নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি।
সরিষা ক্ষেত করে মৌমাছি লালন পালন করছেন রাঙামাটি সদর উপজেলার কুতুকছড়ি ইউনিয়নের রবিন চাকমা (৪০) ও স্মরবিন্দু চাকমা (৫০)। এ মধু সংগ্রহ করা হবে এপ্রিল অথবা মে মাসে।
সরেজমিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সরিষা ক্ষেতে মৌবক্স বসিয়ে রাখা হয়েছে। মৌমাছি ঝাঁক সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌবক্সে প্রবেশ করছে। মধু রেখে আবার মধুর সন্ধানে বের হচ্ছে। প্রতিটি মৌবক্সের সামনে একটি বাটিতে রাখা হয়েছে পানি।
স্মরবিন্দু চাকমা চাকমা বলেন, আমি পেশাদার মৌ চাষী। বিসিক (বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প) থেকে ৮/৯ বছর আগে প্রশিক্ষণ নিয়ে মৌমাছি লালন পালন করি। বছরের বিভিন্ন ঋতুর ফুলকে লক্ষ্য করে আমি মৌমাছির যত্ন করি। সময় মত মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করি। শীত মৌসুমে শুধু সরিষা ফুলের উপর মৌমাছি লালন পালন করি। নিজ উদ্যোগে আমি সরিষার ক্ষেত করি। এতে একদিকে মধু পাই। অন্যদিকে সরিষার তৈল পাই। এ তৈল দিয়ে আমার সারা বছর চলে। তৈল বিক্রিও করতে পারি।
এক কানি (৪০ শতক) জমিতে সরিষা বীজ ছিটালে ৪০ কেজির মত সরিষা পাওয়া যায়। টাকার অভাবে সরিষা ক্ষেতের এলাকা বাড়াতে পারি না।
একই কথা বলেন রবিন চাকমা। রবিন আরো বলেন, খাঁটি মধু মানুষের বেশ চাহিদা। আমরা মানুষকে খাঁটি মধু দিতে পারি। মৌচাক থেকে সারা বছর কম বেশী আমরা মধু সংগ্রহ করি। সরিষা ফুলের মৌসুম চলে গেলে আমরা মৌবক্সগুলো বাড়ি আঙিনায় নিয়ে আসি। এখান থেকে মৌমাছিরা বিভিন্ন এলাকার বুনোফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের রাঙামাটি জেলা সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শান্তপন বড়ুয়া বলেন,
একটি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যেমে জেলার কাপ্তাই, সদর, রাজস্থলী, কাউখালী উপজেলার কৃষকদের মৌচাষের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ প্রশিক্ষণে অংশ নেয় স্মরবিন্দু। অন্যরা মৌচাষের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেললেও স্মরবিন্দু ব্যাতিক্রম। সে বেশ লাভবান হচ্ছে। বিভিন্ন সময় সে বিসিকের আয়োজন মৌচাষ প্রশিক্ষণে সে প্রশিক্ষক হিসেবেও আসে।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক তপন কুমার পাল বলেন, আমরা কুতুকছড়ি এলাকায় সরিষা ফুলের একাধিক প্রদর্শনী দিয়েছি। এ প্রদর্শনীর আওতায় চাষীদের সার ও কৃষি পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এ প্রদর্শনীর আওতায় রবিন স্মরবিন্দু চাকমা আছেন। অন্যান্য সরিষা চাষীদের চেয়ে রবিনরা বেশী লাভবান হচ্ছেন। মৌ চাষের উপর তাদের প্রশিক্ষণলব্দ জ্ঞান রয়েছে। তাদের পরামর্শ নিয়ে অন্যান্যরাও তাদের মত লাভবান হতে পারবে।