রাঙামাটির লংগদুতে প্রতিবছর কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়লেই ডুবে যায় সড়কটি। দীর্ঘদিন এ সমস্যা বিদ্যমান থাকলেও স্থায়ী সমাধান করছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বছরের পর বছর পেরোলেও সংস্কার করা হয়নি সড়কটি। দুই পাশে পিচ ঢালাই সংযোগ সড়ক থাকলেও পানিতে ডুবে থাকা সড়কটির কারণে বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল এবং ভোগান্তিতে দৈনন্দিন প্রয়োজনে যাতায়াতকারী লোকজন। পরে এলাকাবাসীর স্ব-উদ্যোগে নির্মাণ করেন অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো। সাময়িক দুঃখ গুছলেও লোকজনের ঝুঁকি রয়েছে সাঁকো পারাপারে।
সাঁকোটি লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৭নং সদর এলাকার সাথে ৮নং বড়াদম এলাকার সংযোগস্থলে অবস্থিত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে নির্মিত হয় সড়কটি। এখন বর্ষাকালে এই সড়কের বিশেষ একটি অংশ পানিতে ডুবে থাকে। ফলে এলাকার মানুষদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাঁরা সড়ক পথে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন নিয়ে চলাচলের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, আকস্মিক বন্যা ও হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেলেই সড়কটি ডুবে যায়। কিন্তু কখনো এটি সংস্কার বা উঁচু করে নতুন সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় বড়াদম, মানিকজোড়ছড়া, রাঙাপানিছড়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষকে গাড়িতে চলাচলের ক্ষেত্রে ৬-৭ কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। আর হেঁটে চলার ক্ষেত্রে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে ওঠা লাগছে।
স্থানীয় জুম চাষি রুমেন চাকমা বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে কোমর পানি পেরিয়ে কৃষি কাজ করতে যেতে হয়। জমির ফসল আনা-নেওয়া করতে বিকল্প পথে খরচ বেশি হচ্ছে।
স্কুল শিক্ষার্থী সীমা চাকমা জানায়, সড়কটি সংস্কারের অভাবে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে পড়ে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বিনয় চাকমা বলেন, অল্প ডুবে যাওয়া সড়কটির জন্য বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি না পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতা কারো বাঁশ, কারো অর্থ বা শ্রম দিয়ে এলাকাবাসীর উদ্যোগে সাঁকোটি নির্মাণ করেছি। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।
লংগদু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিক্রম চাকমা বলি বলেন, বর্তমান সময়ে এসে উপজেলা সদরের সাথে সংযুক্ত একটি সড়ক এভাবে পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া এটা সত্যি আমাদের জন্য দুঃখজনক। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করবো।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সড়কটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলবো। তবে সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য এলাকাবাসী অস্থায়ীভাবে সাঁকো তৈরি করেছে এটা চমৎকার ও মহৎ উদ্যোগ।