রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন এর ৫ নং ওয়ার্ডের কলাবাগান এলাকায় দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন চলৎশক্তিহীন মোঃ শাহ আলম। ভিক্ষা বৃত্তি করে চলে তাঁর সংসার। ৩ বছর বয়সে টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা হারান তিনি। টেনে হিচড়ে কোনোমতে চলেন তিনি। একটি হুইল চেয়ার এর জন্য তিনি স্বাভাবিক ভাবে ভিক্ষাবৃত্তি করতে পারছেন না।
কাপ্তাই উপজেলা যুবলীগের মহিলা সম্পাদিকা শম্পা আকতার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান এর নজরে আনলে ইউএনও তাকে কথা দেন খুব দ্রুতই এর ব্যবস্থা নিবেন। আর ইউএনওর এই কমিটমেন্ট দেখে তার সাথে যোগাযোগ করেন স্থানীয় এক দানশীল ব্যক্তি মো.রবিউল হোসাইন জহির। তিনি দু’দিনের মধ্যেই একটা হুইল চেয়ার ইউএনওর হাতে পৌঁছে দেন।
রবিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে পক্ষাঘাতগ্রস্থ শাহআলম কে চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন এর কলাবাগান গিয়ে হুইল চেয়ারটি বুঝিয়ে দেন ইউএনও মুনতাসির জাহান। এইসময় তিনি হুইল চেয়ারে বসিয়ে নিজ হাতে চালিয়ে একটি রেষ্টুরেন্টে নিয়ে গিয়ে নিজ হাতে খাবার খাইয়ে দেন শাহআলমকে।
হুইল চেয়ার পেয়ে শাহআলম এতবেশী খুশি হয়েছেন যে, সে কথা বলতে পারছিলো না, হাসি কান্নার আনন্দঅশ্রু ঝরে পড়ছিলো তার চোখেমুখে। এইসময় উপস্থিত সকলে বলেন,তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় থাকলেও আমরা কখনো তার প্রয়োজনীয় জিনিসের কথা ফিল করিনি।এবার নিশ্চয়ই তিনি বাইরে সহজেই চলাচল করতে পারবেন।
এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা নাজমুল হাসান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রুহুল আমিন, কাপ্তাই উপজেলা যুবলীগের মহিলা সম্পাদিকা শম্পা আকতার এবং কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্য নাট্যজন আনিছুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনও মুনতাসির জাহান জানান,সমাজে এখনো দানশীল আর পরোপকারী ব্যক্তিরা আছে বলেই মানুষে মানুষে ভালোবাসাটাও টিকে আছে।আমি এ কাজের একটা সেতু মাত্র।এরকম অসহায়, দুঃস্থ মানুষগুলোকে আড়ালে না রেখে মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে পারলে পরিপূর্ণ হবে সমাজব্যবস্থা। এজন্য উদ্যোগী মানুষগুলোকে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি। এ মহৎ কাজের পিছনের কারিগর সকল অংশীজনদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।