পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ অত্যন্ত পরিশ্রমী ও উদারপন্থী। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি বাংলাদেশের প্রায় এক দশমাংশ এলাকা জুড়ে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা নিয়ে গঠিত পার্বত্য অঞ্চল। এখানে ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং বাঙালি জনগোষ্ঠীর বসবাস। পার্বত্য চট্টগ্রাম এখন আর দুর্গম নয়। পার্বত্য চটটগ্রাম এখন আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য। এখানকার বিভিন্ন ভাষাভাসী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ সকলের জীবনে শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নয়ন ও অগ্রগতির অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও এর অন্যান্য সংস্থাসমূহ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আজ ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার অফিস কক্ষে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা’র সাথে ঢাকাস্থ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের Charge d’Affaires, Miz Helen LaFave- এর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়ন সংক্রান্ত ও দ্বি-পাক্ষিক বিষয়ের উপর আলোচনায় উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসব কথা বলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন যে, এদেশ সকল নাগরিকের দেশ। তিনি আরো বলেন, সমাজকে বৈষম্যহীন করে গড়ে তুলতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। আমরা সবাই সমান ও সমতার ভিত্তিতে মিলেমিশে বসবাস করছি।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবসময় আমাদের বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে অর্থ দিয়ে ও নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে এজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। উপদেষ্টা বলেন, আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে শক্তিশালী করতে চাই। এর ধারাবাহিকতায় পরিবেশ রক্ষা, ইকো ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ সকল ক্ষেত্রে পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর জীবন মানোন্নয়নের জন্য বর্তমান সরকার কাজ করছে।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, সকলের মধ্যে কনফিডেন্স গড়ে তোলাই হলো আমাদের প্রধান কাজ। সকলের জন্য ন্যায় বিচারভিত্তিক দেশ গঠনের জন্য আমরা কাজ করছি। তিনি বলেন যে, আমরা শিক্ষার প্রতি অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করছি। ডিজিটালাইজেশন এর মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের সকল ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখার মান বৃদ্ধি করা হবে, পার্বত্য অঞ্চলের বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জীবনমানের সার্বিক উন্নয়নে বিবিধ প্রকল্প চলমান রয়েছে। দূর্গম এলাকায় সরকারের বিভিন্ন সেবা পৌঁছে দেয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চার্জ দ্যা এফেয়ার্স বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্রগুলো নিয়ে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সুশাসন, ট্যুরিজম, সমউন্নয়ন, পাহাড়ে শান্তি-শৃঙ্খলা বৃদ্ধি, শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন, নারী ক্ষমতায়ন ইত্যাদি বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে আরও বেশি কাজ করার সুযোগ রয়েছে মর্মে অভিমত প্রকাশ করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সাথে মতবিনিময়ে এসময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী, ঢাকাস্থ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের Charge d’Affaires, Miz Helen LaFave, অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম এনডিসি, যুগ্মসচিব কংকন চাকমা, উপসচিব মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম, উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার একান্ত সচিব (উপসচিব) খন্দকার মুশফিকুর রহমান, ঢাকাস্থ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের Political-Economic Counselor, Eric Geelan, Human Rights Officer Anne Daughterly, USAID Mission Director Reed Aeschliman, Protocol Supervisor Nishat Tasneem প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।