সোমবার , ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. জাতীয়
  2. রাঙামাটি
  3. খাগড়াছড়ি
  4. বান্দরবান
  5. পর্যটন
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. রাজনীতি
  8. অর্থনীতি
  9. এনজিও
  10. উন্নয়ন খবর
  11. আইন ও অপরাধ
  12. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
  13. চাকরির খবর-দরপত্র বিজ্ঞপ্তি
  14. অন্যান্য
  15. কৃষি ও প্রকৃতি
  16. প্রযুক্তি বিশ্ব
  17. ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
  18. শিক্ষাঙ্গন
  19. লাইফ স্টাইল
  20. সাহিত্য
  21. খোলা জানালা

ফ্রীল্যান্সিং এবং তাবিজ বিক্রেতা সংক্রান্ত কিছু প্রতিবন্ধকতা, এবং এর থেকে পরিত্রাণে উপায়

প্রতিবেদক
পাহাড়ের খবর ডেস্ক
সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২ ১:২৯ পূর্বাহ্ণ

তাবিজ বিক্রেতা এবং তাদের প্রধান প্রধান কিছু লক্ষণ।

  • প্রোফাইল লক এবং ডিপিতে থাকে নাম-দেশ, ফুল-ফল, লতা-পাতা অথবা বার্বি ডল।
  • #ইনবক্সে_আসেন এর মতো লিজেন্ডারী ডায়লগ।
  • বেশির ভাগের নিজস্ব কোর্স/প্রোডাক্ট নাই। এরা সাধারণত অন্যের কোর্স/প্রোডাক্ট অন্যায় ভাবে বিক্রি করে অথবা তাদের হয়ে মিডেলম্যানের দায়িত্ত্ব পালন করে। যার ফলে প্রোডাক্ট কেনার পরে ঝামেলা হলে আফটার সেল সার্ভিস প্রদান করতে পারে না। আর আপনি প্রোডাক্ট/কোর্সের মূল মালিকের কাছ থেকেও হেল্প পাবেন না যেহেতু আপনি সরাসরি তার কাছ থেকে প্রোডাক্ট কিনেন নি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রোডাক্ট/কোর্সের মূল মালিকেদের অজান্তেই এইসব তাবিজ বিক্রেতারা অন্যায় ভাবে প্রোডাক্ট/কোর্স বিক্রি করছে।
  • আলাদিনের চেরাগের প্রলোভন। যেমনঃ- ৩০০০০-হাজারের কোর্স মাত্র ৩০০ অথবা ফ্রীল্যান্সিং করে প্রতিদিন আয় করুন ৩০০-৫০০ ইত্যাদি ইত্যাদি বা এই ধরণের আকর্ষণীয় অফার।
  • ফেক এবং অস্থায়ী পেজ খুলে পেইড টার্গেটেড মার্কেটিং। খুব দ্রুত কিছু টাকা তুলে পর চিরদিনের জন্য গায়েব হয়ে যায়। এইসব পেজে যারা কমেন্ট বা রিভিউ প্রদান করে তারাও এই চক্রের সাথে যুক্ত অথবা একই ব্যক্তি হয়তো একই সাথে একাধিক আইডি পরিচালনা করে।

 

এমন অসংখ্য কারণ থাকতে পারে তবে আমি আমার স্বল্প সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে উপরোক্ত কারণ গুলা সর্বাধিক লক্ষ্য করেছি।

 

ভালো ট্রেইনার/ইনস্টিটিউট এর ক্ষেত্রে আফটার সেলস সার্ভিসের বিষয়টি সর্বদাই ট্রান্সপারেন্ট থাকে এবং তাদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম থাকে পাবলিক এবং সহজলভ্য।

 

তাবিজ বিক্রেতা/প্রতারক/বাটপার তারা সর্বদাই এই ভয়ে থাকে যে কেউ তাদেরকে কোর্স/প্রোডাক্ট/সার্ভিস নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে এই কারণে তারা সর্বদাই আমার/আপনার ধরা ছোয়ার বাহিরেই থাকতে চাইবে। এদের সাথে যোগাযোগের কোনো সহজ মাধ্যম নেই এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যাদের সাথে সম্পৃক্ত সবকিছু অর্থাৎ যোগাযোগের মাধ্যম, ইনফো, প্ল্যাটফর্ম এমনকি প্রোডাক্ট/কোর্স/সার্ভিস থাকে ফেক/অবৈধ।

উপরোক্ত কারণ গুলা ফলো করবেন এবং মিলে যাওয়া মাত্র এই ধরণের লোকজন এভোয়েড করবেন।

 

তাবিজ বিক্রতের দৌরাত্ত্বের পিছনেও কিছু কারণ রয়েছে সেগুলা নিম্নরুপঃ–

  • আমাদের দেশের আইন-কানুন হয়তো এতটা স্ট্রং নয়। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সুবিধার চাইতে বিড়ম্বনা বেশি। এই জন্য প্রোডাক্ট বা কোর্সের প্রকৃত মালিক যারা তারা তাদের কোর্স/প্রোডাক্টের এমন অবৈধ ব্যবহার রোধে খুব আগ্রহী নয়।

যারা ইতোমধ্যেই ফ্রীল্যান্সিংয়ে সফল তারা আমাদের মতো নতুন এবং সাধারণদের ধরা ছোয়ার বাহিরে। এর জন্য প্রধানত ৩-টা কারণ থাকতে পারে যেমনঃ-

  • তাদের পারসন টু পারসন হেল্প করার মতো সময় নেই। এটাই মূল কারণ।
  • আমাদের ট্রিপিক্যাল বাঙ্গালী মেন্টালিটি। তাল-গাছে একবার উঠেছি তো উঠেছি-ই আরো কাউকেই উঠতে দিবোনা।
  • যারা বর্তমানে সফল তারাও হয়তো শুরুতে কারো হেল্প বা সঠিক গাইডলাইন পাননি তাই তাদের অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতাই বর্তমানে নতুনদের/সাধারণদেরকে সাহায্য/সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করে।
  • দক্ষ এবং অভিজ্ঞরা তাদের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার যথোপযুক্ত সন্মান এবং সম্মানী পায়না যার কারণে রুট লেভেলে তারা তাদের দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা শেয়ার করার ক্ষেত্রে অনাগ্রহী।

আমি কাউকে দোষ বা দায়ী করছিনা জাস্ট নিজের বিবেচনায় ফ্যাক্ট গুলা তুলে ধরছি বা বুঝার চেষ্টা করছি।

 

শুধু একপক্ষকে দোষারোপ করে লাভ নেই আমাদের নিজেদের-ও (নতুনদের) যথেষ্ট পরিমানে সমস্যা রয়েছে যা নিম্নরুপঃ–

 

