ঢাকায় গ্রেফতারকৃত ছাত্রলীগ নেতাকে প্রত্যয়নপত্র দিলো রাঙামাটি জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলীম। গত ৩ডিসেম্বর ২০২৪ একটি সাদা কাগজে জামায়াত আমীরের সীল ও স্বাক্ষর করে এই প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গোটা শহর জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
এব্যাপারে মুঠোফোনে রাঙামাটি জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলীম বলেন, ডা. শ্রী কুশ বড়ুয়া প্রকাশ অর্নব আমাকে যে ভাবে তথ্য গোপন করে ও সহজ সরল করে বলেছে তাকে আমি বিশ্বাস করে তার উপকারের জন্য প্রত্যয়নপত্র দিয়েছি। এখন দেখি সে অনেক ভয়াবহ ও ছাত্রলীগ নেতা। আমি এই প্রত্যয়নপত্রটি প্রত্যাহার করে নেব। সাথে সাথে একটি বিজ্ঞপ্তি ও দেব। প্রতারণা করাই মানুষের স্বভাব।
বিগত জুলাই- আগষ্ট ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে পুলিশ ও সরকারদলীয় সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ছাত্রদের চিকিৎসা না দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত এক ছাত্রলীগ নেতাকে প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেছেন রাঙামাটি জামায়াতের আমীর। গত মঙ্গলবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রত্যয়নপত্রের ছবিটি ব্যাপকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ছবিতে দেখা যায়,৩ ডিসেম্বর তারিখে রাঙামাটি জেলা আমীর মুহাম্মদ আব্দুল আলীম’র স্বাক্ষরিত এক প্রত্যায়ন পত্রে রাঙামাটি পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৌরভ বড়ুয়ার ছেলে শ্রী কুশ বড়ুয়াকে প্রত্যয়নপত্র প্রদান করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, জুলাই-আগষ্ট ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে পুলিশ ও সরকারদলীয় সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ছাত্রদের চিকিৎসা না দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগে ১ ডিসেম্বর রাতে তাকে মিরপুর মডেল থানার পুলিশের হাতে অর্নবকে সোপর্দ করে ছাত্র-জনতা। তিনি ইসলামী ব্যাংক কার্ডিয়াক হসপিটাল মিরপুরে ইমারজেন্সি বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ডা. শ্রী কুশ বড়ুয়া অর্নব রাজধানীর মিরপুর-১৪ নম্বরে ইব্রাহিমপুরে অবস্থান করছিলেন।
এইদিকে, শ্রী কুশ বড়ুয়া অর্নব তিনি রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক। তাছাড়া অনেকেই অভিযোগ করছেন বিগত সরকারের আমলে তিনি ছাত্রলীগের ছত্র-ছায়ায় থেকে উশৃংখল কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। এ সময় তার বিরুদ্ধে ভিন্ন মতের একাধিক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। তিনি সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন ও সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমার আস্থাভাজন হিসাবেও বেশ পরিচিত ছিলেন। ইতিমধ্যে তাদের সাথে একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন।
ইতিমধ্যে রাঙামাটির জেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মোঃ জসিম উদ্দিন জেলা আমীরের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সোনার ছেলেদের চারিত্রিক সার্টিফিকেট দিচ্ছে রাঙামাটির জামায়াতের আমীর! ভোট দরকার নাকি বান্ডিল দরকার বুঝে আশে না…. মর্মাহত হলেন রাঙামাটির ছাত্র-জনতা। সে পোস্টে আরেকজন মন্তব্য করেন, ছাত্রলীগের প্রশয়ের মূল আশ্রয়স্থল হিসেবে কী জামায়াত নিজেদের অবস্থান প্রকাশ করছে? এই প্রত্যয়নপত্র এক প্রকার পাগলের প্রলাপের মত। এই কুশ বড়ুয়া অর্নব রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, সে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন সময় ভয় প্রদর্শনসহ বিভিন্ন অপকর্ম করেছে, আর জামায়াত তার সু-চরিত্রের সার্টিফিকেট দিচ্ছে, এটি জুলাই-আগস্ট গনঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধংসের ষড়যন্ত্রের সামিল বলে মনে করছি।