রাঙামাটিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাকে মাদকসহ আটক করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। আজ মঙ্গলবার রাতে রাঙামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলার যক্ষাবাজার আর্মি ক্যাম্পের চেকপোষ্টের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় চেকপোষ্টে তল্লাশী করে ছাত্রলীগ নেতার পকেটে ৪৪ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। রাঙামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলা শাখার ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোকাররম হোসেন জসিম(২৮) কে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
নিরাপত্তাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, ইয়াবা কারবারী ও নিষিদ্ধ ঘোষিত এই ছাত্রলীগ নেতা রাঙামাটির তার এক বন্ধুর কাছ থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট এনে জুরাছড়ি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে। সে এই অবৈধ ব্যবসা দীর্ঘ দিন ধরে করে আসছে। পরে আনুমানিক রাত ২টা ৩০মিনিটের সময় জুরাছড়ি থানার এএসআই মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের মাধ্যমে এবং জুরাছড়ির থানার ওসি মোঃ আলমঙ্গীর হোসেন শাহের নিকট হন্তান্তর করেন।
স্থানীয়রা জানান, আটককৃত ছাত্রলীগ নেতা জসিমের ব্যাপারে খোজ খবর নিয়ে জানা যায় সে জুরাছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিগত পতিত ও ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকারের প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় সকল ঠিকাদারি কাজের টেন্ডারগুলো দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে দিতে প্রভাব খাটাতেন এবং ঠিকাদারদের নিকট হতে মোটা অংকের চাঁদাবাজি করতো। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচির নাম দিয়ে যক্ষাবাজার ও উপজেলার নিচু বাজার থেকে জোর পূর্বক চাঁদা আদায় এবং স্থানীয় জনগণকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাদের জমি দখল করে নিতো।
জুরাছড়ি বাজারে চায়ের দোকানের আড়ালে বিগত কয়েক বছর যাবৎ ইয়াবা ব্যবসা এবং জুরাছড়িতে অনলাইন জুয়ার এজেন্ট হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়াও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য অনলাইন ও অফলাইনে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায় সে ছাত্রলীগ, যুবলীগ তথা আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং সবাইকে বলে বেড়াচ্ছে যে তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায় আসবে। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের আমলে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে পাড়া প্রতিবেশী ও তার বিরোধীদের মারধর, হুমকি ও ভয় দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও রাঙামাটিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্রলীগ এর এই নেতা পূর্বেও ২০২০সালে ৭পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়। পরবর্তীতে জামিন নিয়ে ছাড়া পায় এবং ২০২৩ সালে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
ছাত্রলীগ নেতা জসিমের গ্রেফতারের খবর শুনে এলাকায় অনেক লোককে উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে এবং অনেক নিরীহ পাহাড়ি বাঙালিদের মধ্যে স্বস্তি ও শান্তি ফিরে আসতে দেখা গেছে। স্থানীয়রা বলেন, এই সন্ত্রাসী জসিমের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ, সে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে হেন কোন কাজ নেই যা সে করেনি, স্থানীয় জনগণ প্রশাসনের কাছে জসিমের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
জুরাছড়ি থানার ওসি মোঃ মোঃ আলমঙ্গীর হোসেন শাহের বলেন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী গতকাল রাতে তাকে আটক করে জুরাছড়ি থানায় হস্তন্তর করে। মাদকদ্রব্য আইন তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে রাঙামাটি আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।