রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করে। কুয়াচ্ছান্ন সকাল ক্রমেই সূর্যের আলোয় উদ্ভাসিত হওয়ার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে নব-স্থাপিত শহীদ মিনারের দিকে মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলরের নেতৃত্বে এগিয়ে যায় শিক্ষক, কর্মকর্তা,কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ এক পদযাত্রা। পদযাত্রা শেষ হয় নব-স্থাপিত শহীদ মিনার চত্বরে।
প্রথমেই মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার, প্রো-ভিসি মহোদয় ও শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফিতা কেটে শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেন। অতঃপর সুশৃঙ্খলভাবে শহীদ মিনারের বেদিতে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার ও প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাঞ্চন চাকমা।
এরপরই পুস্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক জনাব জুয়েল সিকদার। সেসময় সাথে ছিলেন সহকারী প্রক্টরদ্বয় জনাব সূচনা আখতার এবং ড. নিখিল চাকমা। বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দের নেতৃত্বে বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ শহীদদের উদ্যেশ্যে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। চেয়ারম্যানগণ হলেন জনাব ধীমান শর্মা , সহকারী অধ্যাপক, সিএসই বিভাগ, অধ্যাপক জনাব নেইংম্রাচিং চোধুরী ননী, সহকারী অধ্যাপক ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ড. সুপ্রিয় চাকমা, সহকারী অধ্যাপক ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগ, জনাব খোকনেশ্বর ত্রিপুরা, প্রভাষক,ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাঞ্চন চাকমা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
“একুশের চেতনায় বর্ণ, বর্ণে বর্ণে সম্প্রীতি” স্লোগানে শিক্ষার্থীদের উধ্যেগে আয়োজিত বই মেলা মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার উদ্বোধন করেন। সেখানে প্রো- ভাইস চ্যান্সেলর ড. কাঞ্চন চাকমা এবং সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের চেতনা, গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় দীপংকর তালুকদার ভবনের সম্মেলন কক্ষে।
সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাঞ্চন চাকমা ও সম্মানিত অতিথি ছিলেন প্রক্টর ও সহকারী অধ্যাপক জনাব জুয়েল সিকদার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব সজীব ত্রিপুরা। আলোচনায় বক্তব্য প্রদান করেন বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জনাব সূচনা আখতার, অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সম্পাদক যথাক্রমে জনাব মাহবুব আরা (সহকারী রেজিস্ট্রার) এবং মহিম আল মহিউদ্দীন (সহকারী রেজিস্ট্রার) এবং কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জনাব মোঃ কামাল হোসেন, সিনিয়র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট।
আলোচনায় এই অঞ্চলের ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী ভাষা সংরক্ষণ ও অনুশীলনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উপর জোর দেয়া হয়। ভাষা ইন্সটিটিউট ও নৃতাত্তিক জাদুঘর করার প্রস্তাবনা দেয়া হয়। বক্তারা পরবর্তীতে বড় আঙ্গিকে বই মেলা বহু ভাষিক কবিতা আবৃত্তিসহ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বৃদ্ধির কথা বলেন।
জাপানের উদাহারণ দিয়ে প্রো ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, জাপানিরা সকল বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে তাদের মাতৃভাষায়, তারা উচ্চ শিক্ষার সকল বই জাপানি ভাষায় অনুবাদ করে থাকে। তিনি বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষায় মাতৃভাষায় ব্যবহার ও অনুবাদের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার উত্থাপিত সকল প্রস্তাব পূরনের আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি নিজস্ব ক্যাম্পাসে, নিজস্ব শহীদ মিনারে প্রথমবারের মত শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং শহীদ মিনার স্থাপন কমিটিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সীমিত সম্পদের মাঝে কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন করা যায় তার নির্দেশনা দেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন।