রাঙামাটি রিজিয়নের জুরাছড়ি জোন পাহাড়ি অঞ্চলের অসহায় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে এক হৃদয়স্পর্শী উদ্যোগের যাত্রা শুরু করেছে। পাহাড়ের দুর্গম অরণ্যে যেখানে প্রতিদিনের জীবন সংগ্রাম যেন বেঁচে থাকার চেয়ে কঠিন, সেখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই মানবিক কার্যক্রম অসহায় মানুষের জীবনে নতুন করে আশার প্রদীপ প্রজ্বলিত করেছে।
এই উদ্যোগের আওতায় জুরাছড়ি জোন প্রথম ধাপে দুইজন অসহায় ব্যক্তিকে দুটি পূর্ণাঙ্গ ঘর নির্মাণ করে প্রদান করেছে। অতীব শীঘ্রই পর্যায়ক্রমে আরও ২০টি ঘর নির্মাণ করা হবে, যা গৃহহীনদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে দাঁড়াবে এবং জুরাছড়ি উপজেলার জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করবে।
আজকের এই ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জুরাছড়ি জোনের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বায়োজীদ -বিন – আখন্দ দুই নং বনযোগীছড়া ইউপি চেয়ারম্যান সন্তোষ বিকাশ চাকমা, সদর ইউপি চেয়ারম্যান ইমন চাকমা, দুুমদুম্যা ইউপি চেয়ারম্যান শান্তি রাজ চাকমা সহ অত্র গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এই কার্যক্রমের প্রথম পর্যায়ে সহায়তা পেয়েছেন নুংঘাছরি চাকমা (পিতা: শুভলেট চাকমা), গ্রাম লেবারপাড়া, বনযোগীছড়া ইউনিয়নের এক নিঃসঙ্গ বৃদ্ধা, যিনি স্বামী-সন্তানহীন অবস্থায় একাকী জীবন যাপন করছিলেন। তার হাতে একটি পূর্ণাঙ্গ ঘর হস্তান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে।
তদ্রূপ, জুরাছড়ি উপজেলার ১ নং জুরাছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা জাগুলো চাকমাকেও এই কর্মসূচির আওতায় একটি নতুন ঘর প্রদান করা হচ্ছে। তার চোখে আনন্দাশ্রু এবং হৃদয়ে নতুন আশার সঞ্চার প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই মহতী উদ্যোগ কেবল ঘর নয়, দিচ্ছে নতুন জীবনের স্বপ্ন।
এছাড়াও এই মানবিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় জুরাছড়ি জোন সাম্প্রতিক বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে। খাদ্য, চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো হয়েছে, যা এই উদ্যোগকে আরও সর্বজনীন করে তুলেছে।
মানবিক সহায়তার এই অসাধারণ পদক্ষেপ জনমনে গভীর আবেগের সঞ্চার করেছে। পাহাড়ি জনপদে দীর্ঘদিনের অবহেলা আর দুঃখের গ্লানি কাটিয়ে রাঙ্গামাটি রিজিয়নের সহায়তায় জুরাছড়ি জোনের এ কার্যক্রম এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে, যেখানে প্রতিটি ঘর হবে মানবতার কল্যাণ বার্তা।