খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলা বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে অন্তত ১৮ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সোমবার (৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১২:১০ ঘটিকার দিকে বাজার মসজিদের সামনে একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে বলে জানান স্থানীয়রা। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন বাজারের বিভিন্ন দোকানে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়দের দাবি, মহালছড়িতে ফায়ার সার্ভিস না থাকায় আগুন নেভাতে মারাত্মক বেগ পেতে হয়। খাগড়াছড়ি জেলা সদর ও মাটিরাঙা উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় নেয়। কিন্তু পানির উৎসের অভাবে তারা কার্যকরভাবে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে পারেনি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, আগুনে জুতার দোকান, স্বর্ণের দোকান, কসমেটিকস, কাপড়, মুদিমাল ও খাবার হোটেলসহ বিভিন্ন দোকান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ১০ কোটি টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পানি সংকটের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হয়। ঠিক সেই সময় শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টিতেই ধীরে ধীরে আগুনের তীব্রতা কমে আসে। পরে স্থানীয় জনগণ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে।
খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তবে সরু রাস্তা, বৃষ্টিপাত ও স্পিড ব্রেকার থাকায় পৌঁছাতে সময় লাগে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় পানির উৎসের সংকট। আমরা মাটিরাঙা থেকে আরও একটি পানি সরবরাহের ট্যাংকার পাঠাই। কিন্তু তার আগেই বৃষ্টির কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।”
তিনি আরও জানান, অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু রায়হান রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেন। তিনি বলেন, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদান করা হবে।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, “মহালছড়ি উপজেলা সদর ও আশপাশে কোনো ফায়ার সার্ভিস না থাকায় প্রতি বছরই এমন দুর্ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এখানে একটি স্থায়ী ফায়ার সার্ভিস ইউনিট স্থাপন এখন সময়ের দাবি।”


