  • একজন যোগ্য এবং অভিজ্ঞ ট্রেইনার যে, তার সময়/শ্রম এবং শিক্ষা (কোর্স/প্রোডাক্টের) জন্য উপযুক্ত সম্মানী/সম্মাননার দাবিদার এইটা আমরা মানতে চাইনা বা মানতে অনীহা রয়েছে। আমরা চাই ১০-টাকায় ১০০০০-টাকার প্রোডাক্ট/কোর্স/সেবা। বাস্তবে এমনটা সম্ভব নয় যার কারণে তাবিজ বিক্রেতারা আমাদের দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করতে পারে।
  • একটা নির্দিষ্ট সেক্টরে দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা অর্জনের পূর্বেই আলাদিনের চেরাগের কামনা-বাসনা মনের মধ্যে জেঁকে বসে। যেখানে সিনিয়র ফ্রীল্যান্সাররা-ও অফ ফর্মে ভোগে সেখানে আমরা চাই আজকে ফ্রীল্যান্সিং শুরু করে কালকেই ডলারের এভারেস্টের মালিক/মালকিন বনে যেতে।
  • সিদ্ধান্তহীনতা। এইটা সিরিয়াস একটা কারণ। আমি মূলত এই স্টেজে রয়েছি। একেক সময়ে মনে হয় যে একেকটা বিষয়ে স্কিল ডেভেলপ করি। মূলত প্রথম দিকে যেকোনো একটা সেক্টরে স্কিল ডেভেলপ করা ভালো। কোনো একটা সুনির্দিষ্ট সেক্টরে স্কিল এবং ভালো এক্সপেরিয়েন্স অর্জিত হওয়ার পরেই শুধুমাত্র বাড়তি এবং প্রাসঙ্গিক কোনো সেক্টরে স্কিল+এক্সপেরিয়েন্স ডেভেলপ করার চিন্তা-ভাবনা করা উচিৎ অন্যথায় সব ক্ষেত্রেই অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করীর মতো অবস্থা হবে।
  • বিচার বিবেচনা ছাড়াই সিদ্ধান্ত গ্রহণ। ফ্রীল্যান্সিংয়ের জন্য প্রয়োজন প্রয়োজনীয় গেজেট, ইনভেস্ট করার মতো টাকা এবং সময় এবং শ্রম। আমাদের অনেকেরই এইসবের পর্যাপ্ততা না থাকার পরেও অমুকে/তমুকে ফ্রীল্যান্সিং করে বাড়ি-গাড়ি করে ফেলেছে তো আমি পারবো না কেন এমন মেন্টালিটি থেকে হুট-হাট একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি যেটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। ফ্রীল্যান্সিং করার পূর্বে চিন্তা-ভাবনা করে দেখেন যে, আপনার বাড়িতে কম্পিউটার/ল্যাপটপ, স্ট্যাবল ইন্টারনেট লাইন, বিদ্যুৎ সরবরাহ, কোর্স/ট্রেনিং করা বা প্রয়োজনীয় টুলস/সফটওয়্যার কেনার মতো প্রাথমিক ব্যলেন্স, সময় এবং প্ররিশ্রম করার মতো মানুষিক প্রস্তুতি রয়েছে কিনা। অনেকের সব কিছুই থাকে কিন্তু সময় ও শ্রম দেয়ার মতো মেন্টালিটি থাকেনা তাই ব্যর্থ হয়।
  • শুরু করার আগেই #এডভ্যান্স লেভেলে শিখতে চাওয়া। মানে ABC না শিখেই একদম হার্ভার্ড গ্রাজুয়েট হওয়ার স্বপ্ন দেখা। আমার মতে পৃথিবীর যে কোনো সেক্টরেই স্বয়ং আইনস্টাইন/নিউটনের মতো বিজ্ঞানীর কম্বিনেশন-ও এডভ্যান্স লেভেল কোনো কিছু শিখাতে পারবে না। প্রত্যেকটা ইনস্টিটিউট/ট্রেইনার এবং কোর্স আপনাকে আমাকে ব্যাসিক বা মিডিয়াম লেভেলে একটা ধারণা বা প্রশিক্ষণ দিবে পরে নিজের যোগ্যতায় এডভ্যান্স লেভেল চলে যেতে হবে।
  • আমার মতে এডভ্যান্স লেভেল হচ্ছে একটা প্রব্লেম শোনার সাথে সাথেই মাথার মধ্যে আমি কেন/কিভাবে এই সমস্যার সমাধান করবো এমন একটা অটোমেটিক ব্লুপ্রিন্ট তৈরী হয়ে যাওয়াকে বুঝায়। এমন লেভেল ১/২-দিন, ১/২-মাস বা ১/২ বছরে যাওয়া সম্ভব নয়। কাজ করতে করতে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হবে এবং এক সময় নির্দিষ্ট সেক্টরে এমন দক্ষতা অর্জিত হয়।
  • কমিউনিকেটিভ লেভেলের ইংলিশে দক্ষতার অভাব। ফ্রীল্যান্সিংয়ের জন্য ইংলিশ জানা অবশ্যই একটি বাড়তি এডভ্যান্টেজ তবে একেবারে না জানলে যেমন চলবেনা তেমনি আবার একদম PHD হোল্ডার হতে হবে এমনও না। অনেক সিলিয়েন্ট নিজেরাও ভালো ইংলিশ জানেনা কাজেই আপনার আমার জন্য ইংলিশে সাধারণ ভাব বিনিময় করার মতো ইংলিশ জানা যথেষ্ট। একেবারে সাধারণ কথা অনেকেই বুঝেনা এবং কাজ পাওয়ার পরে ক্লায়েন্টের ম্যসেজের স্ক্রিনশট দিয়ে অনেকেই গ্রুপে হেল্প চায় এই বিষয় গুলা এক প্রকার দৃষ্টিকটু।
  • অন্যের সাপেক্ষ্যে নিজেকে/নিজেদের বিচার বিবেচনা করা। আমার এলাকার/পাড়া/মহল্লার/গ্রামের একজন গ্রাফিক্সে টপ রেটেডের হয়েছে এখন আমাকেও চোখ-কান বন্ধ করে গ্রাফিক্স ডিজাইনের আটলান্টিক মহাসাগরে লাফ দিতে হবে। আমরা ঠিক এই কাজটি করি এবং লাফ দিয়ে পর্যাপ্ত সেফটি বা সাঁতার না জানার কারণে ডুবে ডেড হয়ে যাই।

প্রতিটি মানুষের দক্ষতা-যোগ্যতা/পছন্দ-অপছন্দ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে বা হওয়াটাই স্বাভাবিক। কে কোন সেক্টরে ভালো করছে সেটা ফলো করে লাভ নেই আপনার/আমার যে সেক্টরে ইচ্ছা-আগ্রহ বেশি থাকবে সেই সেক্টর বেঁচে নেয়াই উত্তম। সেক্টর বাছাই করার পরে উক্ত সেক্টরে দক্ষ এবং যোগ্যদের খুঁজে বের করে সহজ/সহযোগিতা গ্রহণ করতে হবে।ম্পিটিটিশন মুটামুটি সব সেক্টরেই ১৯/২০-অবস্থা কোথাও একেবারে কম নেই।

Tasmia Anika Tabassum

Fiver Bangladesh Group.

 

 

 

সর্বশেষ - আইন ও অপরাধ

%d bloggers like this: