ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই।
স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের ( এলজিইডি) অর্থায়নে প্রায় ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন এর রেশম বাগান তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ায় শনিবার সকালে উদ্বোধন করা হল “টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প”।
২ নং ওয়ার্ডের রেশম বাগান তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া শিলছড়ি মুখ হতে ৩ নং ওয়ার্ড কয়লারডিপু এলাকার কর্ণফুলী নদীর মুখ পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার খাল খননের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে পানি সংরক্ষণ করে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি, মৎস্য চাষ উৎপাদন এবং সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে এলাকার প্রায় ৫ হাজার জনগণের আত্ম-সামাজিক উন্নয়ন এর লক্ষ্যে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প, রাঙ্গামাটি এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুস শহীদ।
এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ২ টি সুইস গেইট নির্মাণ করা হবে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, আজ (শনিবার) প্রাথমিক ভাবে ২৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২ কিলোমিটার খাল খননের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ২ মাসের মধ্যে এই ২ কিলোমিটার খাল খননের কাজ শেষ হবে।
প্রকল্পের অধীনে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ টি সুইস গেইট নির্মাণের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আগামী মাস হতে এই সুইস গেইট নির্মাণের কাজ শুরু হবে । ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে সমস্ত প্রকল্প গুলো সমাপ্ত হবে বলে জানান এই উপ-সহকারী প্রকৌশলী।
প্রকল্প গুলো বাস্তবায়ন হলে সীমান্তবর্তী চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন এবং রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন এর প্রায় ৫ হাজার জনগণ এর সুফল ভোগ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
শনিবার সকালে রেশন বাগান এলাকায় এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান।
এসময় ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবি, কাপ্তাই উপজেলা সিনিয়র প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম চৌধুরী, টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প, রাঙ্গামাটি এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুস শহীদ, কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য উজ্জ্বল ভট্টাচার্য, ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সুধীর তালুকদার, ১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন এর ইউপি সদস্য রাহুল তালুকদার, আবুল হাসনাত খোকন, মাঈনুল ইসলাম মনা, মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, মাঈনুল ইসলাম সুমন, মোঃ হাসেম, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হোসনে আরা ভানু, নয়ন তারা, পুস্করা বেগম সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন ।
রেশম বাগান তঞ্চঙ্গা পাড়ার অধিবাসী উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সুধীর তালুকদার জানান, প্রকল্প গুলো বাস্তবায়ন হলে পানি সংরক্ষণের ফলে ছড়ার ২ পাশে শুষ্ক মৌসুমে কৃষকরা নানা রকম শাক-সবজি আবাদ করতে পারবেন।
২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রাহুল তালুকদার জানান, প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে একটি সমিতি গঠন করা হবে এবং খালের দুই পাশে সামাজিক বনায়ন করতে পারবে কৃষকরা। এছাড়া মৎস্য চাষ করতে পারবেন যে কেউ।
১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী জানান, প্রাথমিক ভাবে রেশন বাগান তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ার শিলছড়ি মুখ হতে রেশম বাগান পুলিশ চেকপোস্ট পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার খাল খননের কাজ শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে কেপিএম কয়লারডিপু কর্ণফুলী নদীর মুখ পর্যন্ত সর্বমোট ৪ কিলোমিটার খাল খনন করা হবে। যার ফলে শুষ্ক মৌসুমে পানি ধরে রেখে কৃষি চাষ, সামাজিক বনায়ন এবং মৎস্য চাষ করে প্রান্তিক কৃষকরা নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলতে পারবেন।
১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন এর আওয়ামী লীগের সদস্য কামরুল হাসান জানান, পানির অভাবে এ এলাকায় ইরি মৌসুমে ইরি ধানের চাষ হতো না। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ইরি ধান চাষ সহ ৩ বার ধানের ফসল ফলাতে পারবে এবং অন্যান্য প্রান্তিক ফসলের চাষ করতে পারবেন কৃষকরা।