মাত্র ১ কি: মি: দুরত্বে অবস্থিত রাঙামাটির কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। ২শত ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এই কেন্দ্র হতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে সঞ্চালিত হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আলোকিত হচ্ছে। অথচ এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের খুব সন্নিকটে অবস্থিত কলাবুনিয়া পাড়াবাসী বিদ্যুৎ সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। এই যেন বাতির নীচে অন্ধকার।
কাপ্তাই উপজেলার ৩ নং চিৎমরম ইউনিয়ন এর ৬ নং ওয়ার্ডের কলাবুনিয়া মারমা পাড়া। কাপ্তাই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এলাকার বাম পাশে অবস্থিত এই গ্রামটি। গ্রামটির একপাশে কর্ণফুলী নদী আর অন্যপাশে সবুজ পাহাড়। অনিন্দ্য সুন্দর এই গ্রামটিতে প্রায় ৩৫ টি মারমা পরিবারের বসবাস। কিন্তু গ্রামটিতে নেই কোন বিদ্যুৎ সংযোগ। একমাত্র সৌর বিদ্যুৎ তাদের বিদ্যুৎতের চাহিদা যৎ সামান্য মেটায়।
গত ৭ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২ টায় এই প্রতিবেদক এই পাড়ায় যান। এসময় কথা হয় এলাকার বয়স্ক ব্যক্তি পাইমং মারমা ও থোয়াইসাপ্রু মারমার সাথে। তাঁরা আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের পাড়া হতে মাত্র ১০ মিনিট বোট যোগে পাড়ি দিলে দেখা মিলবে কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। অথচ আমরা বিদ্যু সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছি বছরের পর বছর । তাঁরা সরকারের নিকট এই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার দাবি জানান।
এসময় কথা হয় এলাকার কারবারি অংলাচিং মারমা সাথে। তিনি বলেন, এই গ্রাম হতে মাত্র দেড় কি: মি: দূরত্বে অবস্থিত চিৎমরম আগাপাড়া সংলগ্ন লঙ্কা মুখ পাড়া। যেখানে বিদ্যুৎতের খুঁটি লাগানো আছে। এই লঙ্কা মুখ পাড়া হতে আমাদের গ্রামে বিদ্যুৎ আনার জন্য আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিভাগে আবেদন করেও এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ পাই নাই। এই মুহূর্তে এলাকাবাসীর একটি দাবি যেন এই গ্রামকে বিদ্যুৎতের আলোয় আলোকিত করে।
৩ নং চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়েশ্লিমং চৌধুরী এবং ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য অংখেস মারমা বলেন, কলাবুনিয়াবাসী বিদ্যুৎ সেবা হতে বঞ্চিত, তাই আমরা এই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেবার জন্য সরকারের নিকট জোড় দাবি জানাই।
গত ৭ নভেম্বর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরন সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ কামাল উদ্দীন এই প্রতিবেদককে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ ” ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ” সেবা পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে তিন পার্বত্য জেলা বিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্পের পেইজ -১ এর মাধ্যমে পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে এই প্রকল্পটি নেই, তবে অচিরেই প্রকল্পের দ্বিতীয় পেইজ এর মাধ্যমে আমরা আশা করি পাহাড়ের কোন এলাকা বিদ্যুৎহীন থাকবে না।