আগ্রহী এবং অনাগ্রহী মানুষেদের মধ্যে নানা ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে আছে। ‘জুমচাষ’- কে পৃথিবীর নানা দেশে নানা নামেও অভিহিত করা হয়। আমাদের দেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা অনেক দিনের মেধা আর শ্রমের বদৌলতে ‘শিফটিং কালটিভেশন’ টাইপের এই চাষপদ্ধতিকে গবেষণার টেবিল থেকে মাঠেও নিয়ে গেছেন। স্থায়িত্বশীল জীবন ও জীবিকার স্বার্থে জুমের সাথে জুড়েছেন আরো কিছু সৃষ্টিশীলতা। তবে কেনো জানি, পাহাড়ের জুমিয়া জীবনের দু:খ খুব বেশি ঘুচেনি। হয়তো এটি জুমিয়াদের ব্যর্থতা অথবা গবেষণার অগভীরতা।

পার্বত্য চট্টগ্রামে জুমচাষী বলতেই মুখস্থ ধরে নিতে পারবেন; ওরা প্রান্তিক- অতিদরিদ্র- প্রায় সবকটি মৌলিক অধিকারবঞ্চিত- দুর্গম অঞ্চলের বাসিন্দা। আবার পাহাড়ের কোন কোন এলাকায় মূল সড়কের পাশেও জুমভূমি/ জুমক্ষেত দেখতে পাবেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব জুমভূমির মালিক জুম জমিদাররাই। বংশ পরম্পরায় ভূমিহারা হতে হতে ওরা (জুমিয়া) সম্পদহারা হয়েছে। অঅর ‘জুম জমিদা’ে-এর লোভের কাছে হার মেনে হয়ে উঠেছে বর্গাচাষী- দিনমজুর- শ্রমিক বা সর্বহারা। পাহাড়ে জুম নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে বেছে নেয়া হয় এইসব ‘জুম জমিদার’- দেরকেই এবং পরীক্ষামূলক প্রকল্পও জুটে তাঁদের ভূমিতেই। ফলে জুমিয়াদের জীবন আর জীবিকাই শুধু পিছিয়ে পড়ে না, পিছিয়ে পড়ে তাঁদের বসতির ঠিকানাও।

আজকের ‘সাজেক ভ্যালী’র প্রত্যন্ত জনপদে যেসব চাকমা এবং ত্রিপুরা জনগোষ্ঠির মানুষ বেঁচে থাকা আর কোনরকমে আধপেটে খেয়েপুরে টিকে থাকার জন্য বংশ পরম্পরায় লড়াই করছেন; কয়েক দশক আগেও তাঁরা বসত করতেন অপেক্ষাকৃত সুগম এলাকায়, তূলনামূলক স্বাচ্ছন্দ্যে। বিগত ২০০৭ সালে সাজেক এলাকার নানা জনপদে যখন ‘বাঁশফুল’, ‘বাঁশফল’ ‘ইঁদুরবন্যা’ এবং চরম খাদ্য সঙ্কটের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিলো, তখন পেশা এবং মানবিক দায়বোধের জায়গা থেকে একটি বহুমাত্রিক উন্নয়ন অভিযাত্রী দলের সাথে অনেকগুলো বিপন্ন জনপদে ঘোরার অভিজ্ঞতা হয়েছে। কখনো পানিপথে, কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো পাহাড় বেয়ে চলার সেই শক্তি এবং সময় ফিরে পেলে ভালো লাগতো। তারপর থেকে নানা কাজে- প্রয়োজনে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভ্রমণসংঘ দিতে সাজেক অঞ্চলে অসংখ্যবার যাওয়া হয়েছে। সেখানকার চাকমা- ত্রিপুরা- লুসাই এবং পাংখোদের সাথে গড়ে উঠেছে নানামাত্রিক অর্ন্তসূত্র।

চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাজেক এলাকার দূরবর্তী জনপদে জুমক্ষেত-এ ইঁদুরের উৎপাত বৃদ্ধি, জুমের ফসল খেয়ে ফেলার মতো উদ্বেগজনক খবর চোখে পড়তে থাকে। পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়ে দৈনিক ‘সমকাল’র মতো বহুল জনপ্রিয় পত্রিকায় প্রতিবেদন করেছেন, সাংবাদিক সত্রং চাকমা। সে খবরে রাঙামাটির সুযোগ্য জেলা প্রশাসক তাঁর সরকারি অবস্থানও পরিষ্কার করেছেন।

অতীতেও আমরা দেখেছি, পাহাড়ের প্রত্যন্ত জনপদের খবর বা প্রকৃত অবস্থা, যথাযথ সময়ে যথাযথভাবে তুলে আনা সম্ভব হয় না। শুধু অবকাঠামোগত যোগাযোগের দিক থেকে নয়, মোবাইল নেটওয়ার্ক বা প্রযুক্তিগত যোগাযোগের শূন্যতা, কথা বলা না বলার শূন্যতা এবং কখনো কখনো তথ্য না ছড়ানোর বহুপাক্ষিক আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণেও পাহাড়ের অনেক খবর গুমড়ে কাঁদে।

আজ (বুধবার) বিকেলে বাঘাইছড়ির অনুজ সহকর্মী ওমর ফারুখ সুমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাজেকে ইঁদুরের উপদ্রুব এবং জুমের ফসল খেয়ে ফেলার বেশ কয়েকটি সতেজ ছবিসহ একটি পোস্ট দিয়েছে। সুমন লিখেছেন, ‘ভালো নেই পাহাড়ের জুমচাষিরা, শতশত ইঁদুর জুমের ফসল খেয়ে শেষ করে দিচ্ছে চোখের পলকে। ঘরে খাদ্য নেই, মুখে অন্ন নেই, শিশুরা কাঁদে, মায়েরা বোবা চোখে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে। সাজেকের দূর্গম পাহাড়ে দেখা দিয়েছে ইঁদুরের উপদ্রুব, স্থানীয়দের ভাষায় যাকে বলে ‘ইঁদুর বন্যা’।
সুমন তাঁর অভিজ্ঞতার চিন্তন থেকে আরো লিখেছেন, এই ইঁদুর বন্যা শুধু ফসল খায় না, সে খেয়ে ফেলে মানুষদের আশা, আস্থা, আর আত্মবিশ্বাস। জুম চাষিরা হতাশ হয়ে পড়েছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যে জুম চাষে গড়ে তুলেছিল আত্মপরিচয়, সেটাই আজ অনিশ্চয়তার এক অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত সরকারি সহায়তা না পেলে পাহাড়ে নিরব দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

সুমনের দেয়া তথ্যমতে, ইতোমধ্যে সাজেকের সিয়ালদাইলুই পাড়ায় ৬৩ পরিবার, কাইচ্যা পাড়ায় ৪০ পরিবার, জাম পাড়ায় ১০ পরিবার, ৯ নং ত্রিপুরা পাড়ায় ২৮ পরিবার, ৯ নং নতুন পাড়ায় ১৯ পরিবার এবং জৌপুই পাড়ায় ০৭ পরিবার ইঁদুরের উৎপাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এরিমধ্যে সাংবাদিক ওমর ফারুখ সুমনের তথ্য উঠানামাও করতে পারে। কিন্তু সাজেকে প্রাকৃতিক বৈরিতার কারণে একটি মানবিক কষ্টের বেদনা যে উঁকি দিচ্ছে তাতে কোনই সন্দেহ নেই।

‘ইঁদুর বন্যা’র বিষয়ে সহজে ধারণা নেয়ার জন্য ‘গুগল’-এ সার্চ দেয়া যেতে পারে। মাত্র ১’শ ৬৯ শব্দে ‘ইঁদুর বন্যা’র উৎস, কুফল, কারণ এবং বিবিধ বিষয়ে আমরা জানতে পারি।
পার্বত্য চট্টগ্রামের সাজেক ছাড়াও বান্দরবানে রুমা, থানচি এবং লামার প্রত্যন্ত জনপদে ‘ইঁদুর বন্যা’র বিবর্ণ গল্প আমাদের জানা আছে। এবং ভবিষ্যতেও এটি ঘটতে থাকবে। এই চলমান-ঘটমান সঙ্কট উত্তরণের একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাই শুধু এই করুণ অবস্থা থেকে হাজার হাজার অতিদরিদ্র মানুষকে বাঁচাতে পারে। সাময়িক মায়াকান্না, রিলিফ- রেশন-ত্রাণ’ দেয়ার চেয়ে তাঁদের জীবনমান উন্নয়নের টেকসই রুপরেখা খুঁজে বের করায় উত্তম।

আমরা গণমাধ্যমকর্মীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যে কোন ঘটনার বর্ণনা এবং এর আগের-পিছের বিধৃত ব্যাখ্যা দিয়ে যেতে পারি। স্বল্প শিক্ষার দৌড়ে নানা প্রসঙ্গ-অনুষঙ্গ সামনে তুলে ধরতে পারি। যাতে সংশ্লিষ্ট ভাবনাকারি, চিন্তক, গবেষক এবং সরকার- বেসরকারি নীতি নির্ধারকদের কানে কিছু একটা পৌঁছায়।

তাই অনুরোধ, ‘সাজেক’ কারো কাছে পর্যটন। কারো কাছে রোমাঞ্চ, কারো কাছে ব্যবসার, কারো কাছে রুটি-রুজির অবলম্বন। কিন্তু সবুজ- সুউচ্চ এই অরণ্যের আড়ালে নিভৃতপ্রায় জুম জীবনের কষ্টগুলো নিয়ে একটু ভাবুন। যে ফসল কেনার সময় বহু দরদাম করেন, নানা রঙের- বর্ণের ফল-ফসল- শাক আর সবজি কেনেন; সেসব ফলাণোর পেছনের শ্রম আর ঘামের কথা ভেবে; তাঁদের পাশেও দাঁড়ান। ইতিমধ্যে যাঁরা দাঁড়িয়ে গেছেন, তাঁদের কৃতজ্ঞতা। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মহোদয় আন্তরিকভাবেই জনসমক্ষে বিষয়টি আলোকপাত করেছেন। আমরা আশা করবো, দেশের সুপরিচিত পর্যটন এলাকা, ‘রুইলুই (সাজেক)’-এবং এর আশপাশের- দূরের অপুষ্ট- অভাবী মানুষগুলোর নি:স্বার্থ-অকৃত্রিম হাসি ম্লান হবে না। জীবনের উষ্ণতায়, ভালোবাসার পরশে সাজেকের প্রাণখোলা আকাশে ছড়িয়ে পড়বে মানবিক মমতার সুর। আমি- আপনি মিলেই তো ‘পাহাড়-সমতল’।

প্রদীপ চৌধুরী: পাহাড়ের সংবাদকর্মী।

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

আপনার জন্য নির্বাচিত

পানছড়িতে হয়রানির অভিযোগে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন

২য় দিনেও চিকিৎসাসেবা অব্যাহত ৫৪ বিজিবি’র

কাপ্তাইয়ে সিসিএইচপি কাজের বার্ষিক অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা

খাগড়াছড়িতে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

কক্সবাজার কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সম্পদ ও স্থাপনা দখলে

কাপ্তাইয়ে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন

রাঙামাটিতে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা: ৪ বছরেও শিক্ষক নিয়োগ দিতে ব্যর্থ

দাপ্তরিক কাজে দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন গড়ে তুলতে হবে-পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী 

ঈদগাহ রশিদ আহমদ কলেজে পরীক্ষার্থীদের বিদায় ও দোয়া মাহফিল

রাজস্থলীতে শেখ রাসেল দিবস পালিত

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: